বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম্ম পদ্ধতি

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম্ম পদ্ধতি

শ্রীগুরু সঙ্ঘ কর্তৃক প্রকাশিত

নিত্যকর্ম্ম কাহাকে বলে ?

💅যাহা অবশ্য করণীয়, না করিলে প্রত্যবায় হয়, তাহাই নিত্যকর্ম্ম।

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম্ম পদ্ধতি

প্রাতঃকৃত্য

মল-মূত্র ত্যাগ, দন্তধাবন, স্নান ও প্রাতঃসন্ধ্যা – এই চতুৰ্ব্বিধ কর্ম্মকেই প্রাতঃকৃত্য বলে। প্রাতঃকৃত্য না করিয়া দেবকাৰ্য্য বা পিতৃকাৰ্য্য করিলে তাহা নিষ্ফল হয়।ব্রাহ্মমুহূর্ত্তে ( চারিদন্ড রাত্রি থাকিতে ) প্রত্যেকেরই শয্যাত্যাগ করা উচিত । সূর্য্যোদয়ের পূর্ব্ববর্ত্তী ১ঘন্টা ৩৬ মিনিটকাল সময়কে ব্রাহ্মমুহূর্ত বলে। এই সময়ে সকলেরই নিদ্রা ত্যাগ করিয়া ইষ্ট-স্মরণ করা কর্ত্তব্য। নিদ্রাভঙ্গ হওয়ামাত্র নিম্নলিখিত মন্ত্রে শ্রীগুরু-স্মরণ করিবে ও শ্রীগুরুচরণে প্রণত হইবে।প্রাতঃ শিরসি শুক্লাজে দ্বিনেত্রং দ্বিভুজং গুরুম্ বরাভয়করং শান্তং স্মরেৎ তন্নাম পূর্ব্বকম্।। 'শিরস্থিত সহস্রদলকমলে শ্রীগুরু উপবিষ্ট আছেন। পূর্ণশশধরসম শুক্লবর্ণ গুরুদেব। তাঁহার দ্বিনয়ন ও দ্বিহস্ত। তিনি শুক্লবসনধারী। বর ও অভয়দাতা প্রশান্ত মূর্ত্তি গুরুদেবকে প্রভাতে ধ্যান করিবে ও তাঁহার নাম স্মরণ করিবে।

“নমোহদ্য গুরবে তস্মৈ ইষ্টদেব স্বরূপিনে ৷ 

যস্য বাক্যামৃতং হন্তি বিষং সংসারসংজ্ঞকম্।।”


এই মন্ত্রে শ্রীগুরুচরণে প্রণাম করিয়া, নিম্নলিখিত মন্ত্রে বিষ্ণুস্মরণ করিবে ও তাঁহার শরণাগত হইবে।


“লোকেশ চৈতন্যময়াধিদেব, শ্রীকান্ত বিষ্ণো ভবদাজ্ঞয়ৈব। প্রাতঃ সমুখায় তব প্রিয়ার্থং, সংসারযাত্রা-মনুবর্ত্তয়িয্যে।।” “জানামি ধৰ্ম্মং নচমে প্রবৃত্তিঃ,জানাম্যধর্ম্মং নচমে নিবৃত্তিঃ। ত্বয়া হৃষীকেশ হৃদিস্থিতেন যথা নিযুক্তোঽস্মি তথা করোমি।

তৎপর “ প্রিয়দত্তায়ৈ ভূবে নমঃ ” – এই বলিয়া ভূমিতে প্রণাম করিবে এবং ভূতলে দক্ষিণ পদ (স্ত্রীলোক হইলে বাম পদ ) অর্পণ করিয়া শয্যাত্যাগ করিবে। প্রাতঃকালে উঠিয়া প্রথমে তুলসীদর্শন ও প্রণাম করিবে এবং পরে সূর্য্যদেবকে প্রণাম করিবে।


শৌচক্রিয়াঃ 

শয্যাত্যাগ করিয়া “ওঁ নমো জল নারায়ণায়” এই মন্ত্রে জলনারায়ণকে প্রণাম করিবে এবং চোখে-মুখে একটু জল দিয়া শৌচে গমন করিবে। মলমূত্র ত্যাগের সময় যজ্ঞসূত্র ( পইতা ) দক্ষিণ কর্ণে রাখিতে হয়। মূত্র ত্যাগকালেও কাছা খোলা ও জলশৌচ করা উচিত। জলপাত্র হস্তে ধারণ করিয়া মলমূত্র ত্যাগ করা উচিত নয়। পথে, ভষ্মে, গোষ্ঠে, হলকৃষ্ট ক্ষেত্রে, জলে, চিতায়, পৰ্ব্বতে, ভগ্ন দেবালয়ে, উইঢিপিতে, গর্ভে এবং দাঁড়াইয়া ও চলিতে চলিতে প্রস্রাব করা উচিত নয়। মলমূত্র ত্যাগকালে কথা বলিতে নাই। উত্তর বা দক্ষিণমুখ হইয়া মলমূত্র ত্যাগ করিতে হয়। কখনই পূৰ্ব্বমুখ হইয়া মলমূত্র ত্যাগ করিতে নাই। মলমূত্র পরিত্যাগ করিয়া সর্ব্বাগ্রে জলশৌচ এবং তৎপর মৃত্তিকাশৌচ বিধেয়। শৌচান্তে শুদ্ধজলে হস্ত- পদ ধৌত করিয়া বস্ত্র পরিবর্ত্তন করিবে ।


নিষেধেঽপি কুর্যাৎ

তীর্থে তিথিবিশেষে চ গঙ্গায়াং পিতৃপক্ষকে । 

নিষিদ্ধেহপি দিনে কুৰ্য্যাৎ তর্পণং তিলমিশ্রিতম্।। 

দেবতৰ্পণ, মনুষ্যতর্পণ ও ঋষিতর্পণে তিলের ব্যবহার করিবে না; যবের ব্যবহার করিতে পারা যায়। 

কালোশৌচে কেবল প্রেতেরই তৰ্পণ করিতে হয়; আর কাহারও নহে।


তীর্থ আবাহন

প্রথমতঃ দুইবার আচমন করিয়া প্রাচীনাবীতি (যজ্ঞোপবীত দক্ষিণ স্কন্ধে স্থাপন করিয়া) ও দক্ষিণাস্য হইয়া করজোড়ে নিম্নলিখিত মন্ত্রে তীর্থ আবাহন করিবে। যথা –

ওঁ কুরুক্ষেত্র-গয়া-গঙ্গা-প্রভাস-পুষ্করাণি চ।

পুণ্যানেতানি তীর্থানি তর্পণকালে ভবন্তিহ।। তৎপরে উপবীতি ( যজ্ঞোপবীত বাম স্কন্ধে স্থাপন করিয়া) হইয়া


দেবতৰ্পণ

পূৰ্ব্বমুখে “ ওঁ দেবাঃ আগচ্ছন্তু ” এই বাক্যে দেবগণকে আবাহন করিবে। পরে নিম্নলিখিত মন্ত্রে প্রত্যেককে দেবতীর্থ (সমস্ত অঙ্গুলির অগ্রভাগ ) দ্বারা এক এক অঞ্জলি জল দিবে। (ওঁ) ব্রহ্মাঃ তৃপ্যতাং, (ওঁ) বিষ্ণুস্তূপ্যতাং, (ওঁ) রুদ্রস্তূপ্যতাং, (ওঁ) প্রজাপতিস্তূপ্যতাং, (“তৃপ্যতাং ” স্থলে ঋবেদীগণ ও শূদ্রগণ “তৃপ্যতু” বলিবেন) ওঁ শ্রীগুরুপ্যতাং । প্রণামঃ- ‘ব্রহ্মানন্দ......’ইত্যাদি। 

গুরুতর্পণঃ— 

যক্ষ-রক্ষ-গন্ধর্ব তর্পণ তৎপরে নিম্নলিখিত মন্ত্রে দেবতীর্থদ্বারা এক অঞ্জলি জল দিবে। 

(ওঁ) দেবা যক্ষাস্তথা নাগা গন্ধর্ব্বাপ্সরসোঽসুরাঃ। 

ক্রূরাঃ সম্পাঃ সুপর্ণাশ্চ তরবো জিহ্মগাঃ খগাঃ। 

বিদ্যাধরা জলাধারা-স্তথৈবাকাশগামিনঃ। 

নিরাহারাশ্চ যে জীবাঃ পাপে ধর্ম্মে রতাশ্চ যে। তেষা-মাপ্যায়নায়ৈতদ্দীয়তে সলিলং ময়া।।


মনুষ্য তর্পণ

তদনন্তর নিবীতি (যজ্ঞসূত্র মাল্যবৎ গলদেশে ধারণপূর্বক) হইয়া উত্তর মুখে (সামবেদীগণ পশ্চিম মুখে) নিম্নলিখিত মন্ত্রে কায়তীর্থ (কনিষ্ঠা ও অনামিকার অঙ্গুলির মূল প্রদেশ) দ্বারা ক্রোড়াভিমুখে দুই অঞ্জলি জল দিবে।

(ওঁ) সনকশ্চ সনন্দশ্চ তৃতীয়শ্চ সনাতনঃ। কপিলশ্চাসুরিশ্চৈব বোটুঃ পঞ্চশিখস্তথা।।

সৰ্ব্বে তে তৃপ্তিমায়ান্তু মদ্দত্তেনাম্বুনা সদা।। 

অনন্তর পূর্ব্বাস্য হইয়া উপবীতি অবস্থায় নিম্নলিখিত মন্ত্রে প্রত্যেককে


ঋষি তৰ্পণ

দেবতীর্থ দ্বারা এক এক অঞ্জলি জল দিবে। “(ওঁ) মরীচিস্তূপ্যতাং, (ওঁ) অত্রিস্তূপ্যতাং, (ওঁ) অঙ্গিরাস্তূপ্যতা,(ওঁ) পুলস্ত্যস্তূপ্যতাং, (ওঁ) পুলহস্তূপ্যতাং, (ওঁ) ক্রতুপ্যতাং, (ওঁ) প্রচেতাস্তূপ্যতাং, (ওঁ) বশিষ্ঠস্তূপ্যতাং, (ওঁ) ভৃগুস্তূপ্যতাং,(ওঁ) নারদস্তূপ্যতাং ।”(ঋগ্বেদীয়গণ ও শূদ্রগণ “ তৃপ্যতাং ” স্থলে “ তৃপ্যতু” বলিবে) দিব্য-পিতৃতর্পণ)

অনন্তর দক্ষিণাস্যে প্রাচীনাবীতি হইয়া নিম্নলিখিত মন্ত্রে পিতৃতীর্থ (অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনীর মূলদেশ) দ্বারা প্রত্যেককে এক এক অঞ্জলি সতিল জল দিবে।(ওঁ) অগিধাত্তাঃ পিতরস্তূপ্যন্তা-মেতৎ সতিলোদকং* তেভ্যঃ (স্বধা)।(ওঁ) সৌম্যাঃ পিতরস্তূপ্যন্তা-মেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ (স্বধা)। (ওঁ) হবিষ্মন্তঃ পিতরস্তূপ্যন্তা-মেতৎ সতিলোদকং তেভ্যঃ (স্বধা)।* গঙ্গাজল হইলে 'সতিল গঙ্গোদকং ও বলিতে হইবে। অন্যতীর্থের জল হইলে কেবল সেই তীর্থের নামের সহিত ‘উদকং' যোগ করিয়া বলিতে হইবে। (যথা ব্রহ্মপুত্রোদকং যমুনোদকং ইত্যাদি)। তিলের অভাবে কেবল 'উদকং' বলিতে হইবে।

এটি হলো সঠিক ও সর্বোত্তম  বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম্ম পদ্ধতি।

এই বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম্ম পদ্ধতি বইটি পিডিএফ ডাউনলোড করতে নিচের লিঙ্ক থেকে ডাউনলোড করতে হবে 👇

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম্ম পদ্ধতি PDF⬇️

#tag;

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম পদ্ধতি

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম পদ্ধতি pdf

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম পদ্ধতি পিডিএফ

বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম পদ্ধতি pdf download

নিত্যকর্ম পদ্ধতি

বৃহৎ বিশুদ্ধ নিত্যকর্ম পদ্ধতি

নিত্যকর্ম পদ্ধতি বই

নিত্যকর্ম পদ্ধতি pdf

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url