গরু-ছাগলের সকল রোগের বর্ণনা ও চিকিৎসা
গরু খামার, ছাগল খামার, ভেড়া খামার, মহিষ খামার সহ যেকোন গবাদি পশু পালন এর সাথে সম্পকৃত সকল ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে আজকের এই পোষ্ট।
আপনি যদি পশু চিকিৎসক,অভিঙ্গ খামারি হন বা নতুন খামারি বা খামার করার আগ্রহ করছেন এমন ব্যক্তি হয়ে থাকেন তবে এই আলোচনাটি অবশ্যই আপনার জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই পোষ্টটি আপনাকে আপনার খামারের পশু বিভিন্ন রোগের বিস্তারের কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার সমূহ জানতে পারেন। যদি আমি আপনি অভিঙ্গ খামারি হন তবুও আপনাকে এটি অনেক নতুন নতুন তথ্য দিবে। যাবে আপনার খামারকে বিভিন্ন রোগ ও ক্ষতি থেকে বাচিয়ে দিতে পারে।
তাই আজকের এই আলোচনাটি শেষ অবধি মনোযোগ সহকারে পড়বেন, যদিও ১৫-২০মিনিট সময় ব্যায়ও হয়, এই ১৫-২০ মিনিট আপনার অনেক উপকারে আসবে এবং আপনাকে একজন দক্ষ খামারি হিসেবে গড়ে তুলবে ইংশাআল্লাহ।
![]() |
গরু-ছাগলের সকল রোগের বর্ণনা ও চিকিৎসা |
গরু-ছাগলের সকল রোগের বর্ণনা/ চিকিৎসা
এ রোগ ভাইরাস জনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। গ্রামে কোথাও কোথাও এ রোগকে ক্ষুরাচল, চপচপিয়া, বাতা বা বাতনা রোগ বলা হয়ে থাকে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি দ্বিক্ষুর বিশিষ্ট প্রাণি এ রোগে আক্রান্ত হয়।
রোগ বিস্তার :
(১) রোগাক্রান্ত প্রাণি থেকে বাতাসের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি রোগ ছড়িয়ে পড়ে।
(২) ক্ষুরা রোগ জীবাণু দুষিত খাদ্য ও পানির মাধ্যমেও ছড়ায়।
রোগের লক্ষণ :
(১) শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
(২) মুখে, জিহ্বায় ও ক্ষুরায় ফোস্কা পড়ে। পরে ফোস্কা ফেটে ঘা হয়।
(৫) এ রোগে বাছুরের মৃত্যুর হার বেশি।
রোগের প্রতিকার :
(১) অসুস্থ প্রাণিকে সুস্থ প্রাণী থেকে আলাদা রাখা।
(২) রোগ হওয়ার আগেই সুস্থ সকল প্রাণিদের ক্ষুরা
রোগের টিকা দেয়া।
(৩) প্রতিদিন গোয়াল ঘর জীবাণুনাশক যেমন ডেটল বা ফিনাইল দ্বারা ভালভাবে ধুয়ে দেওয়া।
(৪) প্রাণিকে নরম খাদ্য সরবরাহ করা
(৫) প্রাণির ক্ষতস্থানের চিকিৎসা।
গরুর ক্ষুরা রোগের চিকিৎসা বা এলোপ্যাথি চিকিৎসাঃ
■ ১. ওষুধ প্রয়োগের সময় খাবার সোডা এক লিটার জলে ৪০ গ্রাম মিশিয়ে গরুর পায়ের ক্ষত স্থানে লাগিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
■ ২. পা পরিষ্কার করার পর দ্রুত ঘা বা ক্ষত শুকাতে Sulfanilamide পাওডার গরুর পা বা ক্ষুরের মাঝের ক্ষত স্থানে ভালো করে লাগিয়ে দিতে হবে। Sulfanilamide powder এর পরিবর্তে Tetracycline powder অথবা উভয় ওষুধ এক সাথে নিয়মিত ৫-৭ দিন ব্যবহার করতে হবে।
■ ৩. গরু বা বাছুরের জ্বর কমাতে Paracitamol গ্রুপের ট্যাবলেট বা লিকুইড বা সিরাপ শরীরের তাপ কমা না পর্যন্ত খাওয়াতে হবে।
■ ৪. মাছির উপদ্রব হতে গরুর ঘা বা ক্ষত রক্ষা করতে হবে যাতে মাছি ডিম না পাড়ে, এ জন্য Sulfanilamide পাউডার ব্যবহারের সময় এতে কর্পূর মিশাতে হবে এবং এই মিশ্রণ ভ্যাসলিন অথবা নারিকেল তেল যোগে ক্ষত স্থানে নিয়মিত প্রয়োগ করতে হবে।
■ ৫. ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে থাকা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়া রোধে এন্টি বায়োটিক ইঞ্জেকশন যেমন- StreptoPen ইঞ্জেকশন অথবা Penicillin ইঞ্জেকশন অথবা Oxytetracycline ইঞ্জেকশন প্যাকেটের গায়ে থাকা নির্দেশ মত ৩-৫ দিন প্রয়োগ করতে হবে।
ক্ষুরা রোগ হলে নিম্নোক্ত ঘরোয়া চিকিৎসা অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে প্রয়োগ করতে হবে
■ ১. গরুর পা ও ক্ষুর, বাট এবং গাল হালকা গরম জল বা পানিতে সামান্য পটাশ (পটাশিয়াম পার ম্যাগনেট) মিশিয়ে দিনে ৩-৪ বার ধুইয়ে দিতে হবে।
■ ২. দিনে ২ বার ১০ গ্রাম বা দুই চা চামচ ফিটকিরি এক লিটার পানিতে মিশিয়ে সেই পানি বা জল দিয়ে মুখ বা গাল বা জিহ্বা ভালো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
■ ৩. সোহাগা কড়াইতে দিয়ে জ্বাল দিলে তা খই এর মত ফুটে উঠলে তা কড়াই থেকে নামিয়ে বেটে মিহি গুড়া করে গরুর গাল, পা ও ওলান বা বাটের ক্ষত স্থানে লাগাতে হবে।
রোগ বিস্তার :
(১) সাধারণত: বর্ষাকালের প্রথম দিকে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।
(৪) তড়কায় আক্রান্ত মৃত প্রাণি কুকুর ও শৃগাল খেয়ে একস্থ্যান থেকে অন্যস্থানে এই রোগ ছড়ায়।
(৫) মৃত পশুর চামড়া থেকেও এই রোগ ছড়ায়।
রোগের লক্ষণ :
(১) এর রোগ অতি তীব্র প্রকৃতির হলে প্রাণী দ্রুত নিঃশ্বাস নেয় ও কৃষক/খামারী কিছু বুঝার আগেই অসুস্থ প্রাণির দেহ মাটিতে ঢলে পড়ে এবং খিচুনি দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়।
(৪) এক পর্যায়ে অল্প সময়ে প্রাণিটি মাটিতে পড়ে যাবে এবং দ্রুত চিকিৎসা না করলে মারা যাবে।
তড়কা রোগে মৃত প্রাণির লক্ষণ :
(৪) তড়কায় আক্রান্ত মৃত প্রাণি কুকুর ও শৃগাল খেয়ে একস্থ্যান থেকে অন্যস্থানে এই রোগ ছড়ায়।
(৫) মৃত পশুর চামড়া থেকেও এই রোগ ছড়ায়।
রোগের লক্ষণ :
(১) এর রোগ অতি তীব্র প্রকৃতির হলে প্রাণী দ্রুত নিঃশ্বাস নেয় ও কৃষক/খামারী কিছু বুঝার আগেই অসুস্থ প্রাণির দেহ মাটিতে ঢলে পড়ে এবং খিচুনি দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়।
(৪) এক পর্যায়ে অল্প সময়ে প্রাণিটি মাটিতে পড়ে যাবে এবং দ্রুত চিকিৎসা না করলে মারা যাবে।
রোগের প্রতিকার :
(১) এ রোগের জীবাণু সহজে মরে না, তাই জীবাণুনাশক ব্যবহার করে মৃত প্রাণিকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে হবে।
(২) কোন অবস্থ্যাতেই মৃত প্রাণি পানিতে ফেলা যাবে না এবং মুচিকে দেওয়া যাবে না।
(৩) আক্রান্ত প্রাণিকে আলাদা রাখতে হবে ও সুস্থ প্রাণিকে তড়কা রোগের প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে। • তড়কা রোগে আক্রান্ত এলাকায় এ রোগ ছাগল/ ভেড়াতেও হতে পারে, তবে ছাগল/ভেড়ায় এ রোগের টিকা প্রদান করলে মারাত্মক সমস্যাও হতে পারে। কেননা এ টিকা প্রদান স্থানে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হয়, তখন ছাগল/ভেড়া লাফালাফি শুরু করে দেয় এবং কখনও মারও যেতে পারে। তাই অতি প্রয়োজন হলে খুব সাবধানতা অবলম্বন করে ছাগল/ভেড়াকে এ রোগের টিকা প্রদান করতে হবে।
৩. বাদলা রোগ (ব্লাচক) (Black Quarter/B.Q.)
এ রোগ ব্যাকটেরিয়া জনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। বাংলাদেশে এ রোগ বৃষ্টি বাদলের মৌসুমে বেশী হয় বলে এ রোগকে বাংলায় বাদলা রোগ বলা হয়। সাধারণত ৬ মাস থেকে ২ বৎসর বয়সের যে সমস্ত প্রণির স্বাস্থ্য ভাল, তাদের এ রোগ বেশী হতে দেখা যায়। এ রোগে মৃত্যুর হার বেশী হয়।
রোগ বিস্তার :
(১) সাধারণত: বর্ষাকালের প্রথম দিকে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।
(৪) বাদলা রোগের জীবাণু দ্বারা দুষিত পুকুর, নালা ও ডোবার পানি পান করলেও এই রোগ হতে পারে।
রোগের লক্ষণ :
(১) অতি তীব্র প্রকৃতির হলে প্রাণীর আকস্মিক মৃত্যু হতে পারে।
(৪) এই রোগে সাধারণত প্রাণির উড়ু, ঘাড়, কাঁধ ও কোমরের মাংশ আক্রান্ত হয়ে ফুলে উঠে।
(৫) আক্রান্ত ফুলা স্ক্যান কালচে দেখাবে এবং ফুলাস্থ্যান গরম ও বেদনাদায়ক হবে।
(৬) আক্রান্ত মাংস পেশীতে চাপ দিলে পচ্ পচ্ শব্দ হবে যা দ্বারা সহজেই বাদলা রোগ বুঝা যাবে।
(৭) প্রাণি হাঁটতে পারে না ও খুঁড়িয়ে হাঁটবে।
(৮) চিকিৎসায় বিলম্ব হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে পশু মারা যাবে।
রোগের প্রতিকার :
(১) আক্রান্ত প্রাণিকে আলাদা রাখতে হবে।
(৫) পঁচা ঘাস এবং পানির নিচের ঘাস খাওয়ানো যাবে
না।
(৬) বর্ষার ২ মাস পূর্বে ৬ মাস থেকে ২ বছরের সু সকল প্রাণিকে বাদলা রোগের প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে।
আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। মৃত পশুকে মাটির নিচে কলিচুন সহযোগে পুঁতে ফেলতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে গোয়ালঘর পরিস্কার করতে হবে।
৪. গলাফুলা রোগ (Hemorrhagic septicemia/HS)
এ রোগ ব্যাকটেরিয়া জনিত একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। বাংলাদেশে প্রায় সকল ঋতুতে এই রোগ হয়। তবে বর্ষাকলে যখন গো/মহিষকে দিয়ে বেশি কাজ করানো হয় তখন এ রোগ বেশি হয়। বর্ষার শুরু এবং শেষে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। এ রোগ ডুবো অ লে বেশি হয় এবং মৃত্যুর হারও অনেক বেশী।
রোগ বিস্তার :
(১) সুস্থ প্রাণি আক্রান্ত প্রাণির মলমূত্র দিয়ে দূষিত খাদ্য ও পানি খেয়ে এ রোগে আক্রান্ত হয়।
(২) প্রাণির দেহে এই রোগের জীবাণু স্বাভাবিক অবস্থ্যাতেও বিদ্যমান থাকতে পারে। কোন কারণে যদি ঐ প্রাণিটি পীড়নের সম্মুখীন হয় যেমন, ঠান্ডা, অধিক গরম, ভ্রমনজনিত দুর্বলতা থাকে, তখন প্রাণির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে প্রাণিটি এই রোগের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়।
(৩) দীর্ঘদিন পুষ্টিহীনতায় ভুগলে এ রোগে আক্রান্ত
হতে পারে।।
(৪) বর্ষার শুরুতে বৃষ্টিতে ভিজলে এবং ঠান্ডা লাগলে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।।
(৫) প্রাণিকে কষ্টের সাথে একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্যানান্তরিত করলে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
(৬) গরম এবং স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশেও এই রোগ হতে পারে।
রোগের লক্ষণ :
(১) অতি তীব্র প্রকৃতির হলে, হঠাৎ করে প্রাণির জ্বর আসে, তাপমাত্রা বেড়ে যায় (জ্বর ১০৫-১০৭ ঋ)। ক্ষুধামন্দা হয়, নাক, মুখ দিয়ে লালা ঝরে ও ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রাণী মার যায়।
(২) তীব্র প্রকৃতির হলে উপরের লক্ষণ ছাড়াও প্রথমে গলার নিচে, পরে চোয়াল, বুক, পেট ও কানের অংশ ফুলে যায়। এ অবস্থ্যাতে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং প্রণি গলা বাড়িয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়।
(৩) গলা ও গলকম্বল ফুলে যাবে, ফুলা জায়গায় টিপ দিলে ব্যাথা পাবে এবং বসে যাবে। গরম ও শক্ত হবে।
(৪) শ্বাস নেয়ার সময় ঘাড় ঘাড় আওয়াজ হবে।
(৫) কখনও কখনও পাতলা পায়খানা হতে পারে।
রোগের প্রতিকার :
(১)আক্রান্ত প্রাণিকে আলাদা রাখতে হবে।
(২) মৃত প্রাণিকে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হবে।
(১) আক্রান্ত প্রাণিকে আলাদা রাখতে হবে।
(২) মৃত প্রাণিকে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হবে।
(৩) স্যাঁতস্যাঁতে এলাকা চারণভূমি বা বাসস্থানের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।
(৪) সব সুস্থ প্রাণিকে সুস্থ অবস্থ্যায় নিয়মিত প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে।
চিকিৎসা ও প্রতিকার: আক্রান্ত পশুর চিকিৎসায় বিলম্ব হলে সুফল পাওয়া যাবে না। তাই রোগের উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ রোগের চিকিৎসায় Ampicillin, Tetracycline, Erythromycin, Sulphonamide জাতীয় ইনজেকশন গভীর মাংসে দিয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ রোগ উচ্ছেদ করা অসম্ভব কারণ এ রোগের জীবাণু স্বাভাবিক অবস্থায় পশুর দেহে থাকে। তবে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
রোগাক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করে সুস্থ পশুকে টিকা দানের ব্যবস্থা করতে হবে। মড়কের সময় পশুর চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। হঠাৎ আবহাওয়া পরিবর্তনের ক্ষেত্রে পশুর পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
৫. গাভীর ওলান ফুলা রোগ বা ওলান প্রদাহ (Mastitis )
বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস ও মাইকোপ্লাজমা দ্বারা এই রোগ হয়। গাভীর জন্য এ রোগ একটি মারাত্মক রোগ। সময়মত চিকিৎসা করা না হলে গাভীর ওলান নষ্ট হয়ে যাতে পারে।
রোগ বিস্তার :
(৩) বাচ্চা প্রসবের পর ওলানে ময়লা লাগলে এবং তা
সময়মত পরিস্কার করা না হলে।
(৪) ঘাসের চটা ওলানে প্রবেশ করালে।
(৫) গোয়ালার অপরিষ্কার হাত ও বড় নখ দ্বারা গাভীর ওলানে ক্ষত হলে।
(৬) বাছুর ওলানে জোরে গুতো মারলে।
রোগের লক্ষণ :
(১) অতি তীব্র রোগের ক্ষেত্রে দুধের পরিবর্তন লক্ষণীয়, দুধ পাতলা ও কিছু জমাট বাঁধা হবে।
(৩) ওলান ফুলে যাবে, গরম থাকবে এবং শক্ত হয়ে যাবে।
(৪) প্রাণির ওলানে ব্যাথা অনুভব করে, ফলে ওলানের মধ্যে হাত দিতে দেবে না।
(৫) দীর্ঘস্থ্যায়ী প্রকৃতির হলে দুধের পরিমাণ কমে যাবে ও ক্রমান্বয়ে দুধ ছানার মত ছাকা ছাকা হবে। • ক্ষুধামন্দা, অবসাদভাব, জ্বর ইত্যাদি হবে।
(৬) গাভী হাঁটতে চাইবে না, ধীরে ধীরে হাঁটবে।
রোগের প্রতিকার :
(১) আক্রান্ত গাভীকে আলাদা করে চিকিৎসা করতে
হবে।
(২) গাভীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখতে হবে।
(৩) ওলানে ঘাসের চটা প্রবেশ করান চলবে না।
(৪) ময়লা যেন ওলানে না লাগে সেদিকে প্রসবোত্তর খেয়াল রাখতে হবে।
(৫) গাভীকে খালি পেটে দুধ দোহন করাতে হবে, কেননা ঘাস পানি খেয়ে ভরা পেটে দুধ দোহন করা হলে ওলান ফুলা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(৬) দুধ দোহনের পর জীবানু নাশক ঔষধ পানির সহিত মিশিয়ে দুধের বাট পরিস্কার করলে ওলান ফুলা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
১। মাত্রানুযায়ী উন্নত মানের এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিতে হবে (৪-৫ দিন)। ২। উন্নত মানের প্রদাহনাশক বা স্টেরয়েড জাতীয় ইনজেকশন দিতে হবে। ৩। উন্নত মানের টিট ইনফিউশন আক্রান্ত বাঁটে প্রয়োগ করতে হবে। (২৪ ঘন্টা পরপর ৩-৪ দিন)। ৪। উন্নত মানের জীবাণুনাশক মাত্রা মত পানিতে মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার ওলান ধুয়ে দিতে হবে।
৬. নাভীতে ঘাঁ রোগ (Neval ill)
এ রোগ ব্যাকটেরিয়া জনিত কারণে ঘটে। সময়মত চিকিৎসা করা না হলে বাছুরের সাস্থ্যহানী হবে যা পরবর্তীতে বাছুরের সাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যঘাত ঘটবে।
রোগ বিস্তার :
(১) বাচ্চা প্রসবের পর বাচ্চার নাভী জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে না ধুলে, কাঁচা নাভীতে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলে। · প্রণির ময়লাযুক্ত জায়গায় বাচ্চা শুলে।
(২) নাভী শুকাতে কয়েকদিন সময় লাগে, এ সময়ের মধ্যে নাভীতে মাছি বসলে।
(৩) অনেক সময় গাভী বাচ্চার নাভী চেটে ক্ষত করে ফেলে এবং সেখান থেকে এই রোগের সৃষ্টি হয়।
রোগের লক্ষণ :
(১) নাভীর চারদিকে লাল হয়ে যাবে।
(২) নাভীর চারদিকে ফুলে যাবে।
(৩) নাভীতে ব্যথা হবে এবং পুঁজ হবে।
(৪) অনেক সময় নাভীতে পোকা পড়ে।
(৫) বাছুর গাভীর দুধ খেতে চাবে না।
(৬) গায়ে জ্বর থাকবে।
রোগের প্রতিকার :
(১) বাচ্চা প্রসবের পর নাভী জীবাণুনাশক ঔষধ দিয়ে ধৌত করে দিতে হবে।
(২) গাভী যাতে নাভী না চাটতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
জন্মের পর নাড়ী নতুন ব্লেড বা ছুড়ি দিয়ে কেটে ক্ষত স্থানে জীবাণুনাশক লাগাতে হবে। গাভীকে বাছুরের নাভি চাটা থেকে বিরত রাখতে হবে।
নাভি পেকে গেলে Scalpel দ্বারা কেটে পুঁজ বের করে দিতে হবে। ক্ষত স্থান দিন দুেই বার জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
নাভির ভিতর পোকা হলে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। চিমটা দিয়ে পোকা বেরকরতে হবে। নাপথলিন গুড়া করে ক্ষত স্থানে পরপর ২-৩ গজ ডুকাতে হবে।
বাছুরকে ব্যাথা নাশক ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
শক্তিশালী এন্টিবায়টিক প্রয়োগ করতে হবে।
প্রাথমিক অবস্থার নাভি পাকা রোগের জন্য টেট্রাসাইক্লিন ইনজেকশন যেমন Renamycin, Tetracycline এর যে কোনো একটি ইনজেকশন মাঝারি ওজনের বাছুরের জন্য ৩-৪ মিলি. করে মাংসে দিনে একবার করে ৫-৭ দিন দিতে হবে। এছাড়াও পেনিসিলিন গ্রুপের ওষুধ যেমন: Pronapen, Strepto P ইত্যাদি যেকোনো একটি মাঝারি বাছুরকে ১ ভায়াল করে মাংসপেশীতে দিনে একবার করে ৫-৭ দিন দিলে নাভি ফোলা রোগ ভালো হয়।
বাছুরকে সবসময় যত্নে রাখতে হবে।
বাছুরের নাভি ফোলা রোগ খুব মারাত্বক হরেও সঠিক যত্ন ও চিকিৎসায় এই রোগ ভালো হয়।
৭. পেটের গোলকৃমি রোগ
এসকারিয়া নামক এক প্রকার গোলকৃমি দ্বারা এ রোগের কারণ ঘটে। এ রোগের চিকিৎসা না করা হলে প্রাণির, বিশেষ করে বাছুরের স্বাস্থ্যহানীসহ মৃত্যুও ঘটেতে পারে।
রোগ বিস্তার :
(১) আক্রান্ত প্রাণির মল দিয়ে কৃমির ডিম বের হয়ে ঘাসকে দূষিত করে। সেই ঘাস খেলে এই রোগ হয়। আক্রান্ত গাভীর দুধ খেয়ে বাছুরের এই রোগ হয়।
(২) গাভীর জরায়ুতে ভ্রূণের ভিতরেও এই রোগ সংক্রামিত হতে পারে।
রোগের লক্ষণ :
(১) আক্রান্ত প্রাণির ডায়রিয়া দেখা দেবে।
(২) অনেক সময় পায়খানা শক্ত হয়ে যাবে।
(৩) ক্ষুধামন্দা দেখা দেবে।
(৬) লোমের চাকচিক্য নষ্ট হয়ে যায়।
(৭) মহিষের বাচ্চার ক্ষেত্রে চোখের পর্দা লাল হয়।
(৮) বাড়ন্ত প্রাণির বৃদ্ধি কমে যায়। বয়স্ক প্রাণির উৎপাদন কমে যায় ও রক্ত শূণ্যতা দেখা যায়।
রোগ প্রতিরোধ :
(১) গবাদিপশুর গোবর যেখানে-সেখানে না ফেলে এক জায়গায় ফেলতে হবে।
(২) গোয়াল ঘর, আশপাশের জায়গা ও চারণভূমি পরিস্কার রাখা।
(৩) গোয়াল ঘরে নিয়মিত চুন ব্যবহার করা ও জলাবদ্ধ জমিতে প্রাণিকে চরাণো যাবে না।
রোগ বিস্তার :
(১) কলিজা কৃমির লার্ভা শামুকের স্যাতস্যাতে বা নিচু জলাভূমির ঘাসের পাতায় লেগে থাকে। এই ঘাস খেলে পশু কলিজা কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়।
রোগের লক্ষণ :
(১) বদহজম এবং মাঝে মাঝে ডায়রিয়া দেখা দেবে।
(২) থুতনীর নিচে পানি জমে ফুলে যাবে, এ অবস্থ্যা হলে একে “বটল জ” বলে।
(৪) প্রাণিটি দিনে দিনে শুকিয়ে যাবে।
(১) ডোবা, নালা ও বিলের ঘাস খাওয়ানো যাবে না। খাওয়াতে হলে রৌদ্রে একটু শুকিয়ে খাওয়াতে হবে। গবাদিপশুর গোবর এক জায়গায় জমা করে রাখতে হবে।
(২) মাঠের শামুক ধ্বংস করতে হবে।
৯. উকুন; আঁটুলি; মেঞ্জ
লক্ষণ :
(১) অল্প আক্রমণে তেমন লক্ষণ বোঝা যায় না। তবে মাঝারি প্রকৃতিতে দীর্ঘমেয়াদী চর্ম প্রদাহ হয়। চুলকানি, ক্ষুধামন্দা, দুর্বলতা, ওজন হ্রান্স ও বাছুরের লোম পড়ে যায়।
প্রতিকার :
(১) প্রাণির দেহ ব্রাশ করা, গোসল করানো, উকুন হাত দিয়ে মেরে ফেলা
(২) গোয়াল ঘরে ধোঁয়া দেয়া।
(৩) প্রতিদিন গো/মহিষকে ভালভাবে গোসল করালে শরীর সুস্থ থাকে এবং দেহের পরজীবি, যেমন- উকুন, আঁঠালি, মাছি, মাইটস, ফ্লি আক্রমণ থেকে মুক্ত থাকে।
গরুর কৃমিনাশক ঔষধ
গরু তথা সকল গবাদি পশু-পাখির কৃমিনাশক মুলত চারটি ফরমেটে পাওয়া যায়। ট্যাবলেট বা বোলাস, পাওডার, ওরাল সলুশন বা সিরাপ ও ইনজেকশন। গরু বা ছাগলের জন্য ট্যাবলেট বা বোলাস ও ইনজেকশন পদ্ধতি জনপ্রিয়।
কৃমিনাশকঔষধট্যাবলেট/বোলাসএলবেনডাজল, ট্রাইক্লাবেনডাজল + লিভামিসলইনজেকশননাইট্রক্সিনিল, আইভারমেকটিন, লিভামিসলওরাল সলুসন/সিরাপআইভারমেকটিন ১% সলুসনপাওডারপাইপারজিন(গরুর কৃমিনাশক সমূহ)
গবাদিপশুকে নিয়মিত কৃমি মুক্ত ঔষুধ দিতে হবে। যেদিন ঔষুধ দিবেন তারপরের দিন সকালে লিভার টনিক আর বিকালে ক্যালসিয়াম খাওয়ালো ভালো হয়। উন্নত মানের লিভার টনিক ৫-৭ দিন দিতে হবে। তারপর ক্যালসিয়াম, জিংক, ভিটামিন এ,ডি, থ্রী বা ডিবি পাওডার খাওয়াতে হবে।
গরুর কলিজা কৃমির ইনজেকশন
গরুর কলিজা কৃমির জন্য সবচেয়ে কার্যকারি হলো নাইট্রক্সিনিল গ্রুপের ইনজেকশন। যেমন- নাইট্রোনেক্স ইনজেকশন (রেনাটা), নাইট্রক্সিনিল ইনজেকশন (এসিআই)। গ্রাম্য পশু ডাক্তারেরা আইভারমেকটিন ইনজেকশন কলিজা কৃমির জন্য ব্যবহার করে। এটা আমার কাছে সঠিক মনে হয় না। কেননা আইভারমেকটিন সকল অন্ত:ও বহি: পরজীবীর বিরুদ্ধে কাজ করে। শুধু কলিজা কৃমির জন্য স্পেসিফিক ড্রাগ এটি না।
গরু বা ছাগলের বহী: পরজীবীর জন্য আইভারমেকটিন একটি ভালো ঔষধ। এটি পরজীবীর প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। আর প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হলে পরজীবী বংশ বিস্তার করতে পারে না ফলে পরজীবী একটি নির্দিষ্ট সময় পর এমনিতেই মারা যায়।
পরজীবী যাতে দ্বিতীয় বার বংশ বিস্তার না করতে পারে তার জন্য ১৪ দিনের মধ্য আরেক ডোজ আইভারমেকটিন ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়।
গরুর কৃমির ট্যাবলেট
বাজারে প্রায় সকল ফার্মাসিক্যাল কম্পানিরই কৃমিনাশক ট্যাবলেট পাওয়া যায়। বাজারে দুইটি গ্রুপের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। যথাঃ এলবেনডাজন এবং ট্রাইক্লাবেনডাজল + লিভামেসল।
ইনডেক্স বোলাস (এলানকো)
এলটি-ভেট বোলাস (একমি)
রেনাডেক্স ভেট বোলাস (রেনাটা)
এন্টিওয়ার্ম ভেট বোলাস (এসিআই)
ইত্যাদি নামে বাজারে পাওয়া যায়।
১০. রক্ত আমাশয় (Coccidiosis) রোগ
(১) প্রাণির শোবার জায়গা ময়লা থাকলে এই রোগ
হয়।
(২) গোবর মিশ্রিত খাদ্য খাওয়ালে এই রোগ হয়।
(৩) গাভী দোহন করবার সময় ওলান পরিষ্কার না করলে ময়লাযুক্ত ওলানের দুধ খেয়ে বাছুরে এই রোগ
হয়।
(৪) আক্রান্ত প্রাণির মলদ্বারা দূষিত খাদ্য ও পানি অন্য প্রাণি খেলে এই রোগ হয়।
রোগের লক্ষণ :
(১) আক্রান্ত প্রাণি রক্ত মিশ্রিত পায়খানা করে এবং অনেক সময় শুধু রক্ত পায়খানা করে।
(৩) লেজের গোড়ায় রক্ত মিশ্রিত গোবর লেগে থাকে।
(১) পরস্কার পরিচ্ছন্নতাই হচ্ছে এ রোগের প্রধান প্রতিকার
(২) সময়মত চিকিৎসার ব্যাবস্থ্যা করা।
১১. পেট ফাঁপা রোগ (Tympanitis)
এ রোগ প্রাণির একটি সাধারনণ রোগ। সময়মত চিকিৎসা করা হলে প্রাণিটি সহজেই সু’ হয়ে যায়।
রোগ বিস্তার :
(৩) যে সমস্ত প্রাণি খেসারীর ভূষি, মাসকালাইয়ের ভূষির সাথে প্রচুর পরিমাণ পানি খায় তাদের পেট অতিরিক্ত ভর্তির ফলে এই রোগ হয়।
(৪) যে জমিতে ইউরিয়া সার সদ্য ব্যবহার করা হয়েছে, সেই জমির ঘাস খেলে এই রোগ হয়।
(৫) গলায় কোন জিনিস/খাদ্য আটকিয়ে গেলে,
অসাধারণ খাদ্য বেশি পরিমাণে খেলে এ রোগ হয়।
রোগের লক্ষণ :
(১) পেটের ভিতরে গ্যাস যায়। হওয়ার ফলে পেটফুলে
(২) পেট ফুলে যাওয়ার সাথে সাথে প্রাণির অস্থিরতা ও চঞ্চলতা বৃদ্ধি পায়।
মারতে থাকে।
(৫) প্রাণি খুব ঘন ঘন শ্বাস নেয়।
(৬) জিহব্বা বের হয়ে যায় এবং মুখ দিয়ে লালা
পড়তে থাকে।
(৭) নিঃশ্বাসের গতি খুব বেশি হয় এবং হৃদস্পন্দন খুব বেড়ে যায়।
(৮) পেটের বাম পার্শ্বে থাপ্পড় দিলে ধপ ধপ শব্দ করে।
(৯) প্রাণির খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
(১০) প্রাণির পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়।
(১১) ঐ ক্ষেত্রে পশুর জ্বর থাকে না।
রোগ প্রতিকার :
(১) প্রাণির খাদ্য সরবরাহের বিষয়ে যতœবান হতে
হবে।
এই অবস্থায় এন্টি ব্লোট প্রিপারেসন খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যায়।
ঔষধ খাওয়ানোর পর পশুটিকে নরাচরা করতে উৎসাহিত করতে হবে যাতে করে, এন্টিব্লোট প্রিপারেসন টি ভালভাবে রুমেনের গ্যাসের সাথে মিশে যেতে পারে।
মাঝারি ধরণের আক্রান্ত হলেঃ-
যত দ্রুত পারা যায় একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি ডাক্তাদের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
গরু যদি বেশপরিমাণে গ্যাসের কারণে কাহিল হয়ে যায় তাহলে স্টোমাক টিউব এর মাধ্যমে রুমেন থেকে গ্যাস বের করে দিতে হবে।
গরুর পেট ফাঁপা শুরু হলে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস বের করে দিতে হবে।
যদিও চিকিৎসা পদ্ধতি বা কি পরিমাণ , কিভাবে ঔষধ ব্যবহার করতে হয় তা ঔষধের গায়ে লিখা থাকে তারপরও চিকিৎসক এর পরামর্শ নেওয়া ভাল।।
মারাত্মক অবস্থায় , সয়াবিন তেল ২৫০-৫০০ মিলি লিটার বা প্যারাফিন তেল ১০০-১৫০ মিলি লিটার খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
অনেকে সময় ট্রকার ও কেনুলা করায় যথেষ্ট হয় না। সে জন্য পরিষ্কার ও জীবাণু মুক্ত ধারালো ছুরি দিয়ে ১০ থেকে ২০ সেঃমি এর মত কাটতে হবে এবং ফ্রদি উপাদান গুলি হাত দিয়ে বের করে ফেলতে হবে।
অতি মারাত্মক অবস্থায়, একজন ভেটেরিনারিয়ানের জন্য অপেক্ষায় না থেকে নিজেকে চেষ্টা করতে হবে।
১২. বদহজম রোগ
এ রোগ প্রাণির একটি সাধারণ রোগ। সময়মত চিকিৎসা করা হলে প্রাণিটি সহজেই সুস্থ হয়ে যায়।
রোগ বিস্তার :
(১) হঠাৎ প্রাণির খাদ্য পরিবর্তন করলে এই রোগ হয়। যেমন-এক পালের গরু অন্য পালে নিয়ে গেলে, বাজার হতে গরু কিনে আনলে এইরূপ হয়ে থাকে।
(২) নষ্ট হয়ে যাওয়া খাদ্য খাওয়ালে এই রোগ হয়।
(৩) গাভীর গর্ভফুল অনেক সময় গাভী খেয়ে ফেললে এই রোগ হতে পারে।
(৪) প্রাণিকে পরিমাণ মত পানি না খাওয়ালে এই রোগ
হয়।
(৫) অনেকদিন যাবৎ শুধু খড় খাওয়ালে বা অন্য কোন খাদ্য না দিলে এই রোগ হয়।
রোগের লক্ষণ :
(১) পশুর ক্ষুধা হঠাৎ কমে যায়।
(২) দুগ্ধবতী গাভীর দুধ কমে যায়।
(৩) প্রাণির মল কঠিন ও পরিমাণ অল্প হয়।
(৪) কোন কোন প্রাণির মাজল শুকনা থাকে।
রোগ প্রতিকারঃ
(১) প্রাণির খাদ্য সরবরাহের বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
ঔষধের নামপরিমাণ ও চিকিৎসা পদ্ধতিমন্তব্যBloat-Drench oral bloat control২১ মিলিলিটার করে প্রতিটি পশুকে দিনে ২ বার খাওয়াতে হবে।এলকোহল ইথাক্সলেট, চিটাগুড় ও পানির সাথে যোগকরে খাওয়ালে ভাল।Tympanyl TMগরু-৩৫০ মিলিলিটার ভেড়া -১৭০ মিলিলিটার করে খাওয়তে হবে।এতে আছে ইমালসিফায়ার সারফেকটেন্ট এবং তেল বীজের নির্যাস।Bloat-ridপ্রতি প্রাণীর জন্য ৬০-১১৩ মিলি পরিমাণ মুখে সেবন,পাকস্থলী ধৌত এবং পাসচারে স্প্রে করার জন্য ব্যবহার করা হয়।এতে আছে প্রাণিজ, উদ্ভিদজাত ও ভোজ্য তেলNutrimol ® Bloat Master TM
১৩. ডাইরিয়া (Diarrhoea)
(১) পঁচা ও বিনষ্ট হয়ে যাওয়া খাদ্য প্রাণিকে খাওয়ালে ডায়রিয়া হয়।
(২) ঘাসের সাথে বালি মিশ্রিত থাকলে সেই ঘাস প্রাণি খেলে এই রোগ হয়।
(৩) গাভীর বাচ্চা প্রসবের পর প্রথমে যে শাল দুধ বাহির হয় সেই দুধ বাছুরকে না খাওয়ালে সহজেই ডায়রিয়া হয়। · অধিক পরিমাণ খাদ্য খাওয়ালে এই রোগ হয়।
(৫) প্রসবের পর প্রাণির শরীর পরিষ্কার না করলে এই রোগ হয়।
রোগের লক্ষণ :
(১) পাতলা পায়খানা হয় এবং পায়খানার সাথে ও আম থাকে।
(২) পায়খানা দুর্গন্ধযুক্ত হয়।
(৩) কখনও কখনও হজম না হওয়া খাদ্যব দ পায়খানার সাথে বের হয়ে আসে।
(৪) পায়খানার রং কালো বা হলুদ হতে পারে।
(৫) ঘন ঘন পায়খানা হতে পারে।
(৮) প্রাণির পেটের ভিতরে কল কল শব্দ শোনা যায়।
(৯) ক্ষুদামন্দা দেখা দেয়।
(১০) প্রাণি নিস্তেজ হয়ে যায়।
রোগ প্রতিকার :
(৩) প্রাণির খাবারের ও পানির পাত্র প্রতিদিন পরিষ্কার
করতে হবে।
(৪) প্রাণিকে পুকুর, ডোবা, নালার পানি খাওয়ানো যাবে না। সর্বদা নির্দিষ্ট পরিষ্কার পাত্রে বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে।
(৫) গোয়াল ঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং সকল সময় শুকনা রাখতে হবে।
বাছুর ও গর্ভবতী গাভীর ক্ষেত্রে
■ ১. সালফা-৩ (বোলাস বা ট্যাবলেট) ৩৫ কেজি ওজনের - গরুর জন্য ১ টি করে এক ডোজ খাওয়ানোর ৯-১০ ঘন্টা পর আরেক ডোজ অর্থাৎ দিনে ২ ডোজ, ২য় ডোজ খাওয়ানোর ৯-১০ ঘন্টা পর অর্থাৎ পরের দিন থেকে ১ম বা ২য় ডোজের অর্ধেক পরিমাণে ৩য় ডোজ খাওয়াতে হবে, এভাবে পায়খানা কমা না পর্যন্ত দিনে ২ বার করে খাওয়াতে হবে, পায়খানা না কমলে প্রয়োজনে পরের ডোজ গুলোর মাত্রা ১ম ডোজের সমপরিমাণ করতে হবে।
■ ২. মেট্রানিডাজল ভেট (বোলাস বা ট্যাবলেট) - ২০০ কেজি ওজনের জন্য ৬ টি করে দিনে ১ ডোজ করে পায়খানা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
■ ৩. জিংক সিরাপ ১৫-২০ মিলি করে দিনে ২ বার, পায়খানা
শক্ত না হওয়া পর্যন্ত।
■ 8. Biogut পাওডার ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
■ ৫. ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ইঞ্জেকশন ৫-১০ মিলি করে ৩ দিন প্রয়োগ করতে হবে।
• 6. Glucolyte vet বা Electrolyte বা গবাদিপশুর স্যালাইন - দিনে ২-৩ টা করে খাওয়াতে হবে পায়খানা না কমা পর্যন্ত। ■ ৭. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact
■ ১. সালফা ৩ ভেট - সকাল ও বিকাল ৩৫ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১ টি করে দিনে ২ বার করে ২ দিন, এবং ৩য় দিন থেকে অর্ধ মাত্রায় দুই বার করে পায়খানা কমা না পর্যন্ত খাওয়াতে হবে, পায়খানা ঘন হয়ে না আসলে পরের ডোজ গুলো ১ম ডোজের পরিমাণে বাড়াতে হবে।
■ ২. জিংক সিরাপ ১৫-২০ মিলি করে দিনে ২ বার, পায়খানা - শক্ত না হওয়া পর্যন্ত।
■ ৩. রুচিবর্ধক পাউডার যেমন, এস.আর রুচি বা রুচিমিক্স পাওডার - ১ প্যাকেট করে দিনে ২ বার রোগ সারা না পর্যন্ত।
■ 8. Biogut পাওডার ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ -
গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
■ ৫. Glucolyte vet বা Electrolyte বা গবাদিপশুর স্যালাইন -
দিনে ২-৩ টা করে খাওয়াতে হবে পায়খানা না কমা পর্যন্ত।
■ ৬. মেট্রানিডাজল ভেট (বোলাস বা ট্যাবলেট) - ২০০ কেজি ওজনের জন্য ৬ টি করে প্রতিদিন এক ডোজ পায়খানা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
■ ৭. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact
vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
গরুর ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানার লক্ষণ ও চিকিৎসাঃ
হঠাৎ করে গরুর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ওষুধ প্রয়োগের পরেও পায়খানা নিন্ত্রনে আসে না। ১৫-২০ দিনের বেশি বা দীর্ঘদিন ধরে পায়খানা তরল থাকে। খাবারে অরুচি দেখা দেয়। এমন অবস্থাকে ডায়রিয়া বলে। এ ধরণের পাতলা পায়খানা হলে দ্রুত চিকিৎসা না করালে গরু দিনদিন শুকিয়ে যায় এবং কংকালসার হয়ে মারাও যেতে পারে।
গরুর ডায়রিয়া জনিত পাতলা পায়খানার চিকিৎসা
■ ১. প্রতিদিন ১ থেকে বার এক প্যাকেট করে এস.আর.ডাইভেট এর সাথে ১ গ্রাম করে পটাসিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট (পটাশ) মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
■ ২. প্রতিদিন ২ বার, এক প্যাকেট করে রুচি বর্ধক পাউডার যেমন রুচিমিক্স পাউডার খাওয়াতে হবে।
■ ৩. প্রতিদিন ১০০ মি.লি. করে দিনে ১ বার তরল
জিংক লিকুইড খাওয়াতে হবে।
জিংক বা
■ ৪. ইলেক্ট্রোলাইট ১ প্যাকেট ২০ লিটার জল বা পানির সাথে মিশিয়ে পানির পাত্রে রেখে দিতে হবে যাতে পানিশূন্যতা রোধ হয়।
■ ৫. Biogut পাওডার ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০ গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
■ ৬. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
গরুর পানির পাত্র ও ড্রেনের পানিতে জন্মানো ব্যালানটিডিয়াম কলাই (Balantidium Coli) খাবারের সাথে অতিরিক্ত মাত্রায় অথবা দীর্ঘদিন ধরে গরুর পেটে প্রবেশ করলে পাতলা পায়খানা শুরু হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরণের পাতলা পায়খানা স্থায়ী হয়ে থাকে। এ ধরণের পাতলা পায়খানা হলুদ রং বিশিষ্ট ও দূর্গন্ধ হয়।
চিকিৎসা
গরুর প্যারা টি.বি বা জোনস ডিজিজ হলে চিকিৎসায় ভালো হয় না। অপরদিকে ব্যালানটিডিয়াম কলাই দ্বারা পাতলা পায়খানা হলে ওষুধে কাজ করে না। এমতো অবস্থায় শুধুমাত্র কপার সালফেট (তুতে) খাওয়ালে কাজ হতে পারে। দিনে ১ বার করে ৪-৮ গ্রাম তুতে জলের সাথে মিশিয়ে একদিন পর একদিন খাওয়াতে হবে। ৩ ডোজ খাওয়ালে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
গরুর বিপাকীয় পাতলা পায়খানাঃ
বদহজম বা বিপাকীয় কারণে দীর্ঘদিন ধরে গরুর এ ধরনের পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। এ ধরনের পাতলা পায়খানা সেরে যাওয়ার পর পুনরয় আবার শুরু হয়। এক সপ্তাহ ভালো থাকলে পরের সপ্তাহে আবার শুরু হয়। পাতলা পায়খানা বারবার সারে আর বারবার শুরু হয়। এভাবে একের পর এক চলতে থাকায় চিকিৎসা খরচ বেশি হয়ে পড়ে। খামার মালিক লাভবান হওয়ার বদলে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। সাধারণত খাদ্য সঠিক ভাবে হজম না হওয়ায় গরুর এ ধরনের বিপাকীয় পাতলা পায়খানা দেখা দেয়।
চিকিৎসা পদ্ধতি
■ ১. রুচি বর্ধক পাউডার যেমন রুচিমিক্স ১ প্যাকেট করে দিনে ১ বার পায়খানা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাওয়াতে হবে।
■ ২. লিভারটনিক সিরাপ বা লিকুইড যেমন Livaton দিনে ১ বার করে লেবেলে থাকা পরিমাণ অনুযায়ী ১০-১৫ দিন
খাওয়াতে হবে।
■ ৩. জিংক সিরাপ বা লিকুইড যেমন ZS vet প্রতিদিন ১ বার ১০০ মি.লি করে খাওয়াতে হবে।
■ 8. Biogut পাওডার ১০০ কেজি ওজনের গরুর জন্য ১০
গ্রাম করে সকাল বিকাল ২ বার করে ৫-৭ দিন খাওয়াতে হবে।
■ ৫. Glucolyte vet বা Electrolyte বা গবাদিপশুর স্যালাইন - দিনে ২-৩ টা করে খাওয়াতে হবে পায়খানা না কমা পর্যন্ত।
■ ৬. পায়খানা সারার পর নিয়মিত প্রতিদিন ১ টি করে Biolact vet ট্যাবলেট ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।
১৪. গৰ্ভফুল আটকে যাওয়া
এ রোগ প্রাণির একটি সাধারনণ রোগ। সময়মত চিকিৎসা করা হলে প্রাণিটি সহজেই সু’ হয়ে যায়।
রোগ বিস্তার :
(১) অপরিণত বাচ্চা প্রসব (সময়ের পূর্বেই বাচ্চাভহওয়া)
(২) সংক্রামক রোগ, যেমন ব্রুসেলোসিস।
(৩) দৈহিক দুর্বলতা, ক্যালসিয়ামের অভাব।
রোগের লক্ষণ :
(১) গর্ভফুল যোনী মুখে ঝুলে থাকে।
(২) গর্ভফুল ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাহির হয় না।
(৩) খাদ্য গ্রহণে অনীহা।
(৪) জ্বর হতে পারে।
প্রতিকার :
(১) ২৪ ঘন্টার মধ্যে গর্ভফুল না পড়লে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করা। কোন অবস্থ্যাতেই ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড় গর্ভফুল হাত দিয়ে টেনে বের করা যাবে না। কারণ এর ফলে গাভী বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে।
প্রতিরোধ
© গর্ভাবস্থায় গাভীকে দৈনিক ১০-২০ কেজি কাচা ঘাস ও প্রয়োজনীয় মাত্রায় সুষম দানাদার খাবার এবং দৈনিক ০.১ পিপিএম সেলিনিয়াম+ ভিটামিন এডি৩ই খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি দৈনিক কমপক্ষে ১ ঘন্টা ব্যায়াম (হাটা চলা) ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিয়মানুযায়ী কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়াতে হবে।
© প্রসবের পর বাচ্চাকে সরাসরি বাট থেকে শাল দুধ চুষে খাওয়াতে হবে। তাহলে গাভীর রক্তে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং গর্ভফুল পড়তে সহজ হয়।
© বাচ্চা প্রসবের আধা ঘন্টার মধ্যে ১০-১৫ লিঃ কুসুম কুসুম গরম পানির সাথে আধা কেজি পুরাতন আখের গুড় মিশিয়ে খাওয়াতে হবে এবং অক্সিটোসিন জাতীয় ঔষধ যেমন inj: Oxcin 5ml. মাংশে দিলে দ্রুত গর্ভফুল পরে যায়।
রোগের কারণ :
(১) রক্তে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে এই রোগ হয়।
(২) মাথা ও পা কাঁপতে থাকে এবং পশু একস্থ্যানেই দাঁড়িয়ে থাকতে চায়।
(৩) চলতে গেলে টলতে থাকে, বিশেষ করে পিছনের পায়ে জোর কমে যায়।
(৪) প্রাণি নিস্তেজ হয়ে দেহের একপাশে মাথা গুজে শুয়ে থাকে।
(৫) মাজল শুকনা থাকে।
(৬) শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়।
(৭) হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় এবং শ্বাস প্রশ্বাসের গতি
কমে যায়।
প্রতিকার :
চিকিৎসা: ক্যালসিয়াম ইনজেকশন রোগের তীব্রতা ও পশুর ওজন অনুযায়ী শিরায় প্রযোগ করতে হবে। তবে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গাভীর পরিচর্যা করলে দ্রুত সুফল পাওয়া যাবে।
এই পর্বে প্রাণির বিভিন্ন রোগ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো। উক্ত রোগসমূহের চিকিৎসার জন্য স্থস্থানীয় ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে ভাইরাস জনিত রোগের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই।
উক্ত রোগে আক্রান্ত প্রাণি যাতে ব্যাকটেরিয়াজনিত জীবাণু দ্বারা দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হয়ে রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি না পায় সেজন্য ভাইরাস জনিত রোগেরও চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। তবে যে কোন রোগ হওয়ার অগেই প্রতিষেধক ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা উত্তম। তাই যে সকল সংক্রামক রোগ এর কারণে প্রাণির মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে সে সকল রোগের প্রতিকার হিসাবে প্রয়োজনীয় টিকা প্রদানের ব্যবস্থ্যা করতে হবে।
প্রাণিকে টিকা প্রদানের সময় একটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। তা হচ্ছে সঠিক সময়ে ↑ সঠিকভাবে টিকা প্রদান করা। তা না হলে উক্ত টিকা থেকে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। অসুস্থ প্রাণিকে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত টিকা প্রদান করা ঠিক হবে না।
তাছাড়া টিকা প্রদান এর পূর্বে প্রাণিকে কৃমি মুক্ত করতে হবে। তা করা হলে প্রদানকৃত টিকা থেকে উত্তম ফল পাওয়া যাবে। পানির প্রতি মহিষের বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে, তাই নদী মহিষ পরিস্কার পানি ও জলাশয়ের মহিষ ডোবা-নালার কর্দমাক্ত পানি গায়ে মেখে দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। যেখানে নদী-ডোবা নেই সেখানে ছায়াযুক্ত স্যানে মহিষ রেখে পাইপের সাহায্যে দিনে অন্তত দু'বার পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে।
তো আজকের মত এখানেই বিরতি, দেখা হবে পরবর্তী আলোচনায়।