পাপ আচরণ কি ও পাপ আচরণ থেকে মুক্ত হবেন কিভাবে

পাপাচরণ থেকে মুক্তি 

মহান সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর যা করেন সবার মঙ্গলের জন্যই করেন।তাই আমাদের মনে রাখতে হবে মঙ্গলময় ভগবান অমঙ্গলসূচক কিছু করতে অনুমােদন করেন না । পরমাত্মারূপে সকলের হৃদয়ে তিনি বিরাজমান ।

 তিনি মন্দবৃত্তি থেকে জীবাত্মাকে নিবৃত্ত করেন । তাই দেখা যায় সবচেয়ে মন্দ লােকও বুঝতে পারে তার কর্মটা মন্দ , তবুও সে অহংকারবশত এমন সব কর্ম করে যা পরমাত্মার অনুমােদন সাপেক্ষ নয় । যেমন , একজন পাকা বিড়িখােরও জানে বিড়ি খাওয়া জীবনের পক্ষে ক্ষতিকর , আয়ুহানিকর , তবুও সে তা ছাড়তে চায় না । সে দিব্যি বিড়ি খেয়েই চলেছে । এর জন্য সমস্ত দুর্ভোগ জীবকেই ভুগতে হয় , পরমাত্মাকে নয় । 

পাপাচরণ
পাপাচরণ 

গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন— “মচ্চিত্তঃ সর্বদুর্গাণি মৎপ্ৰসাদাত্তরিষ্যসি । অথ চেত্বমহষ্কারান্ন শ্রোষ্যসি বিনঙক্ষ্যসি“॥ অর্থাৎ আমার প্রতি যদি মন সমর্পণ করে থাকো , তবে আমার প্রসাদে তুমি সমস্ত দুর্গতি থেকে রক্ষা পাবে । অন্যথায় , অহংকারবশে যদি আমার নির্দেশ না শােনাে , তবে তুমি বিনষ্ট হবে” (গীতা:১৮/৫৮) শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার সমস্ত গুঢ় কথা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উল্লেখ করবার পর অর্জুনকে শেষে বললেন, “ আমি তাে তােমাকে ভাল - মন্দ সব কিছুই বলেছি , তুমি তা ভালভাবে বিচার কর , তারপর তােমার যা ইচ্ছা হয় তাই কর । ” 

( গীতা ১৮/৬৩ ) ভগবান জীবকে স্বাতন্ত্র দিয়েছেন যাতে সে ভগবানকে নিজের মনের মতাে করে ভালবাসতে পারে । জীবকে বাধ্য করে ভগবান ভালবাসা আদায় করেন না । সেই জন্য প্রেমময় ভগবান জীবকে স্বতন্ত্র ইচ্ছা দান করেছেন । জীব যদি ভগবানকে ভালবাসতে না চায় , তাতে আত্মারাম ভগবানের কোনও দুঃখ নেই । কিন্তু স্বাতন্ত্র বুদ্ধিসম্পন্ন জীব পরমনিয়ন্তা পরমেশ্বর ভগবানের অনুকূলে কিংবা প্রতিকূলে যেভাবে চলুক না কেন সমস্ত লাভ অথবা ক্ষতি সেই জীবেরই , ভগবানের নয় । # অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করলেন , “ আমরা তাে ভাল হতে চাই , কোন পাপ কর্ম করতে কেউই চাই না , তবুও কেন পাপকর্ম করে বসি , কেন আমরা খারাপ হয়ে যাই ? ” #

 উত্তরে শ্রীকৃষ্ণ বললেন , “ এই জড়জগতে বদ্ধ জীব জড়া প্রকৃতির গুণ দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে কর্ম করে । আর জড় কর্মই দুঃখপ্রদ । যদি এই জড় গুণের উর্ধ্বে কেউ যেতে পারে , তবে সে নির্মল আনন্দময় জীবনে আসীন হতে পারে । সেইজন্য ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণ বললেন, “সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য মাম্ এক শরণং ব্রজ । অহং ত্বং সর্বাপেভ্যো মােক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ”॥ “অর্থাৎ জাগতিক তথাকথিত বহু রকমের ধর্ম আগে পরিত্যাগ কর । একান্তভাবে আমার শরণাগত হও । তা হলে অবশ্যই তােমার কোনও পাপ থাকবে না” ।(গীতা:১৮/৬৬) # গীতার আলোচনা থেকে বােঝা যায় যে , ভগবান একমাত্র “ কৃষ্ণভাবনাময় কর্ম ” করতেই নির্দেশ দিচ্ছেন । # ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বাদ দিয়ে আমরা যেকোনও ভাল কর্মও করি না কেন , তাই পরিণামে পুন্য হবে কিন্তু কারো পারমার্থিক উন্নতি হবে না । 

তাই পাপ পুন্য সমস্ত কর্ম জন্ম - মৃত্যু - জরা - ব্যাধি পূর্ণ জড়সংসারে দুঃখময় বন্ধনের কারণ। # আমাদের সকল কর্ম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অনুকূলেই গৃহীত হওয়া কর্তব্য । তা হলেই পাপ আচরন থেকে নিবৃত্ত হব ও ভগবৎ কৃপায় আমরা আনন্দময় জীবনে উন্নীত হতে পারব ।।হরেকৃষ্ণ।। জয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>