শরীরের জন্য উপোস কেন প্রয়োজন ও উপবাস কবে এবং কেন করা উচিত

উপবাস কেন করবেনঃ  

৪০ থেকে ৪৮ দিনে এই দেহটি একটি চক্রের মধ্যে দিয়ে যায়। তিনটে এমন দিন থাকে যখন আপনার শরীরের খাবারের প্রয়োজন হয় না। দেহকে এই বিরতিটি দিলে এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। শরীর যেভাবে কাজ করে তার জন্য। আপনাকে অনুভব ও জীবনের সম্পুর্ণ আলাদা মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। আপনি যদি শরীরের স্বাভাবিক সাইকেল বা কারচক্র গুলোকে লক্ষ্য করেন দেখবেন একটা ব্যাপার রয়েছে যাকে বলে মন্ডল।যেহেতু  ৪০-৪৮ দিনে এদেহে একটি চক্রের মধ্যে দিয়ে যায়। 

এই সময়কালের মধ্যে প্রত্যেকটি সাইকেলে তিনটে এমন দিন থাকে যখন আপনার শরীরে খাবারের প্রয়োজন হয় না। যদি যদি আপনি সচেতন থাকেন  যে আপনার  শরীর কিভাবে কাজ করে তাহলে আপনি বুঝে যাবেন এই দিনটাতে শরীর খাবার চাইছে না।আর অনায়াসে আপনি সেই তিনটা খাবার না খেয়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন। যদি এই সাইকেল গুলোকে ভাল করে লক্ষ্য করেন। সেই দিনগুলোকে চেনার মত সচেতনতা যদি না থাকে,সেই জন্য ভারতে একটি দিনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাকে বলে একাদশী। 

যার মানে নিউমুনের ৪দিন আগে/ পূর্ণচন্দ্রের ৪ দিন আগে লোকেরা খাবার খান না। সকালে উঠে ব্রেকফাস্ট না লাঞ্চ না কেবল সূর্যাস্ত যাবার পর একবার খান।এটা দেহকে আবার নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া। দেহকে এই বিরতিতে দিলে এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। শরীর যেভাবে  কাজ করে তার জন্য।দেহর সেই সময়টা দেওয়া প্রয়োজন সার্কেল গুলো পূরণ করার জন্য। প্রতিদিন খাওয়ার সময়ও আপনার দেহের প্রচুর পরিশ্রম হয় তাই দেহকে কিছুটা বিশ্রাম দিন। যদি আপনি উপবাস করতে না পারেন তবে মাঝে মাঝে হালকা কিছু খান যা শরীরের পক্ষে হজম করা সহজ। নিশ্চিতভাবে শরীর আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। প্রত্যেকদিন রান্না করা খাবার শরীরের মধ্যে ঢোকানো এটা ভালো নয়, তো এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য কি? এটা এক ধরনের বিশুদ্ধিকরন। আপনার দেহ তন্ত্র যদি প্রাণবন্ত না হয়, আপনার আধ্যাত্বিক কোন কিছু করতে ইচ্ছা করবে না। আপনি অলস বোধ করবেন। একজন সাধকের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো ঘুম। চোখ বন্ধ করে বসা অথচ সম্পূর্ণ সজাগ থাকা এটা করতে একটা অন্য ক্ষমতা লাগে। বেশিরভাগ মানুষই চোখ বন্ধ করলে  ঘুমিয়ে পড়েন। চোখ বন্ধ করে বসে একই সময় সম্পূর্ণ সজাগ থাকা এটা করতে শরীরের আরেক মাত্রার প্রাণবন্ততা লাগে। প্রাণবন্ত তাকে নিয়ে আসতে আমরা কি খাবো করব কতটা খাব তা যোগীরা মেনে চলে।এটা আধ্যাত্মিক না কিন্তু শরীরকে সঠিক ভাবে তৈরি করে। এই মুহূর্তে আপনার শরীর যদি অলস বোধ করে এই শরীরটিকে প্রাণবন্ত রাখা সজাক রাখা,এই শরীরটিকে যন্ত্রণা ও সমস্যা থেকে দূরে রাখা  আপনার একান্ত আবশ্যক আর তখনি আপনি বড় কিছু চাইবেন অর্থাৎ ভালো কিছু চাইবেন। 

ধরুন এই মুহূর্তে আপনার প্রচন্ড পা ব্যথা করছে ভগবান এলেন  আপনি চাইবেন ভগবান যেন আপনার পায়ের ব্যাথাটা ভালো করে দেয়। তাই নয় কি?মানুষ এই অবস্থায় এটাই চায়। কারণ শরীরে সেই রকম প্রভাব রয়েছে আপনার উপর। যতক্ষণ না শরীরের মধ্যে আপনি নির্দিষ্ট একটা সহজভাবে নিয়ে আসছেন ততক্ষণ পর্যন্ত এটা আপনাকে সব দিক থেকে নিয়ন্ত্রণ করবে। এটার জন্য আপনার শরীরকে সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর রাখা গুরুত্বপূর্ণ না হলে শরীর আপনার থেকে বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠবে। ধরুন আপনার এই মুহূর্তে শরীরে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হল (বিচ্ছিরি রকমের ব্যথা) এই অবস্থায় আপনার ভগবান  ধ্যাণ সব কোনকিছুতেই আপনার আগ্রহ থাকবে না। আগ্রহ থাকবে শুধু ব্যথার উপর। তাই শরীরকে আপনাকে খুশি রাখতে হবে তবেই আপনাকে অন্য কিছু করতে দিবে।

উপবাস কি
উপবাস কেন করবেন 

এই পরিপেক্ষিতে উপোস করা। যখনই সুযোগ পেলেন শরীর টাকে বিরতি দেওয়া, নিজের প্রাণবন্ত তাকে ফিরে পেতে, অলস না হয়ে উঠতে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। উপোস করা বাদ দিয়ে আপনি যদি দুটো খাবারের মাঝখানে  কিছু সময় বিরতি দেন তাতেও শরীর কিছুটা বিরতি পাবে।দুটি  খাবারের মাঝের বিরতি আধঘন্টা হল আদর্শ সময়।আধঘন্টা যদি সম্ভব না হয় অন্তত  ৫ ঘন্টা সময় দরকার দুটো খাবারের মাঝখানের বিরতির জন্য । আপনি খাবার আগে শরীরের খিদে আসতে হবে। খিদে আসার আগে আপনি যদি শরীরের মধ্যে খাবার দেন দেহতন্ত্র ভালো শাড়ি পরবে। আপনি প্রাণবন্ততা হারাবেন। প্রকৃতিতে প্রত্যেকের প্রাণবন্ততা এক নয় যদিও আমরা একই খাবার কাছিয়া কি বাতাস নিচ্ছি একইভাবে ঘুমাচ্ছি ইত্যাদি। তারপর দেখবেন আমাদের সকলের অনুভব এর মাত্রাও এক নয়।প্রাণবন্ততা/অনুভব এক নয় কারণ আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় মনোযোগ ও এই মানবতন্ত্র  নিয়ে যা করা উচিত আমরা করিনা।তো এই শরীরকে সুস্থ রাখার একটা মৌলিক অধিকার বটে।কোন বিশাল খেলোয়ার হতে হবে না কিন্তু কেবল একটা সহজ ভাব আনা উচিত।     

শরীরের জন্য উপবাসের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ

 কিছু গবেষণায় দেখা গেছে।  কয়েক দিনের জন্য উপবাস অধিকাংশ স্বাস্থ্যকর মানুষের ক্ষতি করবে না। বরং শরীরের জন্য উপকারি।  

১। মাঝে মাঝে উপবাস কারলে ওজন বা শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করবে। কারন উপবাসের সময়, আপনার চর্বি কোষের মধ্যে সংরক্ষিত চর্বি গুলো শরীরের জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়।  

২। ডায়াবেটিস বা শর্করা কমায় - না খেয়ে থাকলে রক্তে গ্লুকোজ এর পরিমাণ কমতে থাকে। তখন গ্লাইকোজেন (glycogen) নামে সংরক্ষিত গ্লুকোজ গুলি ব্যয় হতে শুরু করে। এর ফলে শর্করা কমে যায়।  

৩। ইমিউন সিস্টেম (Immune System) উন্নত করে - উপবাসের সময় আপনার কোষ গুলোর পুনর্জন্ম শুরু করে তাতে ইমিউন সিস্টেমের পুরনো কোষ গুলিও প্রতিস্থাপন হয়। এর ফলে একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম গড়ে ওঠে। 

NB: তবে মনে রাখবেন খুব বেশিদিন উপবাস থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এর অভাবে আপনার রক্তকে আরো অম্লীয় করে তুলবে এবং এটি খারাপ শ্বাস, ক্লান্তি, এবং অন্যান্য রোগের কারণ হতে পারে, যেমন গাস্ট্রিক, অম্ল ইত্যাদি।
এই ওয়েবসাইটটিতে  জানতে পারবেন
উপবাস,
উপবাস থাকার উপকারিতা,
উপবাস কি,
উপবাসের উপকারিতা,
উপবাস পালনের নিয়ম,
উপবাস থাকার নীয়ম,
রোজা বা উপবাস,
উপবাস থাকার সঠিক নিয়ম,
উপবাস থাকা আর না খেয়ে থাকার মাঝে পার্থক্য,
একাদশী খাবার,
রোজা রাখার উপকার,
কিটো নয় মূল উপকার পাবেন রোজা বা উপবাস করে কোষ সুস্হ হলে আপনি ভালো থাকবেন,
উপবাস অর্থ,উপোস থাকার উপকারিতা,
কিটো নয় মূল উপকার পাবেন রোজা,
উপবাস অর্থ কি,
উপবাস করার উপকারিতা,
উপবাস প্রার্থনার উপকারিতা।,
কিভাবে উপবাস থাকবেন,
উপবাস একাদশীর উপবাস,

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>