ভগবান কে প্রসাদ নিবেদন মন্ত্র ও ভগবান কি প্রসাদ খান?


প্রসাদ গ্রহনের মন্ত্র

ঈশ্বর কি সত্যিই প্রসাদ খান? -এর  পিছনের রহস্য কী?আসলেই কি ভগবান  কিছু খান? আর ভগবানকে কেনই বা খেতে দিব?

এগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাবো নিচের প্রবন্ধ থেকে-ভগবান কিছুই খান না প্রকৃতপক্ষে।ভক্তের ভাবটুকুই কেবল গ্রহণ করে থাকেন পরমেশ্বর ভগবান , তাই ভাবগ্রাহী জনার্দন বলা হয় ভগবানকে।ভগবান কেবল তার ভক্তিতেই প্রিত হন যার প্রিতীভাব বেশি । তাকে সন্তুষ্ট করা যায়না খাবার-দাবার দিয়ে , তার জন্যে প্রয়োজন ঐকান্তিক ভক্তি, ভক্তির দ্বারাই কেবল ভগবানকে সন্তুষ্ট করা যায়।কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা ভগবানকে কিছু দেবনা, অবশ্যইতাকে দেয়া দরকার, কেননা এই জগতে আমারা যা কিছু পাচ্ছি তা সবই ভগবানের থেকে পাচ্ছি এবং তা ভগবানের সম্পত্তি।


ভগবানের রাজত্বে বস্তুর প্রাধান্য নেই, আছে ভাবের প্রাধান্য। ভাবের জন্যই ভগবান ভক্ত অর্পিত বস্তু এবং পূজাদি ক্রিয়াকর্ম স্বীকার করেন ভক্তের যদি ভাব হয় ভগবানকে খাওয়াবার তখন ভগবানেরও খিদে পায় এবং তিনি প্রকট হয়ে ভোজন করেন। ভক্তের ভাব বা ভালোবাসাতে ভগবান যে বস্তু গ্রহণ করেন, সে বস্তু আর বিনষ্ট হয় না। তা দিব্য বা চিন্ময় হয়ে যায়। যদি এইরূপ ভাব না - ও হয়, কিছু কম হয়, তাহলেও ভক্ত ভোগ অর্পণ করলেই ভগবান সন্তুষ্ট হন। ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য বস্তু বা ক্রিয়ার প্রাধান্য নেই, শুধু ভাবেরই প্রাধান্য।

প্রসাদ নিবেদন মন্ত্র
প্রসাদ নিবেদন মন্ত্র 

ভগবান কে প্রসাদ নিবেদনের মন্ত্রঃ


 ভোগপাত্রগুলির দিকে নির্দেশ করে প্রত্যেক শ্রীবিগ্রহের উদ্দেশ্যে নিবেদিত ভোগ এবং জল গ্রহণের জন্য প্রার্থনা জানাতে হবে। ঘণ্টা বাজিয়ে শ্রীগুরুদেবের উদ্দেশ্যে তিনবার প্রণাম মন্ত্র উচ্চারণ করে শ্রীবিগ্রহাদি সেবার জন্য তাঁর অনুমতি প্রার্থনা করতে হয়- 

নম ওঁ বিষ্ণুপাদায় কৃষ্ণপ্রেষ্ঠায় ভূতলে। 
শ্রীমতে (গুরুদেবের নাম) ইতি নামিনে।। 

শ্রীল প্রভুপাদের উদ্দেশ্যে নীচের প্রণাম মন্ত্রটি তিনবার জানিয়ে তার কৃপাভিক্ষা করতে হয়।-

নমো ওঁ বিষ্ণুপাদায় কৃষ্ণপ্রেষ্ঠায় ভূতলে। 
শ্রীমতে ভক্তিবেদান্ত স্বামীনিতি নামিনে।।
নমস্তে সারস্বতে দেবে গৌরবাণী প্রচারিণে। 
নির্বিশেষ শূন্যবাদি পাশ্চ্যাত দেশ তারিণে।।

 শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নীচের প্রার্থনাটি তিনবার জানিয়ে তাঁর কৃপা ভিক্ষা করতে হয়। - 

নমো মহাবদান্যায় কৃষ্ণপ্রেমপ্রদায়তে। 
কৃষ্ণায় কৃষ্ণচৈতন্য নাম্নে গৌরত্বিষে নমো।। 

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নীচের প্রার্থনাটি তিনবার উচ্চারণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়। 
 নমো ব্রহ্মণ্যদেবায় গো-ব্রাহ্মণ্য হিতায় চ। 
জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।


শ্রীবিগ্রহকক্ষ ত্যাগ করে বাইরে এসে গায়ত্রীমন্ত্র জপ করতে হয়। শ্রীগুরুদেব প্রদত্ত মন্ত্রগুলি সবই এই সময়ে জপ করা যেতে পারে। (সামান্য ভোগ নিবেদনের ক্ষেত্রে, কেবলমাত্র ব্রহ্ম-গায়ত্রী শ্রীগুরুদেব প্রদত্ত সাতটি মন্ত্রের প্রথমটি অথবা গোপাল-মন্ত্র শ্রীগুরুদেব প্রদত্ত সাতটি মন্ত্রের ষষ্ঠটি জপ করা যেতে পারে।) হরিনাম দীক্ষা প্রাপ্ত ভক্তগণ একমালা হরিনাম জপ করবেন) 
শ্রীভগবানের আহার গ্রহণের সময়ে, নিজের পছন্দমতো বিভিন্ন শ্লোক আবৃত্তি করা চলতে পারে কিংবা (বিশেষত মধ্যাহ্ন ভোগের সময়ে ভোগ আরতি ভজ ভকত বৎসল  শ্রী গৌর হরি  ক্দ গোপাল নাম কীর্তন করতে হয়। তারপরে পূজারী যখন ভোগ নিবেদনের শেষে শঙ্খ বাজিয়ে পর্দা সরিয়ে দেন, তখণ ভক্তগণ ভগবানের উদ্দেশ্যে প্রণাম নিবেদন করে যশোমতি নন্দন নাম কীর্তন এবং পঞ্চতত্ব মহামন্ত্র ও হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তন করেন, এবং শেষে ‘নৃসিংহদেবের স্তব’ নমস্তে নরসিংহায় কীর্তন সমাপ্ত করে জয়ধ্বনি ঘোষণার মাধ্যমে মধ্যাহ্ন ভোগ আরতি অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন)। লনির্দিষ্ট কিছু সময় বাদে ( সাধারণত প্রাতরাশের মধ্যাহ্ন ভোগের ও সান্ধ্য ভোগের ক্ষেত্রে পনের-কুড়ি মিনিট, মঙ্গল-আরতির আগে বাল্য-ভোগের ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে দশ মিনিট), দরজায় টোকা দিয়ে, হাতে তালি বাজিয়ে, কিংবা ঘণ্টা বাজিয়ে তার পরে শ্রীবিগ্রহ-কক্ষে ঢুকতে হয়। 

ভগবান কি প্রসাদ গ্রহণ করেন?

একজন ব্যক্তি ছিলেন তাঁর একজন সাধুর উপরে খুব শ্রদ্ধা ছিল এবং তিনি সাধুর খুব যত্ন করতেন। তিনি বলতেন, 'সাধুর যখনই পিপাসা লাগত আমার মনে হতো যে তাঁর পিপাসা পেয়েছে, তিনি জল পান করতেন যখন  আমি জল নিয়ে যেতাম ।

সেইরূপ যাঁরা পতিব্রতা স্ত্রী, তাঁরাও স্বামীর ক্ষুধা-তৃষ্ণার খবর ঠিক মতো বুঝতে পারেন এবং স্বামী কি খেতে ভালবাসেন তাও তাঁরা বুঝতে পারেন। স্বামীকে খেতে দিলে তিনিও বলে ওঠেন, আজ আমার এইটাই খাবার ইচ্ছা হয়েছিল। এইভাবেই যাঁর মন ভগবানকে ভোগ দেবারর আন্তরিক বাসনা হয়। তাঁর স্বতঃই ভগবানের রুচি এবং ক্ষুধা-তৃষ্ণার বিষয়ে ধারণা হয়ে যায়।

এক মন্দিরে একজন পূজারী ছিলেন। তাঁর ইষ্ট ছিলেন গোপাল। তিনি রোজ ছোট লাড্ডু বানাতেন এবং রাতে যখন গোপালকে শয়ন করাতেন, তখন মাথার কাছে লাড্ডু রেখে দিতেন। কারণ বালকের রাতে ক্ষুধা পেয়ে যায়। একদিন পূজারী লাড্ডু রাখতে ভুলে যান, তখন গোপাল পূজারীকে স্বপ্নে দেখা দেন এবং বলেন তাঁর ক্ষিধে পেয়েছে। তারপর থেকে পূজারী প্রতিদিন লাড্ডু রাখতেন। এমন আরেকটি ঘটনা আছে।

এক সাধু ছিলেন। ইনি প্রতিবছর দেওয়ালীর পর ঠাণ্ডার সময় ভগবানকে কাজু, বামা, পেস্তা, আখরোট ইত্যাদি ভোগ দিতেন ল পরে কাজু বাদাম ইত্যাদির দাম খুব বেড়ে যাওয়ায় তিনি চীনা বাদাম দিয়ে ভোগ দিতে শুরু করলেন। একদিন রাতে ভগবান স্বপ্নে জিজ্ঞাসা করলেন, 'কিরে তুই আমাকে শুধু চীনা বাদামই খাওয়াবি ?

সেইদিনের পর থেকে পুনরায় ভগবানকে কাজু ইত্যাদি দিয়ে ভোগ দিতে আরম্ভ করলেন। প্রথমে তাঁর মনে কিছু দ্বিধা ছিল যে, কি জানি ভগবান ভোগ গ্রহণ করেন কিনা? যখন ভগবান স্বপ্নে এইভাবে বললেন তখন তাঁর দ্বিধা দূর হল । এর তাৎপর্য এই যে কেউ ভগবানকে আদর করে ভোগ দিলে তাঁরও ক্ষুধা পায় এবং তিনি গ্রহণ করেন।
উদাহরণ -এক সাধু ছিলেন তাঁর আহার অত্যন্ত বেশী ছিল। একবার তাঁর দেহ রোগগ্রস্ত হয়। কোন এক ব্যক্তি তাঁকে পরামর্শ দেয় যে, 'মহারাজ, আপনি গরুর দুধ খান এবং বাছুরটি দুধ খাওয়ার পর যেটুকু বাঁচবে মাত্র সেইটুকুই খাবেন। তিনি সেই মত করতে লাগলেন।

 গো-বৎস পেট ভরে মায়ের দুধ খাওয়ার পর তিনি গরুর দুধ দোহাতেন, তাতে মাত্র একপো বা দেড়পো পেতেন, কিন্তু তাতেই তাঁর পেট ভরে যেত। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর অসুখ সেরে গেল এবং তিনি সুস্থ হলেন।এর তাৎপর্য এই যে সাধুটি বিশ্বাস নিয়ে তা করেছিলেন ফলে তাঁর অসুখ সেরে যায়। যদি ন্যায়সঙ্গত বস্তুতে এতো শক্তি থাকতে থাকে যে অল্পমাত্রায় গ্রহণ করলেও তৃপ্তি হয় এবং অসুখ সেরে যায় তাহলে যে বস্তু ভাবপূর্বক ভগবানকে দেওয়া হয় তার সম্বন্ধে কিছু আর বলার অপেক্ষা থাকে না । কারণ এখানে বিশ্বাস আছে যে ভগবান অবশ্যই গ্রহণ করবেন যদি তা ভক্তিভরে অর্পন করা হয়।
সকলেই অনুভব করে থাকেন যে কেউ যদি ভাব দ্বারা বা অনুরাগ সহকারে ভোজন করায় তাহলে সেই আহারে সুস্বাদ পাওয়া যায় এবং সেই আহার দ্বারা বৃত্তিসকলও ভালো থাকে। শুধু মানুষের ওপর নয়, পশুদের ওপরও এর প্রভাব পড়ে। যে গোবৎসের মা-গাভীটি মারা যায়, লোকে তাকে অন্য গাভীর দুধ খাওয়ায়, তাতে সেই বাছুরটি বেঁচে যায়।

যদি মানুষ বা পশুর ওপরে ভাবের প্রভাব পড়ে তাহলে অন্তর্যামী ভগবানের ওপরেও সে ভাবের প্রভাব পড়বে তাতে আর বলার কি আছে? বিদুরের স্ত্রীর এইরূপ ভাব ছিল বলেই ভগবান তাঁর হাত থেকে কলার খোসা পর্যন্ত খেয়েছিলেন। গোপিনীদের এইভাব ছিল বলেই ভগবান তাঁদের হাত থেকে কেড়ে দই, মাখন খেয়েছিলেন।

শ্রীব্রহ্মাকে ভগবান বলেছিলেন -
নৈবেদ্যং পুরতো ন্যস্তং চক্ষুষা গৃহ্যতে ময়া ।
রসং চ দাসজিহ্বায়ামশামি কমলোদ্ভব ৷৷

'হে কমলোদ্ভব! আমার সামনে অর্পিত ভোগসমূহ আমি নেত্র দ্বারা গ্রহণ করি , কিন্তু তার স্বাদ আমি ভক্তদের জিহ্বাদ্বারাই গ্রহণ করি।ভাবদ্বারা অর্পিত ভোগদ্রব্য ভগবান কখনও দৃষ্টি দ্বারা, কখনও স্পর্শ দ্বারা আবার কখনও স্বয়ং কিছুটা গ্রহণও করেন।হামাগুড়ি দেওয়া শিশু কোন বস্তু নিয়ে তার বাবাকে দিলে যেমন তিনি খুব খুশি হন এবং অনেক উঁচুতে হাত দেখিয়ে বলেন, 'বাবু, তুই এতবড় হ, অর্থাৎ, আমার থেকেও বড় হয়ে ওঠ।' কেন, বস্তুটি কি অলভ্য ছিল যে শিশুটি সেটি দেওয়ায় তার বাবা বিশেষ কিছু পেলেন ? না, তা নয়! বাবা প্রসন্ন হলেন কেবল শিশুর দেবার ভাবটি দেখে।

এইরূপ ভগবানেরও কোন জিনিসের অভাব সেই, অথবা তাঁর কোন কিছু প্রাপ্তিরও ইচ্ছা নেই, কেবল ভক্তের দেবার ভাবটির জন্যই তিনি প্রসন্ন হন। কিন্তু যারা লোক দেখানোর জন্য বা লোক ঠকানোর জন্য মন্দির সাজায় ভগবানের বিগ্রহ সাজায়, ভাল ভাল জিনিস দিয়ে ভোগ অর্পন করে, তাদের নৈবেদ্য ভগবান গ্রহণ করেন না। কেননা তা ভগবানের প্রকৃত পূজা নয়, সেটি আসলে ব্যক্তিগত স্বার্থের ও অর্থেরই পূজা।

যাঁরা ভগবানকে ভোগ নিবেদন করেন এবং তাঁর পূজা অর্চনা করেন, এইরকম ব্যক্তিকে যারা পাষণ্ড বলে এবং অহংকারবশতঃ ভাবে, আমি ওদের থেকে ভাল, আমি পাষণ্ড নই 'তাদের কখনো কল্যাণ হয় না। যে সব ব্যক্তি যে ভাবেই হোক কোন উত্তম কর্ম করেন, তাঁদের কাজের সেই অংশ তো ভাল হয়ই, তাঁদের ব্যবহার, চলাফেলার মধ্যেও ভালত্ব প্রকাশ পায়। কিন্তু যারা অহংকারবশতঃ উত্তম ব্যবহার পরিত্যাগ করে, পরিণামে তাদের অকল্যাণই হয়।তাই যারা ভগবানকে ভোগ অর্পন করবেন তাদের ভগবানের প্রতি প্রেম - ভাব · ভক্তিভাব, বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, প্রীতিপূৰ্ব্বক অর্পন করতে হবে। মনে বিশ্বাস রাখতে হবে যে ভগবান আমার অর্পিত ভোগ গ্রহণ করবেন। তবেই ভগবান তা গ্রহণ করেন। ভগবান গীতায় বলেছেন, যিনি আমাকে প্রীতিপূৰ্ব্বক পত্র, পুষ্প, ফল ও জল ভক্তিসহিত অর্পন করেন আমি তার সেই প্রদত্ত বস্তু গ্রহণ করি। তাই সর্বদা ভগবানের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।

এ বিষয়ে আরো কিছু ব্যাখ্যা রয়েছেঃ
ঈসা বাস্যম্ ইদম্ সর্বম্ (ঈশপনিষদ মন্ত্র ০১)
তাই ভগবদ্গীতায় ভগবান স্পষ্ট বলছেন--তারা হচ্ছে চুর, যারা আমারই প্রদত্ত বস্তু আমাকে না দিয়ে নিজেরা ভোগ করে।
"তৈর্দত্তানপ্রদায়ৈভ্যো যো ভুঙক্তে স্তেন এব সঃ৷৷"(শ্রীমদভগবদগীতা৩/১২)

এবং তারা যে শুধু চুরি করছে তাই নয় বরং তারা প্রতি গ্রাসেগ্রাসে পাপ ভক্ষণ করছে।"ভুঞ্জতে তে ত্বঘং পাপা যে পচন্ত্যাত্মকারণাত্৷৷"(শ্রীমদভগবদগীতা৩/১৩।

ভগবান কখনই চান না যে আমরা এভাবে প্রতিনিয়ত পাপ করে নরকে নিক্ষিপ্ত হই। তাই তিনি আমাদের একটি সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছেন, যেন আমরা এই সমস্ত পাপ থেকে সহজেই মুক্ত হতে পারি।আমরা যদি আমাদের প্রতিদিনের আহার্য্য ভগবানকে নিবেদন করে তা প্রসাদ রূপে গ্রহণ করি, তবে আমাদের আর পাপভাগী হতে হবে না।তাই ভগবদগীতায় ভগবান নির্দেশ দিচ্ছেন-হে কৌন্তেয়, তুমি যা অনুষ্ঠান কর, যা আহার কর, যা হোম কর, যা দান কর এবং যে তপস্যা কর, সেই সমস্তই আমাকেই অর্পণ কর।(শ্রীমদভগবদগীতা৯/২৭)এটা তিনি কেন বলছেন.? তাঁর উদরফুর্তির জন্য? না এটা তিনি এজন্যে বলছেন যে আমরা যেন মুর্খতা বশত এই জগতের বিষয় ভোগে লিপ্ত না হই।এটা ভগবানের এক অপ্রকৃত করুণা।তাই যারা ভগবানের অপার কৃপা লাভ করতে চায়, তাদের উচিৎ কোনোকিছু আহারের পূর্বে তা ভগবানকে অর্পণ করা।ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন যে, তিনি সমস্ত যজ্ঞের পরম ভোক্তা, সর্বলোকের মহেশ্বর এবং সমস্ত জীবের সুহৃদ (ভোক্তারং যজ্ঞতপসাং সর্বলোকমহেশ্বরম.... শ্রীমদ্ভগব্দগীতা ৫-২৯)

উদাহরণ :- একজন পিতা তাঁর সন্তান কে ২০/- টাকা দিয়ে বললেন বাছা দোকান থেকে চকলেট কিনে খেও। সন্তান চকলেট কিনে বাড়িতে পিতার হাতে এক টুকরো ভেঙে দিলে পিতা বাৎসল্য প্রেমে গদগদ চিত্তে চকলেটের টুকরো টি সন্তান কে ফিরিয়ে দিয়ে আনন্দ পান। এখানে সন্তান পিতারই দেওয়া টাকায় কেনাচকলেট কিনেছিল এবং পিতা কে দিয়েছিল। তথাপি পিতার এত আনন্দ।ঠিক তেমনি আমরা এই জগতে যে সমস্ত জিনিস উপভোগ করছি সেগুলি সবই ভগবানের দেওয়া। যেমন অক্সিজেন, অগ্নি, জল, আহার সামগ্রী ধান, গম, ডাল, শাকসব্জি, ফল আদি সমস্ত কিছু।তাই ভগবানের দেওয়া বস্তু ভগবান কে নিবেদন করলে তিনি আমাদের প্রতি প্রীত হন।🙏ধন্যবাদ🙏

#tag;ভগবান কে প্রসাদ নিবেদন মন্ত্র,ভগবানের  নিবেদন,নৈবেদ্য নিবেদন মন্ত্র
কিভাবে ভগবানকে  নিবেদন করবেন,সপ্তাহে একদিন নিরামিষ রান্না করে কিভাবে ভগবানকে  দিবেন, নিবেদন করার মন্ত্র, নিবেদন করার নিয়মাবলী, নিবেদন করার নিয়ম ও পদ্ধতি,ভ‌ক্তেরা ভগবান‌কে  অর্পন ক‌রেন কেন, ভগবান কি সত্যি প্রসাদ গ্রহণ করেন,কিভাবে বুঝবেন ভগবান আপনার দেওয়া প্রসাদ খেল কি না,ভগবান কি সত্যি প্রসাদ গ্রহণ করেন ?,ভগবানের প্রসাদ,ভগবান শ্রীকৃষ্ণ  গ্রহণ করেন তার প্রমাণ কি,ভক্তের ভয়ে ভগবান কিভাবে প্রসাদ গ্রহণ করলেন?,ভগবান আমাদের দেওয়া  কি গ্রহণ করেন,ভগবান কি আমাদের  নিবেদন গ্রহণ করেন।,ভগবান প্রসাদ কখন গ্রহন করে,ভগবান  গ্রহণ করেন,ভগবানের প্রসাদ কেন গ্রহণ করা উচিত,ভগবান কি ভক্তের সেবা গ্ৰহন করেন।,প্রসাদ গ্রহণ না করলে কি ক্ষতি হয়,

Next Post Previous Post
1 Comments
  • নামহীন
    নামহীন ২৭ এপ্রিল, ২০২২ এ ৯:১০ AM

    ভালো লাগছে।।

Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>