ভাগ্য বা নিয়তি কি

ভাগ্য নিজের জন্য তৈরি করেন। নিয়তি তখনি হয় যখন আপনি নিজের ভাগ্য তৈরি করতে ব্যর্থ হন।

ভাগ্য কি?

ভাগ্য হল এমন একটি ঘটনা এবং বিশ্বাস যা উল্লেখযোগ্যভাবে ইতিবাচক, নেতিবাচক বা অসম্ভাব্য ঘটনার অভিজ্ঞতাকে সংজ্ঞায়িত করে। প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা হল যে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক ঘটনাগুলি যে কোনও সময় ঘটতে পারে, এলোমেলো এবং নন-এলোমেলো প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম প্রক্রিয়াগুলির কারণে এবং এমনকি অসম্ভাব্য ঘটনাগুলি এলোমেলোভাবে ঘটতে পারে। এই দৃষ্টিতে, "ভাগ্যবান" বা "দুর্ভাগ্য" উপাধিটি একটি বর্ণনামূলক লেবেল যা একটি ঘটনার ইতিবাচকতা, নেতিবাচকতা বা অসম্ভাব্যতাকে বোঝায়।ভাগ্যের অলৌকিক ব্যাখ্যাগুলি এটিকে একটি ব্যক্তি বা বস্তুর একটি বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচনা করে বা একজন ব্যক্তির প্রতি দেবতার অনুকূল বা প্রতিকূল দৃষ্টিভঙ্গির ফলাফল হিসাবে বিবেচনা করে। এই ব্যাখ্যাগুলি প্রায়শই নির্ধারণ করে যে কীভাবে সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য লাভ করা যায়, যেমন একটি সৌভাগ্যের আকর্ষণ বহন করে বা দেবতাকে বলিদান বা প্রার্থনা করে। ব্যাখ্যার উপর নির্ভর করে কাউকে "জন্মে ভাগ্যবান" বলার বিভিন্ন অর্থ হতে পারে: এর সহজ অর্থ হতে পারে যে তারা একটি ভাল পরিবার বা পরিস্থিতিতে জন্মগ্রহণ করেছে; অথবা তারা অভ্যাসগতভাবে অসম্ভব ইতিবাচক ঘটনা অনুভব করে, কিছু অন্তর্নিহিত সম্পত্তির কারণে, বা একেশ্বরবাদী বা বহুঈশ্বরবাদী ধর্মে একজন দেবতা বা দেবীর আজীবন অনুগ্রহের কারণে।অনেক কুসংস্কার ভাগ্যের সাথে সম্পর্কিত, যদিও এগুলি প্রায়শই একটি প্রদত্ত সংস্কৃতি বা সম্পর্কিত সংস্কৃতির সেটের জন্য নির্দিষ্ট, এবং কখনও কখনও পরস্পরবিরোধী।

নিয়তি কি?

ভাগ‍্যের চেয়ে অনেক বেশি ইতিবাচক অভিব‍্যক্তি রয়েছে। এটি পূর্বনির্ধারিত ইভেন্ট গুলির ধারণাকেও বোঝায়,নিয়তি এমন একটি বিষয় যা আমরা সক্রিয় ভাবে আকারে এবং পরিবর্তন করতে পারি। ভাগ‍্যের মতো নয়।

ভাগ্য বা নিয়তি 

কর্মই এবং আপনার ইচ্ছাই হলো আপনার ভাগ্য বা নিয়তি !কৃষ্ণভক্তি উন্মুখতাই সৌভাগ্য, আর কৃষ্ণভক্তি বিমুগ্ধতাই দূর্ভাগ্য !মানুষ্যগন তাদের নিজের ইচ্ছা বা আকাঙ্খা  অনুযায়ী সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য তৈরি করতে পারে !প্রজাপতি শ্রীব্রহ্মা অন্যান্য দেবতাদের সঙ্গে জীবনের সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের বিষয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে পৃথিবীর মানুষের উপর একটু আলােকপাত করেছেন !

শ্রীব্রহ্মা বলছেন—“মানুষেরা কী দূর্ভাগা!
তারা ভগবানের ধাম সম্বন্ধে আলােচনা করে না !তারা ভগবানের কথা শুনতে চায় না ! মানুষেরা এতই হতভাগা/হতভাগ্য যে, যে সমস্ত বিষয় শোনা উচিত নয়, যে সমস্ত বিষয় শুনলে তাদের বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়, তারা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে, সেই সমস্ত অনর্থক বিষয় সম্বন্ধই তারা শ্রবণ করে !এরূপ দুঃখজনক ব্যাপার আর কাকে বলব ? যাহারা জগৎ সম্বন্ধে আলােচনায় ব্যস্ত কিন্তু  বৈকুণ্ঠ বিষয়ের জড় অর্থাৎ তারা পৃথিবী নিয়েই ব্যাস্ত , তারা যে তাদের অস্তিত্বের গভীরতম অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে !" (ভাঃ ৩/১৫/২০ প্রঃ)!“হে প্রিয় দেবতাগণ! হো মনুষ্য প্রজাতি তোমরা শােনাে,পৃথিবীতে মনুষ্য জয় লাভ করা কতই না মহত্বপূর্ণ ব্যাপার !সেখানে অতি অল্পকালে মধ্যেই কৃষ্ণভক্তি চর্চা করে মানুষ অতি দুস্তর জন্মমৃত্যুর ভবসমুদ্র অতিক্রম করে ভগবৎ লােকে পৌছতে পারে !আহা! মনুষ্য জন্ম কতই না সৌভাগ্যের !


তাই আমারও বাসনা হয়েছে পৃথিবীতে গিয়ে মানবলােকে জন্মগ্রহণ করে শ্রীহরির আরাধনা করব! কিন্তু মায়াগ্রস্ত গণ্ডমূর্খ মুষ্যগন  ধরাধামে  কৃষ্ণভজন করছে না সে-তাে একটা হতভাগ্য মানুষদের মধ্যে অন্যতম বটে  !" (ভাঃ ৩/১৫/২৪ প্রঃ)!যখন কুরুক্ষেত্রে মহাযুদ্ধে দুই সেনাদলের মধ্যে কার ভাগ্যে জয় আর কার ভাগ্যে পরাজয় হবে, এই প্রশ্ন নিয়ে উদ্বিগ্ন অন্ধরাজা ধৃতরাষ্ট্র হস্তিনাপুরে বসে দিব্যদৃষ্টি সম্পন্ন সঞ্চয়ের মুখ থেকে জানতে চাইলেন,তখন তিনি(সন্জয) বলতে লাগলেন,হে রাজ যে পক্ষে শ্রীকৃষ্ণ রয়েছে,শ্রীকৃষ্ণের কথা মতােই অর্জুন যুদ্ধ করছেন, সেই দলেই যশ, ধর্ম, জয় ও সৌভাগ্য লক্ষ্মী বিরাজ করছে !”যে যেমন কর্ম করবে তাকে সেরুপ কর্ম ফল ভোগ করতেই হবে! 

এটাই নিয়তির খেলা!এই জন্মে কাউকে অন্যায়ভাবে নিপীড়ন, হত্যা, কাঁনা, খোঁড়া করে দিলে পরবর্তীকালে হত্যাকারীকেও নিপীড়িত, হত, কাণা, খোঁড়া হতে হবে !নির্বিচারে পায়ের তলায় পিঁপড়েগুলােকে পিষ্ট করে ফেললে পিষ্টকারীকেও গাড়ি ঘােড়া বা অন্য কোনও ভাবেই পৃষ্ট হতে হবে !এই সমস্ত কর্ম ও কর্মফলের হিসাব যাকে সাধারণ লােক 'অদৃষ্ট লিখন' বা ‘নিয়তি বলে থাকেন !,এ সবই লিপিবদ্ধ হয়ে আছে নরক নামক গ্রহের সংযমনী নামক যমপুরীতে কালের যাবতীয় পাপ-পূর্ণের হিসাব রক্ষক শ্ৰীচিত্রগুপ্ত মহাশয়ের খাতায় !আমাদের এই জন্মের যে দেহ, পিতামাতা, ভাই বােন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব, রাষ্ট্র সমাজ, পরিবেশ পরিস্থিতি, সুখ দুঃখ লাভ করেছি—এ সবই আমাদের পূর্ববর্তী জন্মের কর্মফলস্বরুপ ! আবার, এই জন্মের কর্মকীর্তির উপর নির্ভর করছে পরজন্মে আমরা কি লাভ করব !এখনকার কর্মই আপনার পরবর্তী জন্মে ভাগ্য বা নিয়তি রুপে ফিরে আসবে!

পরিশেষে উল্লেখ্য এই যে, ভাগ্যলক্ষ্মীর কৃপায় দুর্ভাগ্য বিনষ্ট হয় !সৌভাগ্য লক্ষ্মী ভগবানের অন্তরঙ্গা শক্তি ! ভগবৎ-সেবিকা !তাঁহার কৃপাময় পেতে হলে আমাদের ভগবানের সেবায় নিযুক্ত থাকতে হবে ! ভগবদ নির্দেশমতাে জীবন পরিচালিত করতে হবে!তাঁহার শরণাপন্ন হলে ভক্তিযােগের প্রভাবে আমাদের দুর্ভাগ্য নষ্ট হয়ে যায়, সেই কথাও ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উল্লেখ করেছেন !

ওয়েবসাইটটিতে জানতে পারবেন 

ভাগ্য কি পূর্ব নির্ধারিত,

তকদির বা ভাগ্য,ভাগ্য,

নিয়তি বা ভাগ্য কি,

ভাগ্য কি সত্যি,

নিয়তি কি,

কিভাবে ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়,

নিয়তি বা ভাগ্য কিভাবে ঘটে?,

ভাগ্য কি?,

মানষের ভাগ্য কি পরিবর্তন হয়,

নিয়তি বা ভাগ্য

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>