দুঃখ বেদনার বিভিন্ন স্তর সমূহ

আমাদের বুঝতে হবে দুঃখ বা বেদনা বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। তাদের কাছের কেউ কোথাও মারা গেছে তারা তা অনুভব করবেন কারন কারণ দেহের ভিতরে নির্দিষ্ট একটা প্রক্রিয়া চলে কারণ আপনি যাদের বাবা মা বলেন তারাই এ দেহের ভিত্তি ।এই দুজনের মধ্যে একটা খুব গভীর স্মৃতি সংযোগ রয়েছে। মৃত্যুর সহজ অর্থ হলো আপনার কাছে যিনি ছিলেন তিনি এখন আর নেই । এমন নয় যে একটা জীবন হঠাৎ হারিয়ে গেছে আপনি কাঁদছেন বিষয়টা খালি এই, যাকে আপনি আপনার জীবনের অংশ ভেবেছিলেন সে অনুপস্থিত তাই এটা আপনার জীবনে একটা শূন্যতা সৃষ্টি করে।তারা আপনার কতটা কাছাকাছি ছিল তার ওপর নির্ভর পরে এটা আপনার জীবনে ততটা বড় শূন্যতা সৃষ্টি করে। তো আপনি যার সাথে লড়ছেন তা কোন ব্যক্তির মৃত্যু নয় তারা আপনার জীবনে যে শূন্যতা রেখে গেছে আপনি তার সাথে লড়াই করছেন। ধরা যাক কোনো দূরের আত্মীয় বা বন্ধু আপনার পরিচিত কেউ মারা গেলে ন আপনি ঘন্টাখানিক খারাপ লাগবে আর তারপর আমি স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু আপনার খুব কাছের ও প্রিয় কেউ মারা গেলে তারা এক বিশাল শূন্যতা থেকে যায়। আপনার সমস্যাটা হলো আপনি শূন্যতা পূরণ করার চেষ্টা করছেন যেটা আপনার ভিতরে তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতাটা মূলত ঘটেছে এখন আমি যেটা বলবো সেটা সেই পরিস্থিতিতে থাকা মানুষদের কাছে কিছুটা নির্মম শোনাতে পারে। তবে এটা বোঝা দরকার আপনি যদি সান্তনা চান হ্যাঁ যিনি সদ্য প্রিয় কাউকে হারিয়েছেন তারা আমার কাছে আসলে আমিও তাকে জড়িয়ে ধরবো , সান্তনা দিব ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি সান্তনা চান নাকি সমাধান চান আপনার জীবনে ।কারণ আজি এ ব্যক্তি মারা যাবে কাল সে ব্যক্তি মারা যাবে পরশু আমি নিজেই মারা যেতে পারি।এটা কোন ব্যাপার না। মানুষ মরতেই থাকে। 
দুঃখ বেদনার ছবি 
কারণ আমরা মরণশীল লোকজন । আসুন এটা বুঝি, আমরা সবাই মরণশীল প্রকৃতির লোকজন প্রথম জিনিস যা আমাদের মনে স্থির করতে হবে আমাদের প্রকৃতিই মরণশীল। তো সেইহেতু শোক বলতে আমাদের বুঝতে হবে এটার বিভিন্ন স্তর রয়েছে। একটা মনস্তাত্ত্বিক শোক রয়েছে।চিন্তাভাবনা ও আবেগে আপনি আপনি সেই ব্যক্তি কে হারানোর শোক অনুভব করেন।কিন্তু সেই মানুষটার জন্য আপনি আপনার দেহে কতটা স্মৃতি করেছেন তার উপর নির্ভর করে ধরুন যদি এটা আপনার সন্তান বা স্বামী, স্ত্রী বা কোন ধরনের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধন হয় তবে নির্দিষ্ট কিছু স্মৃতি আপনার শরীরে রয়েছে। আমরা একে সাধারণত যোগীর যোগ পরম্পরায় বলি রুনানুবন্ধন যার অর্থ দেহটা একটা বন্ধন গড়ে তুলেছে। যা মনস্তাত্ত্বিক বন্ধুতের উর্দ্ধে আর সঙ্গ আর প্রেম আর যা আপনার কাছে আছে। নিজেই এটা করেছে অনেকেই এটা অনুভব করে থাকেন।তাদের কাছের কেউ কোথাও মারা গেলে অথচ তারা কোনো খবর পাননি হঠাৎই তারা অনুভব করেন তাদের শক্তি যেন কমে যাচ্ছে। তারা জানেন না কী হয়েছে কিন্তু অসুস্থ /অসুস্তি বোধ করছেন। তেমনটা অনুভব করেন তাদের সম্পূর্ণ শক্তি যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে। তারপর কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকদিন পর তারা জানতে পারেন তাদের নিকট আত্মীয় বা সজন মারা গেছে। কিন্তু তথ্যটি আসার অনেক আগে থেকেই তারা এটি অনুভব করছেন কারণ দেহের ভিতর একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় রয়েছে যা স্মৃতি পূর্ব অবস্থায় ফিরতে শুরু করে । আর আপনাকে কেউ ফেলে দিয়েছ এরকম মনে হয়। আপনার বাবা মায়ের সাথে আপনার বাচ্চাদের সাথে অন্যান্যর সাথে বন্ধন সবচেয়ে শক্তিশালী। আপনার একুশ বছর বয়স না হওয়া অব্দি অর্থাৎ একবার আপনি 21 বছর পেরোলেই বলা হয় প্রথমপাত। যোগীর দিক দিয়ে দেখলে চুরাশি হলো জীবনের চক্র । প্রথম পাত হলো ২১ বছর অর্থাৎ 21 বছর অব্দি আপনি বাবা মাকে হারালে বা কোন সন্তানকে হারালে 21 বয়সের কম বয়সী তবে সেই বেদনাটা শুধু আবেগের হবে না এটা শারীরিকও হবে। এটা আবার দেহ ওপ্রকাশ পাবে কারন একটা শক্তিশালী রুনাণুবন্ধন রয়েছে বলে। তবে একুশ পেরোলে এটা মূলত মানুষিক আবেগগত। আমরা যখন বলি রুনাণুবন্ধন আপনি যে যন্ত্রনা ভোগ করেন শারীরিকভাবে বা মানসিক ভাবে আমরা সেটার কথা বলছি না আমরা শারীরিক স্মৃতির কথা বলছি।দেহের স্মৃতি আছে। যেহেতু আপনি যাদের বাবা মা বলেন তারা এই দেহের ভিত্তি।এই দুইয়ের মধ্যেই খুব একটা গভীর স্মৃতি সংযোগ রয়েছে। যা 21 বছর বয়স অবধি খুব শক্তিশালী থাকে। একটা পেরোনোর পরে এটা দুর্বল হয়ে যায়। এটাকে চলে যায়? পুরোপুরি যায় না তবে দুর্বল হয়ে পরে। ধরুন আপনার বয়স 42 আর আপনি একজন পুরুষ সেক্ষেত্রে তখনও আপনার যথেষ্ট বেদনাদায়ক রুনাণুবন্ধন থাকবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>