বরুথিনী একাদশীর মাহাত্ম্য

বৈশাখ কৃষ্ণপক্ষিয়া বরুথিনী একাদশী ব্রত মহাত্ম্য ভবিষ্যোত্তর পুরাণে যুধিষ্ঠির-শ্রীকৃষ্ণ সংবাদে বর্ণনা করা হয়েছে।


যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বললেন- হে বাসুদেব! আপনাকে প্রণাম। বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী কি নামে প্রশিদ্ধ এবং তার মহিমাই বা কি তা কৃপা করে আমাকে বলুন।

শ্রীকৃষ্ণ বললেন- হে রাজন! ইহলোক ও পরলোকে বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশী ‘বরুথিনী’ নামে বিখ্যাত। এই ব্রত পালনে সর্বদা সুখ লাভ হয় এবং পাপক্ষয় ও সৌভাগ্য প্ৰাপ্তি ঘটে।

বরুথিনী একাদশীর মাহাত্ম্য
বরুথিনী একাদশীর মাহাত্ম্য


দুর্ভাগা স্ত্রীলোক এই ব্রত পালনে সর্বসৌভাগ্য লাভ করে থাকে। ভক্তি ও মুক্তি প্রদানকারী এই ব্রত পালনে সর্বসৌভাগ্য লাভ করে থাকে। ভক্তি ও মুক্তি প্রদানকারী এই ব্রত সর্বপাপহরণ এবং গর্ভবাস যন্ত্রণা বিনাশ করে। এই ব্রত প্রভাবে মান্ধাতা, ধুন্ধুমার আদি রাজারা দিব্যধাম লাভ করেছেন।

এমনকি মহাদেব শিবও এই ব্রত পালন করেছিলেন। দশ হাজার বৎসর তপস্যার ফল কেবলমাত্র এক বরুথিনী ব্রত পালনে লাভ হয়। যে শ্রদ্ধাবান ব্যক্তি এই ব্রত পালন করেন তিনি ইহলোক ও পরলোকে সমস্ত প্রকার বাঞ্চিত ফল লাভকরেন।

হে নৃপশ্রেষ্ঠ! গজদান শ্রেষ্ঠ অশ্বদান অপেক্ষা , গজদান থেকে ভূমিদান, তা থেকে তিলদান, তিলদান থেকে স্বর্ণদান এবং তা অপেক্ষাও অন্নদান শ্রেষ্ঠ হয়।শ্রেষ্ঠ দান আর নেই অন্নদানের মতো । পিতৃলোক, দেবলোক ও মানুষেরা অন্নদানেই পরিতৃপ্ত হন।

পন্ডিতেরা কন্যাদানকে অন্নদানের সমান বলে থাকেন। স্বয়ং ভগবান গোদানকে অন্নদানের সমান বলেছেন। আবার এই সমস্ত প্রকার দান থেকেও বিদ্যাদান শ্রেষ্ঠ। কিন্তু এই বরুথিনী ব্রত পালনে সেই বিদ্যাদানের সমান ফল লাভ হয়ে থাকে।


পাপমতি যে সব মানুষ কন্যার উপার্জিত অর্থে জীবনধারণ করে, পুণ্যক্ষয়ে তাদের নরকযাতনা ভোগ করতে হয়। তাই কখনও কন্যার উপার্জিত অর্থ গ্রহণ করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার সহ কন্যাদান করেন তাঁর পুণ্যের হিসাব স্বয়ং চিত্রগুপ্তও করতে অসমর্থ হন। কিন্তু ‘বরুথিনী' ব্রত পালনকারী কন্যাদান থেকেও বেশি ফল লাভ করে।


ব্রতকারী ব্যক্তি কাঁসার পাত্রে ভোজন দশমীর দিনে , মাংস, মসুর, ছোলা, শাক, মধু, অন্যের প্রদত্ত অন্নগ্রহণ, দুইবার আহার ও মৈথুন পরিত্যাগ করতে হবে। দ্যুতক্রীড়া, নেশাজাতীয় দ্রব্য, হিংসা, মৈতুন,দিবানিদ্রা, পরনিন্দা-পরচর্চা, প্রতারণা, চুরি,  ক্রোধ ও মিথ্যাবাক্য একাদশীর দিনে বর্জনীয়। কাঁসার পাত্রে ভোজন, মাংস, মসুর, মধু, তেল, মিথ্যাভাষণ, ব্যায়াম, দুইবার আহার ও মৈথুন এসব দ্বাদশীর দিনে পরিত্যাজ্য।

হে রাজন!  সকল প্রকার পাপের বিনাশ এবং অক্ষয়গতি লাভ হয় এই বিধি অনুসারে বরুথিনী ব্রত পালনে। যিনি হরিবাসরে রাত্রিজাগরণ করে ভগবান জনার্দনের পূজা করেন,  পরমগতি লাভ করেন তিনি সর্বপাপ মুক্ত হয়ে।


তাই সূর্যপুত্র যমরাজের যাতনা থেকে পরিত্রাণের জন্য পরম যত্নে এই একাদশী ব্রত পালন করা কর্তব্য। বরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা শ্রদ্ধাভরে পাঠ বা শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয় এবং সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়।।

tag;বরুথিনী একাদশী মাহাত্ম্য,বরুথিনী একাদশী,একাদশী মাহাত্ম্য,বরুথিনী একাদশী মাহাত্ম্য 2021,বরুথিনী একাদশী ২০২১,বরুথিনী একাদশী ব্রত কথা,বরুথিনী একাদশী মাহাত্ম্য কথা,বরুথিনী একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য,বরুথিনী একাদশী ব্রত,বরুথিনী একাদশী পালনের ফল,বরুথিনী একাদশী 2021,ইসকন বরুথিনী একাদশী,বরুথিনী একাদশী ২০২০,বরুথিনী একাদশী ব্রত কথা মাহাত্ম্য,বরুথিনী একাদশী কবে,বরুথিনী,বরুথিনী একাদশীর মাহাত্ম্যে

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>