স্রষ্টা ও সৃষ্টি কি ধর্মের আলোকে আলোচনা

আমাদের এই পৃথিবী অতীব  সুন্দর । পৃথিবীতে রয়েছে অসংখ্য গাছ-পালা, জীব-জন্তু, পশু পাখি, কীট-পতঙ্গ। পৃথিবীতে রয়েছে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। পৃথিবীর কোথাও রয়েছে গভীর বন, কোথাও উঁচু পাহাড়-পর্বত, কোথাও নদ-নদী, কোথাও সাগর-মহাসাগর। কোথাও রয়েছে সমতলভূমি, আবার কোথাও ধু-ধু মরুভূমি। গাছে-গাছে ফুল-ফল, ডালে ডালে পাখি, আর পাখির কল-কাকলি। আমাদের মাথার উপরে রয়েছে সুনীল আকাশ। আকাশের কোনো সীমা নেই। আকাশে রয়েছে চন্দ্র-সূর্য, অনেক গ্রহ-উপগ্রহ। আরও রয়েছে অগণিত নক্ষত্র।বৈচিত্র্যময় আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ। 

ওপরে অনন্ত আকাশ। সেই আকাশে চন্দ্র-সূর্যসহ কত গ্রহ-উপগ্রহ রয়েছে, রয়েছে অগণিত জ্যোতিষ্ক।এই পৃথিবীও কত বৈচিত্র্যময়। কোথাও মৌন কঠিন পর্বতমালা, শিখরে তাদের শ্বেত-তুষারের সূর্যোজ্জ্বল মুকুট শোভা পায় আর তাদের বুক চিরে নৃত্যের ছন্দে নেমে আসে ঝর্ণাধারা। সেই ঝর্ণাধারা থেকেই সৃষ্ট হয়েছে নদ-নদীর স্রোতধারা। কলতান তুলে যা সুবিশাল সাগরে গিয়ে মেশে।নদীতীরে কোথাও শ্যামল প্রান্তর। কোথাও ধু ধু মরুভূমি। কোথাও গভীর অরণ্য। মাঝে মাঝে আছে লোকালয়। বনে প্রান্তরে বা লোকালয়ে কত রকমের বৃক্ষ-লতা। বৃক্ষে বৃক্ষে নানা বর্ণের পাখির কণ্ঠে নানা ছন্দের কাকলি।প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে যেমন বৈচিত্র্য রয়েছে, তেমনি এক গভীর। ঐক্যের পরিচয়ও পাওয়া যায় । 

স্রষ্টা ও সৃষ্টি কি
স্রষ্টা ও সৃষ্টি

ঋতুচক্রের আবর্তন, দিবা-রাত্রির পালাবদল.  গ্রহদের আপন কক্ষ পথে একই নিয়মে ঘুরে ঘুরে চলা- এর মধ্যে একটা গভীরঐক্য ও শৃঙ্খলা রয়েছে।এই যে অনন্ত বিস্ময়কর প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এবং বৈচিত্র্যের ঐক্য, এর মূলে রয়েছেন এক সুমহান স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক। তিনিই ঈশ্বর। তিনি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলেই সব কিছুর মধ্যে একটা শৃঙ্খলা বা ঐক্য রয়েছে। ঈশ্বরকে প্রকৃতি ও পরিবেশের মধ্যে উপলব্ধি করে তার বিভিন্ন সত্ত্বাকে প্রাচীনকাল থেকেই বন্দনা করা হচ্ছে। মোটকথা আমরা আমাদের চোখের সামনে প্রকৃতি ও পরিবেশের যে বিস্ময়কর রূপ প্রত্যক্ষ করি, তা ঈশ্বরেরই রূপ। জীব ও জগতের বৈচিত্র্য ঈশ্বরেরই বৈচিত্র্য। এ সকলের সেবা ও বন্দনার মধ্যে ঈশ্বরের আরাধনাই প্রকাশিত।


উল্লিখিত ধারণার মধ্যে এক মহান ধর্ম বিশ্বাস রয়েছে। সেই ধর্মের নাম সনাতন ধর্ম। ‘সনাতন’ শব্দের অর্থ চিরন্তন, চিরস্থায়ী, নিত্য। যা ছিল, আছে ও থাকবে- তা ই সনাতন ।এই ধর্ম আর্য মুনি-ঋষিদের সাধনালব্ধ সমন্বিত জ্ঞানের ফল। এটি কোন নির্দিষ্ট সময়ে কোন ব্যক্তি বিশেষের প্রত্যাদেশ পাওয়া বা প্রবর্তিত ধর্ম নয়। কালের অগ্রগতির সাথে সাথে যুগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এটি ক্রমশঃ বিকশিত হচ্ছে। তবে এর মৌলিক তত্ত্বের কোন পরিবর্তন হয় নি তাই এ ধর্মকে সনাতন ধর্ম বলা হয়। সনাতন ধর্মই ‘হিন্দুধর্ম’ নামে পরিচিত।


পৃথিবীর কোনো কিছুই হঠাৎ সৃষ্টি হয় নি। সবকিছুরই একজন স্রষ্টা বা সৃষ্টিকর্তা আছেন। যেমন কাঠমিস্ত্রি তৈরি করেন চেয়ার-টেবিল, রাজমিস্ত্রি তৈরি করেন। দালান-কোঠা। তেমনি চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, মানুষ, অন্যান্য জীব ও জগতের সকল কিছুর একজন স্রষ্টা বা সৃষ্টিকর্তা আছেন। এ স্রষ্টা বা সৃষ্টিকর্তার নাম কী?অনেক নাম তাঁর । কেউ তাঁকে বলে ঈশ্বর। গড বলে কেই।আল্লাহ  বলে কেউ। যেমনটি অনেকে  একই জলকে বলে পানি কেউ বলে ওয়াটার।

হিন্দুধর্মে সৃষ্টিকর্তাকে বলে ঈশ্বর। ভগবানও তাঁর একটি নাম। আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী এবং পৃথিবীর সবকিছুই ঈশ্বরের সৃষ্টি। কেবল পৃথিবীই নয়, পৃথিবী কিছু আছে তার স্রষ্টাও ঈশ্বর। মূলকথা সবকিছুর স্রষ্টাই ঈশ্বর। বাইরেও যা ঈশ্বর ও জীবের মধ্যে সম্পর্ক খুবই নিবিড়। এ সম্পর্ক হচ্ছে স্রষ্টা ও সৃষ্টির সম্পর্ক। ঈশ্বর স্রষ্টা, জীব তাঁর সৃষ্টি। ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং প্রতিপালন করছেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ ঈশ্বরের কাছে । তাই আমরা  ভক্তি করব ঈশ্বরের সন্তুষ্টির জন্য ।আমাদের থাকতে হবে গভীর বিশ্বাস ঈশ্বরের প্রতি তথা সৃষ্টিকর্তার প্রতি ।


ঈশ্বর জীবের অন্তরেও অবস্থান করেন। তাই সকল জীবকে আমরা ঈশ্বর বলে মনে করব এবং সকল জীবকে ভালোবাসব। ভালোবাসব ঈশ্বরের সকল সৃষ্টিকে। কারণ ঈশ্বরের সকল সৃষ্টিকে ভালোবাসা মানে ঈশ্বরকে ভালোবাসা। ঈশ্বর সন্তুষ্ট হবেন  সকল সৃষ্টিকে ভালোবাসলে এবং ঈশ্বর আমাদের মঙ্গল করবেন অবশ্যই।

সৃষ্টি পৃথিবী ও মানবজাতির উৎপত্তি সম্পর্কে তাদের তত্ত্বের বিপরীত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সৃষ্টির সমর্থক বলে যে, ঈশ্বর একমাত্র সৃষ্টিকর্তা এবং সবকিছুই মূলত বাইবেলের সন্ধান করতে পারেন। । সৃষ্টি তত্ত্বের সমর্থকেরা খ্রিস্টধর্মে সীমাবদ্ধ নয়। ইসলাম ও ইহুদীদের অনুসরণকারীরাও বিশ্বাস করে যে, পৃথিবী ও সমস্ত জীবন্ত মানুষই সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একা সৃষ্টি করেছেন। সৃজনশীল তত্ত্বটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় কারণ এটি বিশ্বাস এবং বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে। যদিও এটি প্রমাণিত হতে পারে না, ততক্ষণ কোনও উপায় নেই যে বিজ্ঞানীরা এটি সরাসরিভাবে অস্বীকার করতে পারে। এই তত্ত্ব জড়িত কোন প্রক্রিয়া আছে, এবং এটি অস্তিত্ব আসার সময় থেকে আজ সবকিছু হিসাবে হয়েছে যে বিশ্বাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। সৃজনশীলতা সৃজনশীলতা হচ্ছে পৃথিবীর উৎপত্তি একটি তত্ত্ব যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রকৃতিগতভাবে এবং চার্লস ডারউইন যোগ্যতম তত্ত্ব এবং বিবর্তনের তত্ত্ব হিসাবে প্রস্তাব করে। সৃষ্টি যখন আমাদের বলে যে সূর্য, চাঁদ, এবং তারা ছয় দিনের একাউন্টের দিনের 4 তারিখে ঈশ্বরের সৃষ্টি হয়েছিল, সৃষ্টিবাদ পৃথিবী, সূর্য এবং চাঁদের তুলনামূলক বয়সে বিশ্বাস করে। পৃথিবী সূর্য ও চন্দ্রের আগে সৃষ্টি করা হয় বলে বিশ্বাস করা হয়, কিন্তু সূর্য ছাড়া দিন ও রাতে না থাকায় এটি বোধগম্য বলে মনে হয় না।


 আমাদের কর্তব্য ভালোবাসা  ঈশ্বর ও তাঁর সকল সৃষ্টিকেই । এ নৈতিক শিক্ষাটি আমরা সব সময় মনে রাখব এবং সকল কাজে তা মেনে চলব তাই আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>