মোক্ষদা একাদশী মাহাত্ম্য ২০২২

আসুন জেনে রাখি মোক্ষদা একাদশী উপবাস এবং ত্রিদন্ডী স্বামী ভক্তি কুসুম শ্রমন মহারাজের নির্যান তিথি পূজা।

বললেন যুধিষ্ঠির -হে বিষ্ণো!  আমি বন্দনা করি আপনাকে। আপনি ত্রিলোকের সুখদায়ক, বিশ্বেশ্বর, বিশ্বপালক ও পুরুষোত্তম। আমার একটি সংশয় আছে। অগ্রাহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের যে একাদশী তার নাম কি, বিধিই বা কি ও কোন দেবতা এই একাদশীতে পূজিত হন, তা আমায় বলুন।   শ্রীকৃষ্ণ বললেন-হে মহারাজ! আপনি উত্তম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, যার মাধ্যমে আপনার যশ চতুর্দিকে বিস্তৃত হবে। এখন এই একাদশীর কথা আমি বর্ণনা করছি যা শোনা মাত্রই বাজপেয় যজ্ঞের ফল লাভ হয়।   অগ্রাহয়ণ মাসের শুক্লপক্ষের এই একাদশী ‘মোক্ষদা’ নামে পরিচিত। সর্বপাপনাশিনী ও ব্রত মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা এই একাদশীর দেবতা শ্রীদামোদর। তুলসী, তুলসী মঞ্জুরী, ধূপ, দীপ, ইত্যাদি উপচারে শাস্ত্রবিধি অনুসারে শ্রীদামোদরের পূজা করতে হবে। পূর্ববর্ণিত বিধি অনুসারে দশমী ও একাদশী পালন করতে হবে। এই উপবাস দিনে স্তবস্তুতি, নৃত্য-গীত আদি সহ রাত্রিজাগরণ করা কর্তব্য।   হে মহারাজ! প্রসঙ্গক্রমে একটি অলৌকিক কাহিনী আমি বলছি। মনোযোগ দিয়ে এই ইতিহাস শ্রবণ মাত্রই সর্বপাপ ক্ষয় হয়। যে পিতৃপুরুষেরা নিজ নিজ পাপে অধঃযোনি প্রাপ্ত হয়েছে, এই ব্রত পালনের পুণ্যফল বিন্দু মাত্র তাদেরকে দান করলে তারাও মুক্তিলাভের যোগ্য হন।   কোন এক সময় মনোরম চম্পক নগরে বৈখানস নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন সমস্ত সদগুণে বিভূষিত। প্রজাদের তিনি পুত্রের মতো পালন করতেন। তাঁর রাজ্যে বহু বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ বাস করতেন। রাজ্যের সকলেই ছিল বেশ সমৃদ্ধশালী। একবার রাজা স্বপ্নে দেখলেন যে তার পিতা নরকে পতিত হয়েছেন। তা দেখে তিনি অত্যন্ত হলেন।পরদিন ব্রাহ্মণদের ডেকে বলতে লাগলেন- হে ব্রাহ্মণগণ। গতরাত্রিতে স্বপ্নে নরকযাতনায় পিতাকে কষ্ট পেতে দেখে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে। তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলতে লাগলেন- হে পুত্র, তুমি আমাকে নরকসমুদ্র থেকে উদ্ধার কর। তাঁর সেই অবস্থা দেখে আমার অন্তরে সুখ নেই।      আমার এই বিশাল রাজ্য, স্ত্রী-পুত্র, কিছুতেই আমি শান্তি পাচ্ছি না। কি করি, কোথায় যাই কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমার পুর্বপুরুষেরা মুক্তিলাভ করতে পারেন এমন কোন পুণ্যব্রত, তপস্যা ও যোগের কথা আমাকে উপদেশ করুন। আমি তা অনুষ্ঠান করব।আমার মতো পুত্র বর্তমান থাকা সত্ত্বেও যদি পিতামাতা পূর্বপুরুষেরা যদি নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে থাকেন, তবে সে পুত্রের কি প্রয়োজন?   ব্রাহ্মণগণ বললেন- হে মহারাজ! আপনার রাজ্যের কাছেই মহর্ষি পর্বত মুনির আশ্রম রয়েছে। তিনি ত্রিকালজ্ঞ। তাঁর কাছে আপনার মুক্তির উপায় জানতে পারবেন।   ব্রহ্মণদের উপদেশ শ্রবণ করে মহাত্মা বৈখানস তাঁদের সঙ্গে নিয়ে সেই পর্বত মুনির আশ্রমে গমন করলেন। তাঁরা দূর থেকে ঋষিবরকে সষ্টাঙ্গ প্রণাম করে তার কাছে গেলেন। মুনিবর রাজার কুশলবার্তা জিজ্ঞাসা করলেন।রাজা বললেন- হে প্রভু! আপনার কৃপায় আমার সবই কুশল। তবে আমি একদিন স্বপ্নযোগে পিতার নরকযন্ত্রণা ও কাতর আর্তনাদ্ শুনে অত্যন্ত দুঃখিত ও চিন্তাগ্রস্ত হয়েছি।হে ঋষিবর! কোন পুণ্যের ফলে তিনি সেই দুর্দশা থেকে মুক্তি পাবেন, তার উপায় জানতেই আপনার শরণাগত হয়েছি।রাজার কথা শুনে পর্বত মুনি কিছুক্ষণ ধ্যানস্থ হয়ে বললেন- হে মহারাজ! পূর্বজন্মে তোমার পিতা অত্যন্ত কামাচারী হওয়ায় তার এরকম অধোগতি লাভ হয়েছে।এখন এই পাপ থেকে মুক্তির উপায় বর্ণনা করছি। অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের মোক্ষদা একাদশী পালন করে সেই পুণ্যফল পিতাকে প্রদান কর। সেই পুণ্য প্রভাবে তোমার পিতার মুক্তি লাভ হবে।মুনির কথা শোনার পর রাজা নিজগৃহে ফিরে এলেন। সেই পবিত্র তিথির আবির্ভাবে তিনি স্ত্রী-পুত্রাদিসহ যথাবিধি মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করলেন। ব্রতের পুণ্যফল পিতার উদ্দেশ্যে প্রদান করলেন।ঐ পুণ্যফল দানের সঙ্গে সঙ্গে আকাশ থেকে পুষ্পবৃষ্টি হতে লাগল। হে পুত্র তোমার মঙ্গল হোক।এই বলতে বলতে বৈখানস রাজার পিতা নরক থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গে গমন করলেন।হে মহারাজ যুধিষ্ঠির! যে ব্যক্তি এই মঙ্গলদায়িনী মোক্ষদা একাদশী ব্রত পালন করে, তার সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয় এবং মৃত্যুর পর মুক্তি লাভ করে। এই ব্রতের পুণ্যসংখ্যা আমিও জানি না।      চিন্তামণির মতো এই ব্রতটি আমার অত্যন্ত প্রিয়। এই ব্রত কথা যিনি পাঠ করেন এবং যিনি শ্রবণ করেন,বাজপেয় যজ্ঞের ফল প্রাপ্ত হন উভয়েই।    

******************************জীবের ত্রিতাপ জ্বালা........।পন্ডিত ব্যক্তিগন আধ্যাত্মিক আধিদৈবিক ও আধিভৌতিক ---এই ত্রিবিত্ত তাপের কথা বলেছেন।আধ্যাত্মিক তাপ------শরীর ও মানস ভেদে ইহা দুই প্রকার।শরীরের তাপ --শিরোরোগ ।জ্বর,শূল,ভগন্দর,অর্শ, শ্বাসকষ্ট, সর্দি কাশি প্রভৃতি এবং অক্ষিরোগ কুষ্ট প্রভৃতি ভেদে দুই প্রকার।মানস তাপ--কাম, ক্রোধ,ভয়,দ্বেষ, লোভ,মোহ,বিষাদ শোক,ঈর্ষা,মাৎসর্য প্রভৃতি হতে মানস দুঃখ অনেক প্রকার উৎপন্ন হয়ে থাকে।

মোক্ষদা একাদশী
মোক্ষদা একাদশী

আধিভৌতিক তাপ------মৃগ, পক্ষি, মনুষ্য,পিশাচ,সর্প, রাক্ষস,বিছা প্রভৃতি ভূতগন হতে মনুষ্য গনের যে দুঃখ উৎপন্ন হয় তা আধিভৌতিক তাপ।আধিদৈবিক তাপ------শীত, উষ্ণ,বর্ষাও বিদ্যুৎ প্রভৃতির দ্বারা যে তাপ উৎপন্ন হয় তাহাকে আধিদৈবিক তাপ বলে।শ্রীহরিবাসর তিথিতে ভাগবত ধর্মের অনুশীলনকারীগন যথা বিহিত প্রাত কালীন অনুষ্ঠান শেষে ভক্তগনের সহিত শ্রী ভগবানের নাম রুপ ও গুন লীলাদী অহনির্শ শ্রবন কীর্তনাদি মধ্যে নিমগ্ন থাকা একান্ত প্রয়োজন।ইহাতে পরাশান্তি পরমান্দ লাভ হয়ে থাকে।মানবগন ভগবানের প্রীতির জন্য সর্বসময় নাম কীর্তন এবং ভগবৎ সেবা করে থাকেন। শুধু তাই নয় ভগবানের প্রিয় ভক্তগনজীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভগবানের প্রীতির নিমিত্ত সেবা করেন।সর্বশ তোমার চরণে সপিয়াপড়েছি তোমার ঘরেতুমি তো ঠাকুর তোমার কুকুরবলিয়া জানহ মোরে।ভগবানে শ্রীকৃষ্ণের শরন গ্রহণ করা। প্রতিটি জীবের একান্ত কর্তব্য। ভগবানের নিজজন অর্থাৎ মহাভাগবতগন আত্মেন্দ্রিয় প্রীতি বাঞ্ছা সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত করিয়া কৃষ্ণেন্দ্রিয় প্রীতি বাঞ্ছা জন্য নিজেকে ভগবৎ চরনে আত্মনিবেদন করা।হরে কৃষ্ণ শুভ মোক্ষদা একাদশী উপবাস🙏🙏🙏🙏🙏🙏

মোক্ষদা একাদশী,মোক্ষদা একাদশী মাহাত্ম্য,মোক্ষদা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য,মোক্ষদা একাদশী 2022,মোক্ষদা একাদশী ২০২২,মোক্ষদা একাদশী ব্রত,মোক্ষদা একাদশী 2022,মোক্ষদা একাদশী ২০২২,মোক্ষদা একাদশীর মাহাত্ম্য,মোক্ষদা একাদশী মাহাত্ম্য ২০২২,মোক্ষদা একাদশী ব্রত কথা,মোক্ষদা একাদশী মাহাত্ম্য ২০২২,মোক্ষদা একাদশী ব্রত কথা মাহাত্ম্য,মোক্ষদা,মোক্ষদা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য 2022,একাদশী ব্রত মোক্ষদা একাদশী,মোখদা একাদশী

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>