দ্রৌপদী মহাভারতের অনন্য সতী নারী চরিত্র

মহাভারতের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র হলেন দ্রৌপদী।  আসুন জেনে নেই কে এই দ্রৌপদী

দ্রৌপদী /দেবনাগরী(द्रौपदी)ঃদ্রৌপদী পঞ্চপাণ্ডবের সহধর্মিনী ও মহাভারতের বীরাঙ্গনাদ্রৌপদী পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের কন্যা । দ্রুপদ রাজার কন্যা বলে তার নাম হয় দ্রৌপদী । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শেষে যুধিষ্ঠির যখন হস্তিনাপুরের রাজা হন তখন তিনি পুনরায় রাণী হন । তিনি বিভিন্ন নামে পরিচিতা । পাঞ্চালের রাজকুমারী বলে তিনি পাঞ্চালী, যজ্ঞ থেকে তিনি উৎপন্ন হয়েছিলেন বলে যাজ্ঞসেনী, ভরতবংশের কুলবধু বলে তিনি মহাভারতী এবং তিনি সৈরিন্ধ্রী নামেও পরিচিতা কারণ অজ্ঞাতবাস কালে তিনি মৎস্যরাজ বিরাটের স্ত্রী সুদেষ্ণার কেশসংস্কারকারিনী ছিলেন।

 মহাভারতে দ্রৌপদীকে অনিন্দ্য সুন্দরী ও তার সময়ের শ্রেষ্ঠ নারী হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে । দ্রৌপদী তার শ্বশ্রূ কুন্তীর মত পঞ্চকন্যার অন্যতমা ।দ্রৌপদী তার শ্বশ্রূ কুন্তীকে খুব ভালবাসতেন । কুন্তী ও পুত্রবধুকে ভালবাসতেন।
দ্রৌপদী মহাভারতের অনন্য  সতী নারী  চরিত্র
দ্রৌপদী


দ্রৌপদী পূর্ব জন্মে এক বড় ঋষির গূণবান কন্যা ছিল। বহু রূপবতী, গূণবতী আর সদাচারিণী ছিল। কিন্তু পূর্বজন্মের কর্মের কারণে কেউ তন্নী রূপে স্বীকার করে নি। এই দুঃখে উনি তপস্যা করতে লাগলেন।
তাঁর উগ্র তপস্যার কারণে ভগবান শিব প্রসন্ন হলেন আর উনি দ্রৌপদীকে বললেন মনের ইচ্ছা অনুসারে বর চেয়ে নিতে। এই সময় দ্রৌপদী বললেন,"আমার এমন বর চাই যে ধর্মপারায়, সর্বশ্রেষ্ঠ বলশালী, সর্বশ্রেষ্ঠ অস্ত্র বিদ্যা পারাঙ্গত, সুন্দর, তথা প্রকৃতি প্রেমীও হবে। এমন সর্বগূণযুক্ত পতি চাই। "
ভগবান শিব বললেন-- "এই সব বিশেষতা কোন এক ব্যক্তিতে সম্ভব না, এজন্য তোমার দ্বিতীয় জন্মে এক না পাঁচ পতি পাবে তুমি।"
তখন দ্রৌপদী বলল-- "আমি আপনার কৃপাকে একজন পতি চাই।"
তখন শিবাজী বললেন, "আমার বরদান ব্যর্থ হবে না। এজন্য তোমার পাঁচজন পতি প্রাপ্তি হবে।"

কুন্তী তথা পান্ডবরা যখন দ্রৌপদীর স্বয়ংবরের বিষয়ে শুনল তখন তারা সেখানে সম্মিলিত হতে চলল। কৌরবের হাত থেকে বাঁচতে পান্ডবরা ব্রাহ্মণ বেশে পাঞ্জাব দেশে এক কুমারের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন।রাজা ধ্রুপদ নিজ কন্যা দ্রৌপদীর বিবাহ অর্জুনের সাথে করাতে চেয়েছিলেন। লাক্ষাগৃহের ঘটনা শোনার পরেও তাঁর বিশ্বাস হচ্ছিল না যে পান্ডবদের নিধন হয়ে গেছে।শেষে দ্রৌপদীর স্বয়ংবরে রাজা ধ্রুপদ এই শর্ত রাখল, যে বীর ধনুকে পাঁচ বাণ দিয়ে নিরন্তর ঘুরন্ত যন্ত্রের ছিদ্রের উপরে রাখা মৎস্যের চক্ষু ছেলে করবে নিচে জলের মধ্যে দেখে সেই বীরের সাথে দ্রৌপদীর বিবাহ দেয়া হবে।
ব্রাহ্মণবেশে পান্ডবরা স্বয়ংবর স্থলে পৌছালেন। কৌরব আমি অনেক রাজা তথা রাজপুত্র দূর্যোধন, দুঃশাসন, শকুনি, শিশুপাল, কর্ণ, আরো অনেকে উপস্থিত। সকলে ধনুকে বাণ লাগতেই ধূলিসাৎ হয়ে গেল।কর্ণ তো ধনুকে বাণ লাগল কিন্তু দ্রৌপদী সুত পুত্রকে বিবাহ করতে চাইল না, শেষে লক্ষ্য ছেদন করা প্রশ্নই আসে না কর্ণের।

অর্জুন ছদ্মবেশে পৌঁছে লক্ষ্য ছেদন করে দিল তথা দ্রৌপদীকে প্রাপ্ত করলেন। কৃষ্ণ তাঁকে দেখেই চেনে ফেলল। শেষে উপস্থিত সকলের মধ্যে বিবাদ হতে লাগল যে ব্রাহ্মণকে কেন কন্যা দিলেন দ্রুপদ।অর্জুন তথা ভীম রণ কৌশল তথা কৃষ্ণের নীতিতে শান্তি স্থাপিত হল। অর্জুন আর ভীম দ্রৌপদীকে নিয়ে কুটিয়াতে পৌছালেন।কুন্তী মা মনে করলেন ছেলেরা ভিক্ষা নিয়ে এসেছেন, তাই বিনা দেখা কুন্তী কুটিয়ার ভিতর থেকে বললেন, "যা ভিক্ষা এনেছ, পাঁচ ভাই ভাই ভাগ করে গ্রহণ করো।"মায়ের বচনের সত্যতা রাখতে পঞ্চ পান্ডব দ্রৌপদীকে বিবাহ করলেন।

দ্রৌপদীর ভাই ধৃষ্টদ্যুম্ন ব্রাহ্মণ বেশধারী পান্ডবদের পিছনে পিছনে লুকিয়ে আসেছিল। সে এটা জানতে পারল না এই ব্রাহ্মণরা কারা? তবে তাদের কুটিয়ার ঠিকানা তাঁর পিতা দ্রুপদকে দিল।দ্রৌপদীকে পাঁচালী কি?
দ্রৌপদী /দেবনাগরী(द्रौपदी(
দ্রৌপদী /দেবনাগরী(द्रौपदी)

ধ্রুপদ ব্রাহ্মণ বেশধারী পঞ্চপান্ডবকে গৃহ আমন্ত্রণ করলে তখন জানতে পারল এরা পান্ডব। এটা জেনে খুশি হল। কিন্তু এটা শুনে বিচিত্র লাগল, পাঁচজন দ্রৌপদীকে বিবাহ করতে যাচ্ছে।তখন ব্যাসমুনি সেখানে প্রকট হয়ে একান্তে দ্রুপদকে পঞ্চম পান্ডব আর দ্রৌপদীর পূর্বজন্মের কথা বললেন। তিনি বললেন, "একবার রুদ্র পাঁচ ইন্দ্রদের তাদের দুরভিমান স্বরূপ তাদের অভিশাপ দেন।" অভিশাপে তারা মানবরূপ ধারণ করেন। তাদের পিতা ক্রমশ- ধর্ম, বায়ু, ইন্দ্র তথা আশ্বিনীকুমার। 

ভূলোকে তাদের বিবাহ স্বর্গলোকের লক্ষ্মী মানবী রূপের সাথে। সেই রূপ হল দ্রৌপদী। সেই পঞ্চ ইন্দ্র পঞ্চ পান্ডব। এই পঞ্চ পান্ডবের সাথে বিবাহ হয়। ব্যাসদেবের ব্যবস্থায় এই বিবাহ সম্পন্ন হয়। তাদের দ্রৌপদীকে পাঁচালী বলা হয়।

#tag;
মহাভারতের নারী চরিত্র
মহাভারতের নারী চরিত্রের নাম
দ্রৌপদী চরিত্র
দ্রৌপদীর চরিত্র
দ্রৌপদী মহাশ্বেতা দেবী
দ্রৌপদীর অন্য নাম
মহাভারতের নারী চরিত্র pdf
দ্রৌপদীর জন্ম রহস্য
দ্রৌপদী জন্ম
মহাভারতের নারী
পৌরাণিক নারী চরিত্র
মহাভারত দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর
দ্রৌপদী মহাশ্বেতা দেবী pdf
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>