কলিযুগ থেকে মুক্তির উপায় ও করণীয়

আধুনিক তথা কলিযুগের অশেষ দোষ যেমন আছে তমনি মহৎ গুণও রয়েছে।কলি এমন একটি যুগ যেখানে একমাত্র হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করার মাধ্যমে আমরা ভব নদী পাড় হতে পারব।আর এই কারনেই অন্য যুগের বহু গুণ থাকা সত্ত্বেও সাধকেরা কলিযুগে জন্ম নিতে আগ্রহী ছিলেন।
কলি থেকে বাঁচার উপায় কি?

নাম সাধন ব্যথিত অন্য সাধন কলিযুগে তেমন ফলদায়ক নয়। অন্যান্য সকল সাধনের পাশাপাশি  যদি হরিনাম  করা হয় তবে তা প্রভূত ফলদান করে থাকে। সংখ্যার ডানদিকে শূন্য দিলে তা বহুগুণ করে বেড়ে যায়, যেমন ১এর ডান পাশে একটি শূন্য সংযোজন করলে ১০হয়। এই ভাবে ১০০, ১০০০ ইত্যাদি। কিন্তু সংখ্যার আদি সংখ্যা যদি না থাকে তবে শূন্যের কি আর  মূল্য থাকে। এই কলিতে অন্য সাধনের সঙ্গে যদি হরিনাম আস্চাদন করা হয়, তবে তা বহু গুণ বেশি ফল লাভ করতে সাহায্য করে। হরিনাম সংকীর্তন সকল জীবের মহা কল্যাণ বয়ে আনে।।
কলিযুগ/thehindu9.blogspot.com
 হরিনাম কীর্তনে(এক নাম)স্হাবর জঙ্গম সকলের অশেষ কল্যাণ সাধিত হয়।এই নামের শক্তি এমনই অসীম।এই নামের বীজ কঠিন পাষাণ সম হৃদয়ে পড়লেও তা শুকিয়ে যায় না বরং অঙ্কুরিত হয়।যেমন পাহাড়ে শেওলা হলে  সেখানে গাছ অঙ্কুরিত হয়ে ওঠে। অনুরুপ অত্যন্ত কঠিন ভক্তিহীন ক্রিয়াহীন অন্তরে  মহৎ কৃপার পরশ লাগলে হরিনামের বীজ অঙ্কুরিত হয়ে তাকে প্রেমিক সাধকে রুপান্তরিত করে।
হরে কৃষ্ণ/thehindu9.blogspot.com

সকলের জন্য শিক্ষনীয় গল্প : এক মালী  সাধুর আশ্রমে প্রতিদিন ফুল নিয়ে আসতে দেরী করতো। একদিন সাধু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,কেন প্রতিদিন দেরী হয়? উত্তরে মালী বললো, নদী পার হতে এবং নৌকার জন্য দাড়িয়ে থাকতে হয়, তাই প্রতিদিন আসতে দেরী হয়। সাধু বললেন আজ থেকে তুমি হরি নাম করো, দেখবে নদী হেটে হেটে পার হতে পারবে। তোমার আর নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হবেনা।
তিনি বললেন এ ভবসাগর হবে বালুচর, হাটিয়া হইবে পার, হরি নাম করো সার।পরদিন থেকে সত্যি সত্যি মালী হরি নাম করতে করতে হেটে নদী পারি দিয়ে যথাসময়ে আশ্রমে ফুল দিয়ে যেতে লাগলো। একদিন সাধু মালীকে বললেন এখন আশ্রমে ফুল দিতে তোমার দেরী হয়না কেনো? উত্তরে মালী বললেন গুরুদেব আপনি যে হরি নামের মন্ত্র আমাকে দিয়েছেন তা জপ করতে করতে অনায়াসে আমি নদী পারি দিয়ে আসতে পারি। নৌকার জন্য আর বসে থাকতে হয়না। সাধু অহংকারবশত মনে মনে ভাবলেন মালী মাত্র কয়েকদিন হরি নাম জপ করে যদি নদী পার হতে পারে তাহলে আমি বহুবছর ধরে হরি নাম করছি। আমি তার চেয়ে শুদ্ধ ভক্ত এবং অনেক শক্তিশালী, আমিতো অনায়াসেই নদী পার হয়ে যাবো। তাই পরীক্ষা করার জন্য মালীর সাথে নদী পার হতে গেলেন। মালী হরি নাম জপতে জপতে ওপারে চলে গেলো। পিছন থেকে গুরুদেব যেতে লাগলেন। গুরুদেব একটু একটু করে পানিতে নামছেন আর পা ডুবে যাচ্ছে আর তিনি একটু একটু করে ধুতি উপরে তুলছেন।
তখন মালী বললেন, গুরুদেব আপনি হরিনাম করবেন আবার কাপড়ও তুলবেন তাহলে কেমনে নদী পার হবেন? তেমনি আমরাও যদি সাধুবাবার মতো হরিনামের প্রতি বিশ্বাস না করে শুধু জাগতিক বিষয়ে চিন্তা করি তাহলে অন্তিম লক্ষ্য ভবসাগর কেমনে পার হবো। জড়বিদ্যা,জ্ঞান, ধন, যশ,রুপ, কুল ও অহংকার হরিনামের পথে বাধা।
hd krisna/thehindu9.blogspot.com


        🌷কৃষ্ণকৃপা বিনে নহে দুঃখের মোচন,
       থাকিলে বা বিদ্যাকুলে কোটি কোটি ধন।
             বহুজন্মে করো যদি শ্রবন কীর্তন,
            তথাপি না পায় কৃষ্ণপদে প্রেমধন।।🌷
আসুন আমরা জাগতিক  বিষয় চিন্তা বাদ দিয়ে কৃতিম হরিনাম  ভক্তিসহকারে জপ করি।

         "হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
           হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।"
                 
                       🌺নিবেদিতা -সীমা সরকার🌺

Next Post Previous Post
1 Comments
  • নামহীন
    নামহীন ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩ এ ৬:৩২ PM

    সুন্দর লাগছে

Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>