দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয়

দুর্গাপূজায় কোন কাজগুলো করলে পাপ হবে আর কি করলে পুর্ণ হবে জেনে রাখুন। এ বছরের নতুন পুঁজোয় সনাতনীর সঠিক পন্থায় ধর্মীয় পুস্তক ও জ্ঞান অনুসারে মা দুর্গার আশির্বাদ নিয়ে আসুন আমরা আজ কিছু করে দেখাই। দেবীর পুজোর স্থান এখন বিনোদন আর বিধর্মীদের বিতর্কের স্থান হয়ে গেছে। তাই এখুনি সময় দুর্গাপূজায় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয় নিয়ে ভাববার।


★NB★দয়াকরে নিচের পোষ্টটি পড়বেন ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিবেন। যাতে সনাতনীরা আবার মাথা উঁচু করে সবসময় সেরাই থাকতে পারে।

১# পূঁজা কমিটির সাথে আলোচনা করবেন যেন মায়ের প্রতিমা সর্বাঙ্গীণ সুন্দর তথা আপাদমস্তক আবৃত থাকে,কোন রুপ অর্ধনগ্ন বা বলিউডি কায়দায় নায়িকা/মডেলদের মত অশ্লীল পোশাক যেন না থাকে। মানুষের মুখ/বুকের ন্যয় না হওয়াই উত্তম। যেমন চোখগুলো অনেক বড় বড় ও লম্বা হওয়া উচিত(ছবিতে লক্ষনীয়)। মায়ের প্রতিমা যেন মাতৃস্বরূপ হয়, কোনো তন্বী তরুণীর নয়।

দুর্গাপূজায় করনীয় ও বর্জনীয়
আসন্ন দুর্গাপূজায় করনীয় ও বর্জনীয় 
২# উদ্ভট , অশালীন নাচ পরিহার করুন, বরং আরতি ধুনুচি নাচ বা সামাজিক নৃত্য করবেন।আর  যদি কারো ছেলে মেয়ে,বউ,ইত্যাদিকে নাচাতেই চান তবে মন্দির থেকে ১০০ গজ দুরে স্টেজ করে নাচাতে পারেন। যেকোন পুজায় সন্ধ্যা আরতির নিদিষ্ট কিছু নিয়ম কানুন আছে। যেমন দেবী মায়ের পায়ের দিখে চোখ রেখে পুজোর উপকরন যথা ধুপ দ্বিপ প্রভৃতি হাতে নিয়ে করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনার পর্চাত পার্শ্ব যেন মায়ের দিকে না যায় আর নজর যেন মায়ের চরনেই বিদ্যমান থাকে। তাহলে চিন্তা করেন আজকাল আমরা মায়ের আরতিতে কি নাচটাই না নাচতেছি!!

৩# আপনি অন্য সময় যতই আধুনিক পোশাক-আশাক পরিধান করেন না কেন,পুজোর সময় স্বাভাবিক পরিবেশ সম্মত সাবলীল পোশাক ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। মা- বোনদের প্রতি অনুরোধ মন্দিরে  / মন্ডপে পুজায় আসা যাবার সময় মাথায় কাপড় দিবেন।

৪# সমাজের হিংসার কারনে পাড়া মহল্লায় বা জনে জনে মন্দির করে পুজো করার মনমানসিকতা খুবই জঘন্য। এ-সব এড়িয়ে চলুন।গরীব প্রতিবেশীর উপর চাঁদার বোঝা ফেলবেন না। পুঁজায় যদি অতিরিক্ত চাঁদা ওঠে সেটা যেন আশেপাশের দরিদ্রদের সাহায্যে ব্যবহার করা হয়।

৫# পূঁজোর দিনগুলোতে কোন ভাবেই অঞ্জলি মিস্ করবেন না, নিজে যাবেন অন্যকে নিয়ে যাবেন।পাশের বাড়ির মানুষটা যদি আপনার মন্দিরের সদস্য নাও হয় তাকেও সঙ্গে নেবার চেষ্টা করবেন। তার সাথে সাথে ব্রাহ্মন যে সময়গুলোতে মায়ের পুজোতে বসবেন সেই সময়গুলোতে মন্দিরে থাকার চেষ্টা করবেন। এককথায় পূজো দেখতে আত্মীয়,স্বজন,পাড়াপ্রতিবেশি,ফ্রেন্ডদের সাথে দলবদ্ধ ভাবে যাবেন, নিজে যাবেন অন্যকে নিয়ে যাবেন।

৬# প্রতিমা তৈরি ও পূঁজোর দিনগুলোতে রাত জেগে পাহারা দিবেন। নিজনিজ দ্বায়িত্ব গুরুত্ব দিয়ে পালন করবেন যেন কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে। 

৭# পূঁজো শেষে প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে যাবার সময় অশ্লীলগান/ উদ্ভট নাচ পুরোপুরি বন্ধ করবেন, ঢাকঢোল কীর্তন এর ব্যবহার করবেন,, সবাই সংঘবদ্ধ থাকুন। DJ , অশ্লীল গান,রিমিক্স,নোংরা ভাষার গান, উগ্র গান ইত্যাদি এসবের ব্যবহার কে না বলুন। মায়ের গান,ভজন গীতি,গীতাপাঠ, অনেক ভাষারই হিন্দু ধর্মীয় গান রয়েছে সেগুলো বাজাতে পারেন।।

৮#পূঁজো শেষে আশেপাশের হিন্দুদের নিয়ে GET TOGETHER করতে পারেন। কাছের ও দুরের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যাওয়া আসা করতে হবে। এতে একে অপরের কাছাকাছি আসতে পারবেন। 

৯# আমাদের মা বোনদের দিকে বিশেষ দায়িত্ব নেবেন, লক্ষ্য রাখবেন কেউ যেন আমাদের মা বোনদের সাথে খারাপ আচরনের সুজোগ না পায়।

১০# পূঁজোর দিনগুলোতে মাইক ব্যবহার সীমিত রাখবেন মুলত সেইসব জায়গায় যেখানে আমরা সংখ্যায় কম, বিশেষ সময়ে মাইক বাজাবেন না। উচ্চ শব্দের কারনে কারো যেন বিরক্তির কারন না হন সেদিকে খেয়াল রাখুন।

১১#মদ্দপান,গাঁজা তথা নেজা জাতীয় সকল বিষয় এড়িয়ে চলুন। এগুলো গ্রহনে শরীর অপবিত্র হয়(পুজা হবে না) ফলে আপনার একবছরের প্রতীক্ষার ফল বৃথা হতে পারে।

১২#থিমপুঁজো/ডেকোরেশন বা ঐ মন্দিরের চেয়ে আমাদেরটা ভালো করতে হবে(হিংসা হলো পাপ) এরখম মনমানসিকতা পরিহার করে সেই টাকা দিয়ে জীব জগতের সেবা করতে চেষ্টা করবেন তবেই মায়ের সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবেন। কারণ("জীবে প্রেম করে যে-ই জন, সে-ই জন সেবিছে ঈশ্বর ")

পরিশেষঃ আমার লেখাটা দেখে মাথাভারী মনে হলেও এগুলো করা যেতেই পারে, কতটা হবে আর কতটা হবেনা এসব চিন্তা না করে আমরা চেষ্টা করতে পারি।

আমার ব্যাক্তিগত মন্তব্য দিয়ে শেষ করবো_এখন পুজোয় অন্য ধর্মীয় লোকজনের বিশৃঙ্খলা রক্ষায় কমিটির লোকজন , পুলিশ, আনছার ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। কেন প্রয়োজন আপনি জানেন কি? দিনের বেলা তো এত সিকিউরিটি প্রয়োজন হয় না যখন আমরা পুস্পাঞ্জলি দেই! কারণ সন্ধ্যার পর থেকে মন্দির চত্বর হয়ে যায় রঙ্গমঞ্চ।("সিন্দুরমতির সার্কাস" শোতে আমাদের মা বোন নাচাই আর মানুষ তা উপভোগ করে শিষ দেয়) এগুলো বন্ধ করলে কোন কিছুর প্রয়োজন হতো না।।
সনাতন ধর্মীয় আপনি আমি, যেদিন থেকে সঠিক ধর্মীয় জ্ঞান আহরন করা শুরু করবো ও সেই জ্ঞান আবার শিশুদের মাঝে প্রদান করে দিব সেদিন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চির প্রাচীণ সনাতনধর্মের জয় হবেই। আর চিরতরে হারিয়ে যাবে অন্য ধর্মগুলো।

জয় মা দুর্গার জয়🙏

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>