শ্রী নৃসিংহ ব্রত

শ্রী নৃসিংহ ব্রত মাহাত্ম্য-হাজারটা ব্রত পালন করলে যে পূণ্য হয়, একটা নৃসিংহ চতুর্দশী কেউ ভক্তি ভরে করলে তার সেই পূণ্য হয়।

নৃসিংহ অবতারঃ হিরণ্যকশিপুর কঠোর তপস্যা করে ব্রহ্মা তাকে দর্শন দেয় ও তার কাছে বর চাইলেন,অমরত্ব বর। কিন্তু ব্রহ্মা বললেন_হে হিরণ্যকশিপুর! তুমি যে বর চেয়েছো সেটা অামি দিতে পারবো না।কারণ অামি নিজেই অমরত্ব না, তাই তুমি এমন বর চাও যা আমি দিতে পারবো।শ্রী নৃসিংহ ব্রত মাহাত্ম্য কি?তখন হিরণ্যকশিপুর চিন্তা করলো আমি এমন বর চাইবো যা আমাকে কেউ হত্যা করতে পারবে না, তখন হিরণ্যকশিপুর বর চাইতে লাগলেন যে, হে শ্রেষ্ঠ বরদাতা!
 আপনি যদি আমার অভীষ্ট বরই দান করতে চান, তবে এই বর দেন যাতে আপনার কোনো সৃষ্টির কোনো প্রাণী বা পথে, ঘাটে, দিনের বেলা, রাতের বেলা, ঘরে, বাইরে, জল, ভূমি, বা অাকাশে, কোনও পশু, বা কোনো অস্ত্রের দ্বারা, এসবের দ্বারা আমাকে বধ করতে না পারে, বা ব্যাধিগ্রস্ত বা জরাগ্রস্ত না হই। ব্রহ্মা বলল তথাস্তু! 

নৃসিংহদেবের ছবি
নৃসিংহদেব 

তারপর শুরু হলো হিরণ্যকশিপুরের অত্যাচার দেবতাদের ওপর। তখন ভগবানের লীলা শুরু হল তার শুদ্ধ ভক্তের ম্যাধমে প্রহল্লাদ মহারাজ। তাই ভগবানের ভক্ত আবির্ভূত হয়ে প্রহল্লাদ মহারাজ বিষ্ণুদেবের অারাধনা করছিল, তখন তার পিতা তাকে বলত লাগলো, তোমার ভগবান কে?
সে বলতো অামার ভগবান বিষ্ণুদেব, তখন হিরণ্যকশিপু ক্ষীপ্ত হয়ে বলতে লাগলো যে, আমি তোমার জন্মদাতা পিতা তাই অামি তোমার ভগবান! কিন্তু প্রহল্লাদ বললো না! তুমি অামার ভগবান না, অামার ভগবান বিষ্ণুদেব তিনি জগতপালক শ্রীহরি তিনি জগতের পিতা ও বিধাতা। তুমি তো কেবল অামার এই জড় জগতের পিতা অার বিষ্ণুদেব অামার নিত্য পিতা। তখন হিরণ্যকশিপু তার ছেলেকে পাহাড় থেকে ফেলে দেয়, হাতির পায়ের নিচে দেয়, জলন্ত অগ্নিতে নিহ্মেপ করে, আর প্রহল্লাদ শুধু তার প্রভু বিষ্ণুদেবকে শরণ করতে থাকে। কথায় অাছে না, "মারে কৃষ্ণ রাখে কে, রাখে কৃষ্ণ মারে কে" ভগবান যদি চায় তাহলে পৃথিবীর কোন শক্তি তাকে হত্যা করতে পারবে না। তাই যখন কোন কিছুর দ্বারা সম্ভব হলনা তখন প্রহল্লাদকে কারাগারে নিহ্মেপ করল শিকল দিয়ে বেঁধে রাখলো আর মারতে লাগলো অার প্রহল্লাদ শুধু শ্রীহরিকে ডাকতে লাগলো।তখন হিরণ্যকশিপু এসে বললো অাজ তোকে কে বাঁচায়। দেখি তোর ভগবান কোথায়? তখন বৈকুণ্ঠধামে মা লহ্মীদেবী বললো হে প্রভু! এখন কি হবে প্রহল্লাদকে কে রক্ষা করবে??হিরণ্যকশিপু, তো অমরত্বের মতো বর লাভ করেছে, তাকে কে হত্যা করবে? তোমার ভক্তকে রক্ষা করবে কে? তখন ভগবান বলেন যে অমরত্বের মত বর পেয়েছে কিন্তু অমর না অার প্রহল্লাদকে রক্ষা করবে তার ভক্তি, তার ভক্তি তাকে হিরণ্যকশিপুর হাত থেকে রক্ষা করবে।তখন হিরণ্যকশিপুর বললো তোর ভগবান কি এখানে অাছে? প্রহল্লাদ বললো হ্যাঁ! অামার প্রভু সর্বতই বিরাজমান এখানেও অাছে, এই বলে হিরণ্যকশিপুর সে ঘরের চৌকাঠে পিলারে অাঘাত করতে লাগে।তখন হঠাৎ সে স্তম্ভ থেকে বের হয়ে অাসে ভক্তের ভগবান শ্রীহরি ভগবান বিষ্ণুদেব তখন হিরণ্যকশিপুর বর অনুসারে তাকে বধ করতে লাগলেন, সে ঘরেও না বাইরেও না ঘরের চৌকাঠে ও কোন নর না পশুও না কিন্তু অর্ধেক পশু ও মানুষ নরসিংহ, কোন অস্ত্রের দ্বারা না, কিন্তু নখের দ্বারা বধ করা হয়েছে, সকালে না রাতেও না, কিন্তু গোধূলি লগ্নে অর্ধেক দিনও রাত মানে সন্ধায়, জলেও না মাটিতে না অাকাশেও না। কিন্তু হাটুতে রেখে নখের দ্বারা বধ করে তাহলে চিন্তা করে দেখেন প্রভুর লীলা জগতে কে বুঝতে পারে যে ভক্তের ডাকে ভগবান তার ভক্তকে যেকোন উপায়ে রহ্মা করে এমন কি ভগবানের এই রুপ দেখে দেবতারা ও ব্রহ্মাণ্ড কেপে ওঠে এ কি রুপ হঠাৎ এই রুপের অাবির্ভাব কেউ বুঝতে পারেনি।
ভগবানের এই রুপকে দেবতারাও পর্যন্ত শান্ত করতে পারেনি তখন দেবতারা বলললো_একমাত্র একজন পারে সে তার ভক্ত প্রহল্লাদ। তখন প্রহল্লাদ প্রভুর কাছে স্তব, প্রার্থনা করতে লাগে তখন প্রভু ভক্তের প্রার্থনাই শান্ত হয় ও তাকে কোলে তোলে নেয় ও প্রভু বলে_ হে ভক্ত প্রহল্লাদ! অামি তোমাকে দর্শন দিয়েছি এখন তুমি কি বর চাও প্রার্থনা কর অামার কাছে অামি তোমাকে বর দেবো।তখন ভক্ত কি অার কিছু চাওয়ার অাছে যে জগতের প্রভু তার সামনে তবুও ভগবান বললো তুমি একটা বর চাও যেহুতো অামি তোমার সামনে প্রকট হয়েছি তখন ভক্ত প্রহল্লাদ বলতে লাগলো_ প্রভু! তুমি অামার পিতাকে মুক্তি দাও যেহুতো তিনি অামার জড়জগতে পিতা। তখন ভগবান বলললো_হে ভক্ত প্রহল্লাদ_তথাস্তু! কিন্তু তোমার শুধু এই পিতাই মুক্তি লাভ করবে না, যে গৃহে তোমার মত শুদ্ধ বৈষ্ণব ভক্ত হবে তার, ২১/কোল অাপনা থেকে উদ্ধার হবে, পিতৃকুল ১০/কোল,মাতৃকুল ১০/কোল, ও নিজের এক কোল মুক্তি লাভ করবো।

নৃসিংহব্রত পালনের  উপকারীতাঃ

এই নৃসিংহ ব্রত যে পালন করবে, তার জন্ম-মৃত্যুময় সংসারে থেকে রক্ষা পাবে। অার যিনি ব্রতদিন ব্রত লঙ্ঘন করে, চন্দ্র-সূর্য যতদিন থাকবে ততদিন নরক যাতনা ভোগ করবে।অামার এই ব্রত প্রভাবে অপুত্রক ভক্তপুত্র লাভ করে, দরিদ্র ধনশালী হয়, তেজস্কামী তেজঃলাভ করে, রাজ্যকামী রাজ্য পায়, অায়ুষ্কামী দীর্ঘায়ু পায়। ভক্তিতে বিশ্বাস এই মাত্র চাই সংসার যোনিতে নাহি কোন আর বস্তু তাহার উপর।

শ্রীনৃসিংহ চতুর্দশী  ব্রত পালনের নিয়ম কি?   

 শ্রীনৃসিংহদেব বললেন, বৈশাখী শুক্লা চতুর্দশী ব্রত পালনকারীরা পাপাচারীদের সঙ্গে কথা বলবে না, মিথ্যা আলাপ বর্জন করবে, স্ত্রীসম্ভাষণ বর্জন করবে, দ্যূতক্রীড়া ত্যাগ করে আমার রূপগুণলীলার কথা স্মরণ করবে। দুপুরে পবিত্র জলে স্নান করবে। তারপর ঘরে এসে গোময় দিয়ে মণ্ডপ লেপন করে অষ্টদলপদ্ম রচনা করবে। সেই পদ্মের উপর রত্নযুক্ত তামার কলসী বসাতে হবে। তার উপর চালভর্তি একটি পাত্র রাখতে হবে। চাউলের উপর লক্ষ্মীসহ নৃসিংহদেবকে স্থাপন করতে হবে।   কিংবা মণ্ডপে পবিত্রফুল সাজিয়ে তার উপর পঞ্চামৃতে লক্ষ্মীনৃসিংহকে স্নান করিয়ে পূজা আরম্ভ করতে হবে। আগে প্রহ্লাদের পূজা তারপর লক্ষ্মীনৃসিংহের পূজা। এই অভিষেক ও পূজা আরতি সন্ধ্যাকালে সম্পন্ন করতে হয়। নৃত্য গীত বাদ্য ও হরিনাম সংকীর্তন, নৃসিংহস্তুতি, নৃসিংহলীলা পাঠ কীর্তন পূর্বক রাত্রি জাগরণ এবং পরদিন সকালে স্নান সেরে যত্নসহ পূজা ও সকলের মঙ্গল প্রার্থনা করতে হয়। তারপর ব্রাহ্মণকে দক্ষিণা দান ও প্রসাদ সেবন করতে হয়। অপারগ লোকেরা কমপক্ষে সন্ধ্যার পর অনুকল্প প্রসাদ গ্রহণ করে থাকেন। রাত দশটা পর্যন্ত জেগে থাকেন। পরদিন মঙ্গল আরতিতে নৃসিংহস্তব করতে থাকেন।MS

#tag;নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত,

নৃসিংহ চতুর্দশী 2022,

নৃসিংহ চতুর্দশী,

নৃসিংহ চতুর্দশী ২০২২,

নৃসিংহ চতুর্দশী মাহাত্ম্য,

নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত পালনের নিয়ম,শ্রী নৃসিংহ চতুর্দশী,

নৃসিংহ আরতি,

শ্রী নৃসিংহ ব্রত মাহাত্ম্য,

নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত কথা,

নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত ২০২১,

শ্রী নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত কথা,

নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত মাহাত্ম্য,

নৃসিংহ চতুর্দশী পালনের নিয়ম,

নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত পালনের বিধি নিয়ম,

নৃসিংহ চতুর্দশী 2022,

শ্রী নৃসিংহ চতুর্দশী ২০২২ ব্রত পালনের মাহাত্ম্য

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>