বিশ্বের প্রাচীনতম ধর্মের কথা বললে হিন্দু ধর্মকেই উল্লেখ করা হয়। তবে জন্মলগ্ন থেকেই এর নাম হিন্দু ধর্ম ছিল না। এর প্রাচীন নাম সনাতন ধর্ম। কোনও একজন ব্যক্তির মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠেনি বিশেষজ্ঞদের মতে। এই ধর্ম ভারতের ভিন্ন সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মতাদর্শ নিয়েই জন্ম নিয়েছে ।
হিন্দু ধর্মের উৎপত্তি কত সালে,হিন্দু ধর্ম কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে,সনাতন ধর্মের উৎপত্তি কত সালে,সনাতন ধর্ম কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে,হিন্দু ধর্মের সৃষ্টির ইতিহাস,হিন্দু ধর্ম কিভাবে সৃষ্টি হল,হিন্দু ধর্ম কিভাবে হলো ?
প্রচলিত অর্থে যাকে হিন্দুধর্ম বলা হয় তা প্রকৃতপক্ষে হলও সনাতন ধর্ম।মূলত সনাত’ শব্দের অর্থ হলো শাশ্বত বা চিরন্তন অর্থাৎ যা আগে ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে আর এটাই সনাতন ধর্ম ।একক কোনো প্রবর্তক নেই বা হিন্দুধর্মের নির্দিষ্ট কোনো শুরু নেই। যুগযুগ ধরে মুনি-ঋষি এবং মহামনীষীরা জীবন, জগৎ ও জগতের স্রষ্টা সম্পর্কে যেসব চিন্তা-ভাবনা করেছেন, সেসবেরই সমন্বিত রূপ হিন্দুধর্ম।প্রথম বেদের আকারে প্রকাশ পায় তাঁদের চিন্তা-ভাবনা এবং পরে এই বেদের ওপর ভিত্তি করেই হিন্দুধর্মের বিকাশ ঘটে; তাই বৈদিক ধর্ম হলো এ ধর্মের অপর নাম হয় ।
সনাতন ধর্মের অভ্যূদয় মানব সৃষ্টির শুরুতেই এবং তা স্থায়ী হবে সৃষ্টির বিলয় পর্যন্ত এটা সকল হিন্দুরা বিশ্বাস করে । হিন্দু ধর্ম বা সনাতন ধর্ম স্বয়ম্ভূ ঈশ্বরে বিশ্বাস এবং এই তিন সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই বিশ্বের সৃষ্টি, স্থিতি ও লয় ।
সাধারণভাবে হিন্দুরা জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী। তাদের মতে প্রতিটি জীবই জন্ম, মৃত্যু ও পুনর্জন্মের প্রক্রিয়াধীন। পুনর্জন্মের মাধ্যমে পাপ ক্ষয় দ্বারা মানুষ মোক্ষ লাভ করতে সক্ষম হয়। এ বিশ্বাসই হিন্দুধর্মের মূল ভিত্তি
খ্রিস্টপূর্ব
১৫০০ থেকে ৫০০-এর মধ্যের সময়টি পরিচিত বৈদিক যুগ নামে। সেই যুগের পর অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হিন্দুত্বের জন্ম হয়। যে ধর্মের মানুষের মূল কথা, বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে যা যা রয়েছে, সেসবের মূলেই ঈশ্বর। ধর্ম, অর্থ, কর্ম ও মুক্তিতেই বিশ্বাসী এই ধর্মাবলম্বীরা। তাঁদের বিশ্বাস, ভগবানের অস্তিত্বেই সবকিছুর অস্তিত্ব। এদিকে ইতিহাস বিশেষজ্ঞদের মতে, আর্য জাতিরা ইউরোপের মধ্যে দিয়ে ইরান হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এবং তারাই ভারতে বেদ চর্চা শুরু করে। ধীরে ধীরে গোটা ভারতে তা ছড়িয়ে পড়ে।
এবার প্রশ্ন হল, হিন্দু শব্দটি কোথা থেকে এল? অনেকের মতে, আফগানদের থেকে এই শব্দটি শুনেছিল আর্যরা। কারণ সিন্ধু নদের তীরবর্তী সনাতন ধর্মের সাধু-সন্ন্যাসীদের হিন্দু বলে উল্লেখ করা হত। আর সেখান থেকেই নামটি প্রচলিত হয়ে ওঠে। এই সনাতন ধর্মের সন্ন্যাসীরাই বেদ, উপনিষদ, ভগবত গীতা শ্রুতিবদ্ধ করেছিলেন। যা পরবর্তীকালে লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল। সেই যুগে বেদের নিয়ম মেনেই সমাজের বিভিন্ন কাজ করা হয়। চিকিৎসা, সমাজ চালনা, গণনার মতো কাজগুলি যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। যে সভ্যতা বৈদিক সভ্যতা হিসেবে পরিচিত। আর্য জাতির লোকেরা মূলত চারটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। কাজের ভিত্তিতেই সম্প্রদায় ভাগ করে নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে যা হিন্দু সমাজের রীতিতে পরিণত হয়েছে।
হিন্দু ধর্ম কি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো ধর্ম? কেন বা কীভাবে? একটি বিশ্বাস আছে পৃথিবীর প্রত্যেকটি সভ্যতার । তারা সবথেকে প্রাচীন তারচেয়েও বেশী যে তারা সবথেকে বেশী সমৃদ্ধ। ধর্মের প্রবর্তন ও তার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস যদি কেউ উদারবাদীতার সাথে অধ্যয়ন করতে চায়, তাহলে তাকে হয়তো নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হবে। এই আখ্যা তাকে ভিন্ন ধর্মাবলম্বি দিক, তা তার নিজের ধর্মের লোক, তার নিজের ধর্মীয় সমাজ দিক। তাই এই বিষয় নিয়ে সচরাচর ঘাটাঘাটি করা হয় না। যা কিছু আমরা ইতিহাসে পড়ে থাকি, তাতে আমরা আমাদের ক্রমবিকাশের অনেক কথাই জানতে পারি। আদিম মানব, তার প্রস্তর যুগের জীবন, গাছ থেকে নেমে মাটিতে বসবাস, আগুন আবিষ্কার, নদীর পাশে দল বেঁধে থাকা, চাষবাস করা, চাকা আবিষ্কার করা ইত্যাদি। সেই সময়ে তারা ছবি এঁকে একে অপরকে কিছু বলতেন। এরপর তাদের সভ্যতায় তারা পাথরের গায়ে, গুহায় পাথরে নানান রকম আকৃতি তৈরী করেন। Altamira Caves Spain. 35 হাজার 600 বছর আগে গুহার গায়ে মানব সভ্যতার পরিচয় পাওয়া যায় ।প্রমাণ হিসেবে ছবি নিচে দেওয়া হল। Lascaux Painting, France।
১৭০০০ বছর আগে গুহার দেয়ালে আঁকা মানব সভ্যতার পরিচয়।
হিন্দু ধর্ম কি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো ধর্ম? কেন বা কীভাবে? একটি বিশ্বাস আছে পৃথিবীর প্রত্যেকটি সভ্যতার । তারা সবথেকে প্রাচীন তারচেয়েও বেশী যে তারা সবথেকে বেশী সমৃদ্ধ। ধর্মের প্রবর্তন ও তার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস যদি কেউ উদারবাদীতার সাথে অধ্যয়ন করতে চায়, তাহলে তাকে হয়তো নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হবে। এই আখ্যা তাকে ভিন্ন ধর্মাবলম্বি দিক, তা তার নিজের ধর্মের লোক, তার নিজের ধর্মীয় সমাজ দিক। তাই এই বিষয় নিয়ে সচরাচর ঘাটাঘাটি করা হয় না। যা কিছু আমরা ইতিহাসে পড়ে থাকি, তাতে আমরা আমাদের ক্রমবিকাশের অনেক কথাই জানতে পারি। আদিম মানব, তার প্রস্তর যুগের জীবন, গাছ থেকে নেমে মাটিতে বসবাস, আগুন আবিষ্কার, নদীর পাশে দল বেঁধে থাকা, চাষবাস করা, চাকা আবিষ্কার করা ইত্যাদি। সেই সময়ে তারা ছবি এঁকে একে অপরকে কিছু বলতেন। এরপর তাদের সভ্যতায় তারা পাথরের গায়ে, গুহায় পাথরে নানান রকম আকৃতি তৈরী করেন। Altamira Caves Spain. 35 হাজার 600 বছর আগে গুহার গায়ে মানব সভ্যতার পরিচয় পাওয়া যায় ।প্রমাণ হিসেবে ছবি নিচে দেওয়া হল।
 |
Altamira Caves Spain |
Lascaux Painting, France। ১৭০০০ বছর আগে গুহার দেয়ালে আঁকা মানব সভ্যতার পরিচয়।ওমান হিসেবে ছবি নিচে দেওয়া হল।
 |
Lascaux Painting, France |
গুহার দেয়ালে মানুষের আঁকা ছবি India, Bhimbetka, Bhopal ৩০০০০ বি সি ই
 |
গুহার দেয়ালে মানুষের আঁকা ছবি India |
এই আঁকার মধ্যে লক্ষ্য করতে পারেন মানুষের প্রাণীদের পোষ্য করে নিজের জন্য ব্যবহার করা (মানুষ প্রাণীদের উপর বসেছে ও কিছু সজ্জার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে)প্রমান হিসেবে ছবি নিচে দেওয়া হল এই প্রত্যেকটি ছবি নিশ্চয়ই তাদের পারিপার্শ্বিকের অভিব্যক্তি।এই প্রাচীনতম ছবিগুলি কিন্তু আমাদের তাদের ধর্মীয় আচার বিচারকে খুব একটা বুঝতে দেয় না। কিন্তু ছবিগুলি কোনো না কোনো ভাবে তাদের সামাজিক হওয়ার পরিচয় দেয়। তার মানে কোনো না কোনো রকম সংঘঠিত বিশ্বাস নিশ্চয়ই ছিলো। কারণ, আরো নানান ছবিতে, আকৃতি, মানবাকৃতি ও অতিমানবাকৃতি অর্থাৎ এমন আকৃতি যার চার, ছয়, দশ হাত ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়। সেই পুরাতন যুগে, এমন কোনো জীবন্ত চরিত্র কি তারা দেখেছিলেন না কি তারা নিছক কল্পনা করতেন। যদি তারা কল্পনা করতেন, তাহলে তা হয়তো মনুষ্য সভ্যতায় এমন কোনো শক্তির ধারণা, যা তাদের চোখের সামনের যা পৃথিবী, তার বাইরের ছিল। এই ধারণার মুল উৎস কি হতে পারতো? এক অর্থে তা-ই ধর্মের প্রাচীনতম ধারনা হতে পারে আর যাই হতে পারে যা-ই হতে পারে, এটাই বাস্তবতা। মুলত আমাদের আর্থীক সামর্থ্য দিয়ে বিশ্বাসের আলাদা আলাদা স্তরে বিচরন করি যদিও আমরা সামাজিক ভাবে এক । সেই যুগে, যখন হয়তো মুদ্রা বা ব্যবসায়ীক ধারনা সমাজকে চালিত করেনি, মানে অপরের উপর আর্থিক আধিপত্য হয়তো সম্ভব ছিল না,কিন্তু তখনও মানুষের যদি সামাজিক প্রতিপত্তি ছিল তাহলে তা নিশ্চয়ই গায়ের জোরেই হতে হবে। তাই কোনো শক্তিকে যদি আকৃতি দিতে হয়, ‘মহা’ বা বিশালাকায়, বা মহাজাগতিক এমন কিছুই হতে পারতো, যা বিশাল আকার বা মহাজাগতিক বুঝাতে সাহায্য করবে।
যাকে প্যেলিয়োলিথিক ধর্ম বলা হয় তার প্রমান প্রস্তরযুগের মানব সভ্যতায়ও নানান সামাজিক আচার বিচারের মাধ্যমে পাওয়া যায়,
পশুপতির (যা শিবের রুদ্রাবতার রুপের ভাগ) চিহ্ন পাওয়া যায় তাতে হরপ্পা সভ্যতার যা ধ্বংশাবশেষ পাওয়া যায়।
ইংলেন্ডের মিয়ুজিয়ামে রাখা স্বস্তিক চিহ্ন যা এখনো হিন্দু ধর্মের অনেক প্রতীকের মধ্যে একটি প্রতীক তাও হরপ্পা সভ্যতার ভগ্নাবশেষে পাওয়া যায় ।
 |
মিউজিয়ামে রাখা স্বস্তিক চিহ্ন |
তাকেই পুরাত্ত্ববিদরা মন্দির বলে মনে করেন মহেন্জোদারো হরপ্পা সভ্যতার ক্ষননে এমন অনেক বাস্তু নিদর্শন পাওয়া যায় ।
বিশেষ করে লিপিবদ্ধ ভাষা নিশ্চয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের পথে ভাষা, । মানব জীবন পেয়ে উপলব্ধি করা একটি সহজাত মানসিক প্রকৃতি হতেই পারতো। কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ ছবি থেকে অনেক বেশী সম্ভব শব্দের দ্বারা। এই ছবি থেকে শব্দের যাত্রা নিশ্চয়ই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল। সহজে যা বলতে চাইছি যে একটি পরিষ্কৃত লিপি আবিষ্কার ও ব্যবহৃত হওয়ার আগেও, মহাশক্তিধর-এর ধারণা বিদ্যমান ছিল।লিখিত লিপির বিষয়ে এটি মান্য করা হয় যে মানুষ লিপির দ্বারা ভাবনার আদান প্রদান করছে প্রায়
৫০০০ বছর আগে থেকে।আর এখান থেকেই পরিষ্কৃত ধর্মের জয়যাত্রার সুচনা।
এখানে একটি মৌলিক প্রশ্ন আসে, ধর্ম কি?আপনি লক্ষ্য করতে পারেন, যে জন্মগত কেউ ধর্ম নিয়ে আসে না মানব জীবনে, । প্রত্যেকেই জন্মের অনেক বছর পর্য্যন্ত ধর্মের বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারে না, বুঝতে চায়ও না, মানতে চায় না। যদি অভিভাবকরা তাদের সন্তান বা পরবর্তী প্রজন্মকে নিজের অনুমোদিত ধর্ম না ধরিয়ে দেন, তাহলে কি সহজাত প্রত্যেক নবজাত শিশু একই ধর্মকে একই ভাবে উপলব্ধি করবে। যদি একটি বিশিষ্ট ধর্মের পরিবারে জন্মানো শিশু কোনো কারণ বসত বিজাতীয় ধর্মের মানুষের বাড়ীতে লালন পালন পায়, তাহলে সে অতি সহজেই সেই ধর্মকেই নিজের ধর্ম, বা ধর্ম বলে বুঝবে। তাহলে ধর্ম বিষয়টি কি?
মাত্র দর্শন একটি। বলার অর্থ, সেই যুগে মানব জীবনে কি এমন দরকার ছিল এই বিষয়ে চিন্তা করার।নতুন আবিষ্কার করছে,বাড়ীঘর তৈরী করছে, পাথরের গায়ে ছবি আঁকছে, মাটির বাসন তৈরী করছে, সামাজিক ভাবে এক সাথে থাকছে, সেখানে সামাজিক নিয়মাবলীর দরকার হতে পারে। আইনের দরকার হতে পারে। ন্যায়ের দরকার হতে পারে। কিন্তু এমন একটি চিন্তাধারা, বা দর্শন যার সেই সময়ের ব্যবহারিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারতো না, তা কেন এসেছিল। আরো আশ্চর্য লাগে যে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাগে মানব সভ্যতা পৃথক ভাবে হলেও সেই একই ধারনার অন্তর্গত কেন ছিল যে কোনো এক শক্তি আছে। ধর্ম কথাটির এই অর্থ যে কেউ একজন কোথাও আছে, যাকে আমি আমার সহজ অবস্থায় দেখতে পারবো না, ও তিনি দড়ি টানলে আমার সব চলবে কিন্তু তিনি ধরা দেবেন না,সত্যি হতে পারে বলে মনে হয় না খুব সহজ দর্শন হলেও ।
তবে অনেক পরে হিন্দু কথাটির উল্লেখ এসেছে। আজকের দিনে হিন্দুধর্ম বলতে যা বুঝানো হয়, তা বিভিন্ন মত, আচার বিচার, অনুষ্ঠান, ধ্যান, যোগ ইত্যাদির সংযোজন।অনায়াসেই অনেক ভাবে বিভক্ত করা যায় হিন্দু ধর্মকে । সাধারনত একে সনাতন ধর্ম বলা হয়। সনাতান বলতে যা সবসময় আছে, চীরতরে, যা সবসময়ই বিদ্যমান। সময় পরিবর্তিত হবে, যুগ, কাল পরিবর্তিত হবে, কিন্তু কিছু মৌলিক সিদ্ধান্ত যা থাকবে। এই সিদ্ধান্তের একটি বৈশিষ্ট হল, যে এর শোধ, পরিবর্তন, ক্রমবিবর্তন সবই সম্ভাব্য ও প্রযোজ্য। এরফলে, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ সম্প্রদায় ইত্যাদির সৃজন ও বিস্তার সম্ভব হয়েছে।
কালখন্ডে বিভক্ত করলে বৈদিক যুগের আগে, বৈদিক যুগ ও বৈদিক যুগের পরের কাল খন্ডে বিভক্ত করতে পারেন হিন্দু ধর্ম বলতে আমরা যা বুঝি, তাকে ।নিজের উৎকর্ষে পৌঁছে বৈদিক যুগে আসে যা বৈদিক যুগের আগে যা হয়েছে । আর বৈদিক যুগের পর আবার তার মান্যতার নানান পরিবর্তন ঘটে।
সময়ের কালখন্ডে বিভক্ত করলে এই সনাতন ধর্মকে :
প্রাগৈতিহাসিক সময় হলো থেকে
১৫০০ বি সি ই পর্য্যন্ত প্রাগবৈদিক সময়
১. ১৫০০ বি সি ই থেকে ৫০০ বি সি ই পর্য্যন্ত হলো বৈদিক সময়
২. ৫০০ বি সি ই থেকে ২০০ বি সি ই পর্য্যন্ত হলো দ্বিতীয় উন্নয়ন
৩. ২০০ বি সি ই থেকে
১১০০ সি ই হলো পরিষ্কৃত বা সর্বোৎকৃষ্ট ধর্মীকরণ
আরো বিভক্ত করে দেখতে পারা যায় এই তৃতীয় ভাগটি।
২০০ বি সি ই থেকে ৩০০ সি ই হলো প্রাগ সর্বোত্তম সময়
৩২০ থেকে ৬৫০ সি ই (গুপ্ত সাম্রাজ্য) হলো স্বর্ণ যুগ
৬৫০ থেকে
১১০০ সি ই হলো পৌরানিক ধর্মীকরণ
হিন্দু ধর্মের বিভিন্নার্থ বিভেদ তৈরী হয়
১২০০ সি ই থেকে
১৭০০ সি ই র সময়কালে ও ইসলামের প্রভাব দেখা দেয়।
হিন্দু ধর্মের আধুনিক রুপ প্রবর্তন হয়
১৮০০ সি ই থেকে ।
লিখিত বেদের হদিশ পাওয়া যায় এই উপরিলিখিত সময়কালে বৈদিক যুগে
(১৫০০ বি সি ই- ৫০০ বি সি ই তে
১৫০০ বি সি ই- ৫০০ বি সি ই তে
অনান্য মানব সভ্যতায় ধর্ম বিষয়টি ছিল না এই সময়কালে , তাতে আমার সন্দেহ আছে। কারণ সর্বপ্রথম যেই বিষয়ে উল্লেখ করলাম, তখন কিন্তু বিভিন্ন সভ্যতা প্রায় সমান মনোবৃত্তির আভাস দেয়। কি মত অবলম্বন করতেন কিন্তু তারা , তাদের কি সামাজিক রীতি নীতি ছিল, সেই বিষয়ে বিষদ বিবরণ খুব একটা পাওয়া যায় না। সামাজিক ক্রম বিবর্তনের পথে তা সময়ের সাথে হারিয়ে যায়।তার অনান্য কারণ আছে। কিন্তু বৈদিক যুগে সনাতন ধর্মের যেই দর্শন পাওয়া যায় তার সমসাময়িক সময়ে অন্য কোনো সভ্যতায় এত গভীর প্রভাবশালী দর্শন এখনো সামনে আসেনি।
অতি মনুবাদী পরম্পরার অপব্যবহার যদিও পরবর্তীকালে , লুঠতরাজ নানাহ আক্রমণ, ইত্যাদির সময়ে, ক্রমশ বৈদিক জ্ঞ্যান ইত্যাদির ক্ষতি হয়েছিলো।
বিভিন্ন ধর্মের যা বয়স স্থাপিত করা হয়েছে বিভিন্ন ইতিহাসের সংযোজনে , তা নিম্ন লিখিত:
 |
বিভিন্ন ধর্মের বয়স |
সময়ের এই পুরো বিষয়টি সবসময়ই একটি গড়পড়তার অঙ্ক হয়েই থাকবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি। বিশেষ করে ভারত মহাদ্বীপে। এখানে অত্যধিক আবেগ প্রবণতার ফলে ইতিহাসকে সময়ে ও তটস্থ হয়ে লিখবার প্রবণতা দেখা যায় না সঠিক সময়ে । তার ফলে, অনেক ঘটনাই ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি।
উপরের সবগুলো তত্ত্বের প্রেক্ষিতে মন্তব্য
হিন্দু ধর্ম কি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো ধর্ম? কেন বা কীভাবে?
প্রত্যেকটি সভ্যতার একটি বিশ্বাস আছে পৃথিবীর । তারা সবথেকে প্রাচীন তারচেয়েও বেশী যে তারা সবথেকে বেশী সমৃদ্ধ। ধর্মের প্রবর্তন ও তার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস যদি কেউ উদারবাদীতার সাথে অধ্যয়ন করতে চায়, তবে তাকে হয়তো নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হবে। এই আখ্যা তাকে ভিন্ন ধর্মাবলম্বি দিক, তা তার নিজের ধর্মের লোক, তার নিজের ধর্মীয় সমাজ দিক। তাই এই বিষয় নিয়ে সচরাচর ঘাটাঘাটি করা হয় না।
যা কিছু আমরা ইতিহাসে পড়ে থাকি, তাতে আমরা আমাদের ক্রমবিকাশের অনেক কথাই জানতে পারি। আদিম মানব, তার প্রস্তর যুগের জীবন, গাছ থেকে নেমে মাটিতে বসবাস, আগুন আবিষ্কার, নদীর পাশে দল বেঁধে থাকা, চাষবাস করা, চাকা আবিষ্কার করা ইত্যাদি। সেই সময়ে তারা ছবি এঁকে একে অপরকে কিছু বলতেন। এরপর তাদের সভ্যতায় তারা পাথরের গায়ে, গুহায় পাথরে নানান রকম আকৃতি তৈরী করেন।
গুহার গায়ে মানব সভ্যতার পরিচয় Altamirain. ৩৫,৬০০ বছর আগে ।
গুহার দেয়ালে আঁকা মানব সভ্যতার পরিচয় Lascaux Painting, France।
১৭০০০ বছর আগে ।
গুহার দেয়ালে মানুষের আঁকা ছবি Bhimbetka, India, Bhopal
৩০০০০ বি সি ই । এই আঁকার মধ্যে লক্ষ্য করতে পারেন মানুষের প্রাণীদের পোষ্য করে নিজের জন্য ব্যবহার করা (কিছু সজ্জার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে এবং মানুষ প্রাণীদের উপর বসেছে )
এই প্রত্যেকটি ছবি নিশ্চয়ই তাদের পারিপার্শ্বিকের অভিব্যক্তি।এই প্রাচীনতম ছবিগুলি কিন্তু আমাদের তাদের ধর্মীয় আচার বিচারকে খুব একটা বুঝতে দেয় না। কিন্তু ছবিগুলি কোনো না কোনো ভাবে তাদের সামাজিক হওয়ার পরিচয় দেয়। তার মানে কোনো না কোনো রকম সংঘঠিত বিশ্বাস নিশ্চয়ই ছিলো। কারণ, আরো নানান ছবিতে, আকৃতি, মানবাকৃতি ও অতিমানবাকৃতি অর্থাৎ এমন আকৃতি যার চার, ছয়, দশ হাত ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়। সেই পুরাতন যুগে, এমন কোনো জীবন্ত চরিত্র কি তারা দেখেছিলেন না কি তারা নিছক কল্পনা করতেন। যদি তারা কল্পনা করতেন, তাহলে তা হয়তো মনুষ্য সভ্যতায় এমন কোনো শক্তির ধারণা, যা তাদের চোখের সামনের যা পৃথিবী, তার বাইরের ছিল। এই ধারণার মুল উৎস কি হতে পারতো? এক অর্থে তা-ই ধর্মের প্রাচীনতম ধারনা হতে পারে কিন্তু যা-ই হতে পারে না কেন।
।।।মুলত আমাদের আর্থীক সামর্থ্য দিয়ে বিশ্বাসের আলাদা আলাদা স্তরে বিচরন করি আমরা সামাজিক ভাবে এক হলেও, । সেই যুগে, যখন হয়তো মুদ্রা বা ব্যবসায়ীক ধারনা সমাজকে চালিত করেনি,আর্থিক আধিপত্য হয়তো সম্ভব ছিল না মানে অপরের উপর ,কিন্তু তখনও মানুষের যদি সামাজিক প্রতিপত্তি ছিল তাহলে তা নিশ্চয়ই গায়ের জোরেই হতে হবে। তাই কোনো শক্তিকে যদি আকৃতি দিতে হয়, তাহলে তা এমন কিছুই 8হয়তো হতো , যা বিশালাকায় ও মহাজাগতিক ইত্যাদিকে বুঝাতে সাহায্য করবে।
প্রস্তরযুগের মানব সভ্যতায়ও নানান সামাজিক আচার বিচারের প্রমাণ পাওয়া যায়, যাকে প্যেলিয়োলিথিক ধর্ম বলা হয়।পুরাপ্রস্তর যুগের ধর্ম - উইকিপিডিয়া
পশুপতির (যা শিবের রুদ্রাবতার রুপের ভাগ) চিহ্ন পাওয়া যায় হরপ্পা সভ্যতার যা ধ্বংশাবশেষ পাওয়া যায় তাতে ।
যা এখনো ইংলেন্ডের মিয়ুজিয়ামে রাখা স্বস্তিক চিহ্ন যা এখনো হিন্দু ধর্মের অনেক প্রতীকের মধ্যে একটি প্রতীক তাও হরপ্পা সভ্যতার ভগ্নাবশেষে পাওয়া যায়, ।
এমন অনেক বাস্তু নিদর্শন পাওয়া যায় যাকে পুরাত্ত্ববিদরা মন্দির বলে মনে করেন মহেন্জোদারো হরপ্পা সভ্যতার ক্ষননে।
মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের পথে ভাষা, বিশেষ করে লিপিবদ্ধ ভাষা নিশ্চয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ছিল। একটি সহজাত মানসিক প্রকৃতি হতেই পারতো মানব জীবন পেয়ে উপলব্ধি করা । কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ ছবি থেকে অনেক বেশী সম্ভব শব্দের দ্বারা। এই ছবি থেকে শব্দের যাত্রা নিশ্চয়ই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল। সহজে যা বলতে চাইছি যে একটি পরিষ্কৃত লিপি আবিষ্কার ও ব্যবহৃত হওয়ার আগেও, মহাশক্তিধর-এর ধারণা বিদ্যমান ছিল।লিখিত লিপির বিষয়ে এটি মান্য করা হয় যে মানুষ লিপির দ্বারা ভাবনার আদান প্রদান করছে প্রায় ৫০০০ বছর আগে থেকে।আর এখান থেকেই পরিষ্কৃত ধর্মের জয়যাত্রার সুচনা।
এখানে একটি মৌলিক প্রশ্ন আসে, ধর্ম কি?যে জন্মগত কেউ ধর্ম নিয়ে আসে না মানব জীবনে, আপনি লক্ষ্য করতে পারেন, । প্রত্যেকেই জন্মের অনেক বছর পর্য্যন্ত ধর্মের বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারে না,মানতে চায় না, বুঝতে চায়ও না, । যদি অভিভাবকরা তাদের সন্তান বা পরবর্তী প্রজন্মকে নিজের অনুমোদিত ধর্ম না ধরিয়ে দেন, তাহলে কি সহজাত প্রত্যেক নবজাত শিশু একই ধর্মকে একই ভাবে উপলব্ধি করবে। যদি একটি বিশিষ্ট ধর্মের পরিবারে জন্মানো শিশু কোনো কারণ বসত বিজাতীয় ধর্মের মানুষের বাড়ীতে লালন পালন পায়, তাহলে সে অতি সহজেই সেই ধর্মকেই নিজের ধর্ম, বা ধর্ম বলে বুঝবে। তাহলে ধর্ম বিষয়টি কি? এটি দর্শন বটে। বলার অর্থ, সেই যুগে মানব জীবনে কি এমন দরকার ছিল এই বিষয়ে চিন্তা করার। পাথরের গায়ে ছবি আঁকছে, বাড়ীঘর তৈরী করছে,, নতুন আবিষ্কার করছে, মাটির বাসন তৈরী করছে, সামাজিক ভাবে এক সাথে থাকছে, সেখানে সামাজিক নিয়মাবলীর দরকার হতে পারে। আইনের দরকার হতে পারে। ন্যায়ের দরকার হতে পারে। কিন্তু এমন একটি চিন্তাধারা, বা দর্শন যার সেই সময়ের ব্যবহারিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারতো না, তা কেন এসেছিল। আরো আশ্চর্য লাগে যে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাগে মানব সভ্যতা পৃথক ভাবে হলেও সেই একই ধারনার অন্তর্গত কেন ছিল যে কোনো এক শক্তি আছে। ধর্ম কথাটির এই অর্থ যে কেউ একজন কোথাও আছে, যাকে আমি আমার সহজ অবস্থায় দেখতে পারবো না, ও তিনি দড়ি টানলে আমার সব চলবে কিন্তু তিনি ধরা দেবেন না,সত্যি হতে পারে বলে মনে হয় না খুব সহজ দর্শন হলেও ।
উল্লেখ অনেক পরে এসেছে হিন্দু কথাটির। আজকের দিনে হিন্দুধর্ম বলতে যা বুঝানো হয়, তা বিভিন্ন মত, আচার বিচার, অনুষ্ঠান, ধ্যান, যোগ ইত্যাদির সংযোজন। অনেক ভাবে বিভক্ত করা যায় হিন্দু ধর্মকে অনায়াসেই । সাধারনত একে সনাতন ধর্ম বলা হয়। সনাতান বলতে যা সবসময় আছে, চীরতরে, যা সবসময়ই বিদ্যমান। সময় পরিবর্তিত হবে, যুগ, কাল পরিবর্তিত হবে, কিন্তু কিছু মৌলিক সিদ্ধান্ত যা থাকবে। এই সিদ্ধান্তের একটি বৈশিষ্ট হল, যে এর শোধ, পরিবর্তন, ক্রমবিবর্তন সবই সম্ভাব্য ও প্রযোজ্য। এরফলে, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ সম্প্রদায় ইত্যাদির সৃজন ও বিস্তার সম্ভব হয়েছে।।।
সনাতন ধর্ম বলতে বলতে আমরা যা বুঝি, তাকে কালখন্ডে বিভক্ত করলে বৈদিক যুগের আগে, বৈদিক যুগ ও বৈদিক যুগের পরের কাল খন্ডে বিভক্ত করতে পারেন। বৈদিক যুগের আগে যা হয়েছে, তা নিজের উৎকর্ষে পৌঁছে বৈদিক যুগে আসে। আর বৈদিক যুগের পর আবার তার মান্যতার নানান পরিবর্তন ঘটে। এই সনাতন ধর্মকে সময়ের কালখন্ডে বিভক্ত করলে : প্রাগবৈদিক সময়: প্রাগৈতিহাসিক সময় থেকে
১৫০০ বি সি ই পর্য্যন্ত ১. বৈদিক সময়:
১৫০০ বি সি ই থেকে ৫০০ বি সি ই পর্য্যন্ত ২. দ্বিতীয় উন্নয়ন: ৫০০ বি সি ই থেকে ২০০ বি সি ই পর্য্যন্ত ৩. পরিষ্কৃত বা সর্বোৎকৃষ্ট ধর্মীকরণ: ২০০ বি সি ই থেকে
১১০০ সি ই এই তৃতীয় ভাগটি আরো বিভক্ত করে দেখতে পারা যায়। প্রাগ সর্বোত্তম সময় : ২০০ বি সি ই থেকে ৩০০ সি ই স্বর্ণ যুগ : ৩২০ থেকে ৬৫০ সি ই (গুপ্ত সাম্রাজ্য) পৌরানিক ধর্মীকরণ: ৬৫০ থেকে
১১০০ সি ই
১২০০ সি ই থেকে
১৭০০ সি ই র সময়কালে হিন্দু ধর্মের বিভিন্নার্থ বিভেদ তৈরী হয় ও ইসলামের প্রভাব দেখা দেয়।
১৮০০ সি ই থেকে হিন্দু ধর্মের আধুনিক রুপ প্রবর্তন হয়। এই উপরিলিখিত সময়কালে বৈদিক যুগে
(১৫০০ বি সি ই- ৫০০ বি সি ই তে লিখিত বেদের হদিশ পাওয়া যায়।  এই সময়কালে অনান্য মানব সভ্যতায় ধর্ম বিষয়টি ছিল না, তাতে আমার সন্দেহ আছে। কারণ সর্বপ্রথম যেই বিষয়ে উল্লেখ করলাম, তখন কিন্তু বিভিন্ন সভ্যতা প্রায় সমান মনোবৃত্তির আভাস দেয়। কিন্তু তারা কি মত অবলম্বন করতেন, তাদের কি সামাজিক রীতি নীতি ছিল, সেই বিষয়ে বিষদ বিবরণ খুব একটা পাওয়া যায় না। সামাজিক ক্রম বিবর্তনের পথে তা সময়ের সাথে হারিয়ে যায়।তার অনান্য কারণ আছে। কিন্তু বৈদিক যুগে সনাতন ধর্মের যেই দর্শন পাওয়া যায় তার সমসাময়িক সময়ে অন্য কোনো সভ্যতায় এত গভীর প্রভাবশালী দর্শন এখনো সামনে আসেনি। যদিও পরবর্তীকালে অতি মনুবাদী পরম্পরার অপব্যবহার, নানাহ আক্রমণ, লুঠতরাজ ইত্যাদির সময়ে, ক্রমশ বৈদিক জ্ঞ্যান ইত্যাদির ক্ষতি হয়। বিভিন্ন ইতিহাসের সংযোজনে বিভিন্ন ধর্মের যা বয়স স্থাপিত করা হয়েছে, তা নিম্ন লিখিত:ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি সময়ের এই পুরো বিষয়টি সবসময়ই একটি গড়পড়তার অঙ্ক হয়েই থাকবে। বিশেষ করে ভারত মহাদ্বীপে।
এখানে অত্যধিক আবেগ প্রবণতার ফলে ইতিহাসকে সঠিক, সময়ে ও তটস্থ হয়ে লিখবার প্রবণতা দেখা যায় না। তার ফলে, অনেক ঘটনাই ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়নি। হ্যাঁ, মোটামুটি গৃহীত মতামত হচ্ছে বড় ধর্মগুলির মধ্যে হিন্দু ধর্ম সবচেয়ে পুরানো ধর্ম
(১৫০০ BC) আর ইসলাম ধর্ম সবচেয়ে নতুন ধর্ম (৬১০ AD)। বিভিন্ন ধর্মের উৎপত্তির সময়ের সারণীটি হলো । হিন্দু ধর্ম ~
১৫০০ BC
(১৫০০-১২০০ BC তে "সংহিতা", অর্থাৎ বেদ এর সব চেয়ে পুরানো অংশ রিগ বেদ ২-৯ এর উদ্ভব হয়), BC মানে যীশু খ্রিস্টের জন্মের আগে ইহুদি ধর্ম ~ ৫০০ BC
(১১০০ BC ইহাউইজিম, ৫১৫ BC - দ্বিতীয় মন্দির তৈরি হয়, ইহুদি ধর্ম নতুন করে তৈরি হয়, ইহাউইজিম বদলে গিয়ে এই প্রথম "একেশ্বরবাদ" তৈরি হয়) জোরাস্ট্রিয়ান ~ ৫০০ BC বুদ্ধ ধর্ম ~ ৫০০ BC (৫৬৩ BC বা ৪৮০ BC তে গৌতম বুদ্ধের জন্ম) খ্রিষ্টান ধর্ম ~ ০ BC বা ৪ B.C.E (যীশু খ্রিস্টর জন্ম ~ ৪ B.C.E, ৬৫ CE - ১০০ CE তে গসপেল লিখিত হয়), ইসলাম ধর্ম ~ ৬১০ AD (৫৭০ AD তে হজরত মোহাম্মদ এর জন্ম, ৬১০ AD মোহাম্মদ প্রথম কোরান পান(পাঠ), AD মানে যীশু খ্রিস্টের জন্মের পরে । ধর্মীয় স্ক্রিপ্ট এর Cannonization (একধরণের স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন) হওয়াটাকে বা সমষ্টিগত ভাবে একটি বড় জনগোষ্ঠী সেটাকে অনুসরণ করলে সেটাকে একটা সংগঠিত ধর্মের উৎপত্তি হিসাবে দেখা হয় । সিন্ধু সভ্যতা ~
৩৩০০ BC থেকে
১৩০০ BC কিন্তু সেটা হিন্দু ধর্মের জিনিস বলে দেখা হয় না ইত্যাদি কারণ সংগঠিত ধর্ম বা Cannonization হয় নি । একই ভাবে স্ক্রিপচার কবে লেখা হয়েছে সেটাই বিচার্য (যেমন কোরান ৬১০ AD এ) এবং সেটাই ধর্মের উৎপত্তি হিসাবে ধরা হয় অপরদিকে কিন্তু ওই স্ক্রিপচার এ যে সব কাল্পনিক গল্প ও সময় লেখা আছে (আব্রাহাম, আদম, ইভ, ব্রহ্মা/ভগবান/আল্লাহ কবে পৃথিবী তৈরি করলো ইত্যাদি কাল্পনিক গল্প) ধর্মের উৎপত্তি সময় বলে মানা হয় না সেটাকে । BC মানে 'Before Christ' অর্থাৎ যীশু খ্রিস্টের জন্মের আগে কত বছর সেটা বোঝানো হয় । অর্থাৎ
১৫০০ BC মানে যীশুখ্রিস্টের জন্মের
১৫০০ বছর আগে । আর AD মানে 'Anno Domini' মানে যীশু খ্রিস্টের জন্মের পরে । অর্থাৎ ৬১০ AD মানে যীশুখ্রিস্টের জন্মের ৬১০ বছর পরে । BCE (Before the Common Era) আর BC প্রায় এক (দুটো আলাদা ক্যালেন্ডার) । আবার CE আর AD এক । আর BCE ওই BC ই, প্রায় এক (দুটো শুধু আলাদা ক্যালেন্ডার, দিনগুলো প্রায় এক) ।