জাত-পাত ও বর্ণপ্রথা কি

জাতিভেদ কি সনাতনধর্ম সমর্থন করে..
পবিত্র বেদ ও গীতায় কি বলা হয়েছে জাত-পাত ও বর্ণপ্রথা সম্পর্কে,,, হিন্দুধর্ম সম্পর্কে জানি!!!
উপমহাদেশে আর্যীকরণের পর সামাজিক শ্রেণিসমূহকে বিন্যস্ত করেছিল। তাত্ত্বিকভাবে এ বিন্যাসে শ্রেষ্ঠত্বের ক্রম নির্ধারিত হতো সংশ্লিলষ্ট বিভিন্ন বর্ণের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিবর্গ তাঁদের চরিত্রে ও কর্মে যে সব গুণাগুণের প্রকাশ ঘটাতেন তার ওপর ভিত্তি করে। উদাহরণস্বরূপ, ব্রাহ্মণরা ছিলেন ‘সত্ত্বা’র রক্ষক, এবং সে হিসেবে তাদের পবিত্রতম বলে গণ্য করা হতো। অন্য কথায়, ব্রাহ্মণদের পবিত্রতার প্রতিমূর্তি বলে বিশ্বাস করা হতো, এবং তাদের পৃথিবীর দেবতা হিসেবে গণ্য করা হতো। লক্ষ্যণীয় যে, পবিত্রতার এ মাত্রা ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের গুণাগুণের প্রতীক, যথাক্রমে ‘রজ’ ও ‘তম’-এর ক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী বলে বিবেচিত হতো। আর সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের সবচেয়ে নিচু স্তরে থাকা শুদ্রদের এ রকম কোনো গুণই ছিল না বলে মনে করা হতো। চারভাগে বিভক্ত এ শ্রেণিবিন্যাসের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক যৌক্তিকতার ভিত্তি ছিল ঋগ্বেদের পুরুষ সুক্ত মন্ত্র, যার ব্যাখ্যা পরবর্তীকালে সংযোজিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়।


আসুন জানি...
সবার মাঝে এক ধোঁয়াশাময় প্রশ্ন থেকেই যায় বর্তমান সমাজে সনাতনধর্মে জাতিভেদ নিয়ে। শুরুতেই বলে রাখি সনাতনধর্মে জাতিভেদের কোন ভিত্তি নেই। এটি সমাজের সৃষ্টি। যা আত্মঘাতী রুপ ধারণ করেছে আজকের সনাতন সমাজে ।
আসুন নিজেই বিচার করুন সনাতনধর্মে জাতিভেদের আদৌ কোন ভিত্তি আছে কি না।

জাত-পাত ও বর্ণপ্রথা কি
জাত-পাত ও বর্ণপ্রথা কি


ধর্মে জাতিভেদের কোন ভিত্তি নেই যদি ৃউপরের উত্তরে বলি । তখন সবার মনে প্রশ্ন জাগে তাহলে ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়....এসব কি..বেদ-এ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র কাকে বলা হচ্ছে আপনি নিজেই দেখুন...

ব্রাক্ষণ কে...
যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে সৎ, নিষ্ঠাবান, সুশৃঙ্খল, বেদ প্রচারকারী, অনুরক্ত, অহিংস, বেদ জ্ঞানী সে ব্রাক্ষণ !
ঋগ্বেদ-৭.১০৩.৮

ক্ষত্রিয় কে..
সৎ কর্ম দ্বারা শুদ্ধধ, রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন, অহিংস,দৃঢ়ভাবে আচার পালনকারী,  ঈশ্বর সাধক, সত্যের ধারক ন্যায়পরায়ণ ,বিদ্বেষমুক্ত ধর্মযোদ্ধা, অসৎ এর বিনাশকারী সে ক্ষত্রিয় !"
ঋগ্বেদ-১০.৬৬.৮

বৈশ্য কে..
দক্ষ ব্যবসায়ী, দানশীল চাকুরীরত এবং চাকুরী প্রদানকারী !"
অথর্ববেদ-৩.১৫.১

শূদ্র কে..
লোভমুক্ত কষ্টসহিষ্ণু সেই শূদ্র যে অদম্য,পরিশ্রমী, অক্লান্ত জরা যাকে সহজে গ্রাস করতে পারেনা।
ঋগ্বেদ-১০.৯৪.১১

আবার  এরপর প্রশ্ন করে থাকে অনেকের যে,  শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বলেছেন উনি সৃষ্টি করেছেন চারটি বর্ণ,  এর অর্থ কি বুঝাচ্ছেন?

পবিত্র বেদ, গীতার কোথাও বলা নেই বর্ণ জন্মগত l বরং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় স্পষ্ট বলেছেন যে তিনি গুণ ও কর্ম অনুযায়ী চারটি বর্ণ সৃষ্টি করেছেন। জন্মের এখানে উল্লেখ পর্যন্ত নেই

চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ ।
তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্ ।।
পবিত্র গীতা-(অধ্যায়-৪, শ্লোক-১৩)

অর্থ:-  কর্ম ও প্রকৃতির তিনটি গুণ  অনুসারে আমি চারটি বর্ণবিভাগ সৃষ্টি করেছি মানব-সমাজে  । আমি এর স্রষ্টা হলেও আমাকে অকর্তা এবং অব্যয় বলে জানবে।

পবিত্র বেদ-এ ঈশ্বর ঘোষণা করেছেন সাম্যের বাণী...
মানবের মধ্যে কেহ বড় নয় কেহ ছোট নয় এবং কেহ মধ্যম নয়। তাহারা সকলেই উন্নতি লাভ করিতেছে। উৎসাহের সঙ্গে বিশেষভাবে ক্রমোন্নতির প্রযত্ন করিতেছে। জন্ম হইতেই তাহারা কুলীন। তাহারা জন্মভূমির সন্তান দিব্য মনুষ্য।তাহারা আমার নিকট সত্য পথে আগমন করুক।"
ঋগ্বেদ- ৫.৫৯.৬

সনাতনধর্মে মানুষ পরিচয়ই সবচেয়ে বড়। জাত-পাতের কোনো স্থান নাই। সনাতনধর্মই জাত-পাতের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার।

জাত-পাত বলে কিছু নেই, এগুলো কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের সৃষ্টি। যোগ্যতা ও গুণ অনুসারেই মানুষের পরিচয় হওয়া উচিত। এসব কিছু বিবেচনা করেই মানুষকে সবক্ষেত্রে সম্মানের আসন দেওয়া উচিত।
আর এই কথাই বলে সনাতনধর্ম🙏🙏🙏

#tag;বর্ণ প্রথা কি,বর্ণাশ্রম কি,বর্ণপ্রথা,৪টি বর্ণপ্রথা কী,জাতিপ্রথা কি,বর্ণপ্রথা কাকে বলে,জাতিপ্রথা না বর্ণপ্রথা,কিভাবে বর্ণপ্রথা হলো,গীতায় বর্ণপ্রথা,জাত-পাত,বর্ণাশ্রম ও জাতীভেদ প্রথা,হিন্দুদের বর্ণপ্রথা,বর্ণপ্রথার করুন ইতিহাস,জাত-পাত এর আসল সত্য কি?,মনুসংহিতা অনুসারে বর্ণপ্রথা,বর্ণপ্রথা একটি সামাজিক অভিশাপ,বর্ণাশ্রম ও জাতিভেদ,বর্ণাশ্রম কি এবং কেন ?,চার বর্ণ ও চতুরাশ্রম


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url