দেবী কাত্যায়নী ও শ্রীকাত্যায়নী ব্রত মাহাত্ম্য
মা কাত্যায়নী হিন্দু দেবী দুর্গার একটি বিশেষ রূপ ও মহাশক্তির অংশবিশেষ। তিনি নবদুর্গা নামে পরিচিত দুর্গার নয়টি বিশিষ্ট রূপের মধ্যে ষষ্ঠ। নবরাত্রি উৎসবের সময় তার পূজা প্রচলিত।শাক্তধর্ম মতে, তিনি মহাশক্তির একটি ভীষণা রূপ এবং ভদ্রকালী বা চণ্ডীর মতো যুদ্ধদেবী রূপে পূজিতা।লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, তার গাত্রবর্ণ দুর্গার মতোই লাল। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে রচিত পতঞ্জলির মহাভাষ্য গ্রন্থে তাকে মহাশক্তির আদিরূপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।কৃষ্ণ যজুর্বেদের অন্তর্গত তৈত্তিরীয় আরণ্যকে দেবী কাত্যায়নীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। স্কন্দ, বামন ও কালিকা পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুর বধের নিমিত্ত দেবগণের অনুরোধে দেবী পার্বতী নিজের তেজ শক্তি তাদের দান করেন ও তাকে কায়া মূর্তি দিতে বলেন মহিষাসুর বর প্রাপ্ত ছিলো যে তাকে একমাত্র নারী মারতে পারবে যে মাতৃ গর্ভে জন্মাই নি তাই দেবী পার্বতী দেবগণের সহায়তাতে তামসি দেবী কে সৃষ্টি করেন সেই দেবী মহিষ অসুর বধ করেন।
দেবী কাত্যায়নী ছবি |
ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলে এই পৌরাণিক ঘটনাটির প্রেক্ষাপটেই বাৎসরিক দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।খ্রিষ্টীয় পঞ্চম-ষষ্ঠ শতাব্দী নাগাদ রচিত মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম্ ও একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে রচিত দেবীভাগবত পুরাণ গ্রন্থে কাত্যায়নীর দিব্যলীলা বর্ণিত হয়েছে। একাধিক বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মগ্রন্থ এবং তন্ত্রগ্রন্থেও কাত্যায়নীর উল্লেখ পাওয়া যায়। খ্রিষ্টীয় দশম শতাব্দীতে রচিত কালিকা পুরাণে বলা হয়েছে, উড্ডীয়ন বা ওড্রদেশ (ওড়িশা) দেবী কাত্যায়নী ও জগন্নাথের ক্ষেত্র। কাত্যায়নী পূজা অতি প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত। আর. জি. ভাণ্ডারকরের মতে, কাত্য জাতির পূজিতা ছিলেন বলে দেবী কাত্যায়নী নামে অভিহিতা হন। যোগশাস্ত্র ও তন্ত্র মতে, কাত্যায়নী আজ্ঞা চক্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী এবং এই দেবীর ভক্তি বিন্দুতে মনোনিবেশ করতে পারলে তার আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
শ্রীকাত্যায়নী ব্রত আরম্ভ.....ব্রজের কুমারীগন শ্রীকৃষ্ণকে পতিরূপে পাইবার জন্য হবিষ্যভোজন পরায়না হইয়া হেমন্তকালে শ্রীকাত্যায়নী ব্রত আরম্ভ করিয়াছিলেন।তাহারা অনুরোদয়কালে গাত্রোস্থান করিয়া শ্রীযমুনা নদীতে স্নান করিতে যাইবার সময় প্রত্যহ উচ্চস্বরে শ্রীকৃষ্ণের গুনাদি গান করিতেন।
তাহারা শ্রীযমুনায় স্নান করিয়া বালুকাময়ী শ্রীকাত্যায়নীরমূর্তি তৈরি করে গন্ধ্য মাল্য ,ধূপ, দীপ,ও বিবিধ জিনিস ফল, চাউল,ও নানা প্রকার সামগ্রী দ্বারা দেবীর আরাধনা করতেন।কুমারীগন শ্রীকাত্যায়নী সম্বোধন পূর্বক- অয়ি মহামায়ে,মহাযোগিনী অধিশ্বরী কাত্যায়নী দেবী তুমি নন্দ সুত শ্রীকৃষ্ণ কে আমার পতি কর , তোমাকে প্রনাম করি। এইরূপ মন্ত্র জপিতে জপিতে পূজা করিতে লাগিল।সেই কুমারীগনের আরাধিত এই শ্রীকাত্যায়নী দেবী চিৎ শক্তি বৃত্তি - স্বরুপ ভুতা যোগমায়া।ইহাকে আরাধনা করিলে সহজেই আদিদেব অখিলেশ্বরকে জ্ঞাত করা যায়। কিন্তু ইহার মহামায়া নামে একটি আবরনী আছে। এই মহামায়ার দ্বারা অনিত্য জগতে দেহাভিমানী জীবগন মুগ্ধ হয়ে থাকে। অতএব যোগোমায়া অধিষ্ঠাত্তী দেবী।ইনিই ব্রজের কুমারীগনের দ্বারা পুঁজিত হয়েছেন।
ভগবানের এই পরাশক্তি স্বরুপাত্মিকা দূর্গা,বহিরঙ্গামায়া নয় এবং ইহাতে অনেক লোকের ভ্রম হয়। ব্রজের কুমারীগন একমাস ধরিয়া এই ব্রত করিয়াছিলেন।ব্রজে লোকবৎ লীলা বলিয়া মায়ার উপাসনাতে কোনো দোষ হয় না। নন্দ সুত আমার পতি হউন। তাহারা শ্রীকাত্যায়নী দেবীর নিকট এই প্রার্থনা সংকল্প এবং এইরুপ বাসনা লইয়া শ্রীকাত্যায়নী দেবীর অর্চন করেছিলেন।
Joy ma
কত তারিখে পূজা হবে