হিন্দু ধর্ম কি গ্রহণ করা যায়? গ্রহণ করা গেলে গ্রহণেরপদ্ধতি কি?

হিন্দু ধর্ম গ্রহন করা যায়,কিভাবে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করা যায়,অন্য ধর্ম থেকে কিভাবে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করা যায়,হিন্দু ধর্ম গ্রহণ,স্বেচ্ছায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ,ইসলাম ধর্মত্যাগ করে সনাতন ধর্ম গ্রহণ,হিন্দু ধর্ম গ্রহন,হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ,ধর্ম গ্রহণ

পৃথিবীর সব থেকে প্রাচীন ধর্ম সনাতন ধর্ম। সকল ধর্ম,মত, পথ ও উপাসনা পদ্ধতি এসব কিছুরই উৎসমুখ হচ্ছে এইহিন্দুধর্ম। যেহেতু একসময় পুরো পৃথিবীতে হিন্দুধর্ম ছাড়াঅন্য ধর্মই ছিল না তাই সেসময়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকেহিন্দুধর্মে দীক্ষিত করার প্রথাও ছিল না, কেননা সেসময়ভিন্ন ধর্ম বলতে কিছু ছিল না।

 
কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে শুধুভিন্ন ধর্মের উদ্ভবই ঘটেনি এমনকি হিন্দুধর্মকে সংহারকরতে বহু ধর্মেরই উদ্ভব ঘটেছে আর এদের দ্বারা হিন্দুরাবিপথে চালিতও কম হয়নি।-মহামানবরা যেমন সমাজ সংস্কারের জন্য কাজ করেনতেমনি সময়ের প্রয়োজনে কিছু পদ্ধতিও সম্প্রদায় ওসমাজের জন্য নির্দেশ করেন। খ্রিষ্টীয় চতুর্থ/পঞ্চমশতাব্দীর দিকে তেমনি একজন ঋষির আবির্ভাব ঘটে। আরভিন্ন ধর্মে চলে যাওয়া হিন্দুদের নিজ ধর্মে ফিরিয়েআনতে এবং ভিন্ন ধর্মের মানুষকে হিন্দুধর্ম গ্রহণের পদ্ধতিলিপিবদ্ধ করেন এই মহান ঋষি দেবল।
তাঁর রচিত 'দেবলস্মৃতি'তে হিন্দুধর্ম গ্রহণের পূর্ণাঙ্গ বিধান দেয়া আছে।ভারতীয় আর্য সমাজ, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, স্বামীনারায়ণ সংস্থা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিভিন্নসময়ে কনভার্ট হওয়া হিন্দুদের নিজ ধর্মে ফিরিয়ে আনা ওভিন্ন ধর্মাবলম্বীর হিন্দুধর্ম গ্রহণের 'শুদ্ধি যজ্ঞ' নামকআনুষ্ঠানিকতাটি মূলত এই দেবল স্মৃতির অনুসরণ।চতুর্থ/পঞ্চম শতাব্দীর দিকে ঋষি দেবলের ডাকেসমসাময়িক ভারতে ঋষিদের নিয়ে সিন্ধু তীরবর্তী (বর্তমানপাকিস্তান অংশে) এক সম্মেলন হয়।

হিন্দু ধর্ম গ্রহণ
হিন্দু ধর্ম গ্রহণ 


এই সম্মেলনে ঋষিদেবল ও অন্যান্য ঋষিগণ হিন্দুদের( রক্ষা ও হিন্দুধর্মপ্রসারের লক্ষ্যে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হন। এইসিদ্ধান্তের ফলাফল হচ্ছে 'দেবল স্মৃতি' নামক গ্রন্থ।ভারতের দেরাদুন আর্য সমাজের গ্রন্থাগারে আজও'দেবল স্মৃতি' সংরক্ষিত আছে। এই গ্রন্থের বাংলা অনুবাদযত শীঘ্র হবে ততই আমাদের জন্য মঙ্গল।এছাড়াও বেদের সেই বিখ্যাত মন্ত্রও আমাদের নির্দেশকরে যে হিন্দুধর্ম গ্রহণ করা যায়-'হে মনুষ্যগণ তোমরা ঈশ্বরের মহিমাকে বৃদ্ধি কর, সমগ্রবিশ্বকে আর্যধর্মে দীক্ষিত কর' । ঋগ্বেদ, ৯/৬৩/৫বাংলাদেশের সকল উকিলই এই তত্ত্ব দিয়ে থাকেনযে হিন্দুধর্ম গ্রহণ করা যায় না। আর সেকারণে অনেকেপ্রেম বা ধর্মবোধ যেকারণেই হোক হিন্দুধর্ম গ্রহণ করতেচাইলে গ্রহণ করার পথ খুঁজে পায় না। এই মিথ্যা আইনেরচর্চা এক অর্থে প্রচ্ছন্ন সাম্প্রদায়িকতার চর্চা।

স্বধর্ম ত্যাগ করলে কি হয়?

সনাতন ধর্ম কখনই ধর্ম ত্যাগকে স্বীকৃতি দেয় না। কোন ব্যক্তি যে ধর্মে  জন্মেছে তার কাছে সেই ধর্মই শ্রেষ্ঠ। সে সনাতনি হোক মুসুলিম হোক আর যে ধর্মরই হোক না কেন। ইসলাস ধর্মে  যেমন অন্য ধর্মালম্বীদের নিজেদের ধর্মে রুপান্তরীত করলে ছোয়াব পায়, সনাতন ধর্মে তা অপরাধ। এজন্যই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সমন্বয়কারী ধর্ম সনাতন। সনাতন ধর্ম কোন ধর্মের অপমান গ্রাহ্য করেনা।  কারন তুমি কি এমন ধর্ম জানলে যে তুমি ধর্ম ত্যাগ কর।ধর্মের গভীরতা বোঝা এত সহজ নয়। আর বিষদ ভাবে আলোচনা করা হবে পরের পোষ্টে। লাইক দিয়ে সাথে থাকুন।   মদ্ভাগবতে ২৮ টি নরকের মধ্যে অন্যতম ভয়ংকরী নরক হলো "অসিপত্রবন"। যে ব্যক্তি স্বধর্ম পরিত্যাগ করে অন্য ধর্ম বা পরের ধর্ম গ্রহন করেন তাহারা মৃত্যুর পর এই নরকে পতিত হয়। যমদূত গন অতি গরম তাপের কীটের জলে তাকে ফেলিয়ে তার দেহে কষাঘাত করতে থাকে,তখন সে সহ্য না করতে পেরে ছোটাছুটি করতে থাকে,তখন অতি ধারালো তালবনের অসিপত্র দ্বারা তার দেহ কেঁটে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর সেই ব্যাক্তি চিৎকার করে বলে আমি হত হলাম রে,আমাকে ছেড়ে দাও প্রভু।বরং যমদূত গন না ছেড়ে অভিরাম তাকে অসহ্য যন্ত্রণা দিতে থাকে। এই ভাবে মৃত্যুর পর তারা অনেক অনেক বছর এই ভয়ংকরী নরকে কষ্ট যন্ত্রণা ভোগ করে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অজুর্ন কে বলেছেন "ওঁ শ্রেয়ান্স্বর্মো বিগুনোঃ পরা ধর্মা স্বপুষ্ঠিতাৎ স্ব ধর্মে নিধনং শ্রেয়ং পরো ধর্মো ভয়াবহ । শ্রীমদ্ভাগবত গীতাতে ৩/৩৫ স্বধর্মে যদি দোষ থাকে তাও পরো ধর্ম হতে ভালো। স্বধর্মে সাধনে যদি মৃত্যু হয় তাও মঙলজনক কিন্তু অন্যের ধর্মের অনুষ্টান করা মহা পাপ ও বিপদজনক। আবার চানাক্য শ্লোকে ও বলা হয়েছে যে যাহারা স্বধর্মের সাথে সমন্ধ রাখেন, তাদের বিনাশ নেই। বর্তমানে কিছু ছেলে মেয়েরা লোভে, সামান্য সুখের জন্য নিজের ধর্ম পরিত্যাগ করেন, কিন্তু তারা ভাবেনা যে কি মহা অন্যায় তারা করছে। বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা ঐসব ছেলেমেয়েদের প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ধর্মে সংখ্যা বাড়াচ্ছে। আমি কি বলতে চাইছি আশাকরি সবাই বুঝতে পারছেন। তাই সাবধান সনাতন ধর্মালোম্ভিদের সাবধান ।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url