হরি নামের অর্থ ও হরি নামের মাহাত্ম্য


হরি শব্দের অর্থঃ
হরি বল।

হরি (সংস্কৃত: हरि) হিন্দু ঐতিহ্যে বিষ্ণুর একটি নাম। হরি মানে বেদে পরম পরম। এটি সেই ব্যক্তিকে বোঝায় যিনি
(১) অন্ধকার ও মায়া দূর করেন,
(২) তিনিই ঈশ্বর যিনি তাঁহার ভক্তদের সমস্ত দুঃখ দুর্দশা লাঘব করেন।
কীর্তনানুষ্টানে, জীবনকালে, মরণকালে কেন উচ্চারণ করা হয় ?-
হরি বলতে যিনি হরণ করেন ।
আমাদের জন্ম মৃত্যু, জড়া ব্যাধিময় মহাদুঃখ যিনি চিরতরে হরণ করেন পরম গতি দান করেন, তিনিই হরি।
'হরি বল' বা 'হরি বোল' কথাটিতে সবাইকে 'হরি' বলতে নির্দেশ দিয়েছেন ।
যখন লোক শবদাহ করতে শশ্মানে যায়,
তারা হরি বল রব করে, কারণ স্বরণীয় এইযে,
আমাদের সকলের এই প্রিয় জড় শরীরটি যে কোনও মুহুর্তে ছেড়ে দিতে হবে।
যদি এই জীবন সার্থক করতে হয় তাহলে হরি বল হরিনাম কীর্তন করা উচিত ।

হরি নামের অর্থ ও মাহাত্ম্য


একদিন দেবর্ষি নারদ মনে মনে ভাবলেন,আমি যে সবসময় হরি নাম কির্তন করি এই নাম করলে কি হয়?
কি এই নামের মাহাত্ম্য? তিনি বিশ্বব্রহ্মাণ্ড  সৃষ্টিকারী স্বয়ং  ব্রহ্মার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন হে  ব্রহ্মদেব,  মাহাত্ম্য কী এই হরি নামের ? কী হয় এই নাম করলে? ব্রহ্মা  বললেন আমি বলতে পারব না,বললেই কম বলা হবে আর কম বললেই পাপ হবে । আপনি দেবাদিদেব শিবের নিকট যান তিনি বলতে পারবেন তিনি সবসময় নাম করেন । তারপরে দেবাদিদেবের নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন নারদ মুনি হে দেবাদিদেব,কী এই হরি নামের মাহাত্ম্য ? কী হয় এই নাম করলে । দেবাদিদেব ও ওই কথা বললেন যে আমি বলতে পারব না বললেই কম বলা হবে আর কম বললেই পাপ হবে । আপনি নারায়ণনের কাছে যান তিনি বলতে পারবেন । নারদ মুনি তখন গেলেন নারায়ণের কাছে, নারদ মুনিকে দেখে নারায়ণ বললেন  , হে দেবর্ষি আপনি এত বিচলিত কেন? নারদ
মুনি বললেন হে প্রভু আমি একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছি
নারায়ণ জিজ্ঞেস করলেন কী প্রশ্ন? নারদ বললেন হরি নাম করলে কি হয় এবং এই নামের মাহাত্ম্য কী? নারায়ণ বললেন এই সামান্য প্রশ্ন আমি আপনাকে উত্তর দেব । নারদ মুনি বললেন হে প্রভু আপনি বলছেন সামান্য প্রশ্ন এই প্রশ্নের উত্তর মহাদেব এবং ব্রহ্মা দিতে পারলেন না, তারা বললেন যে বললেই কম বলা হবে আর কম বললেই পাপ হবে। নারায়ণ বললেন আমি উত্তর দেবো তার আগে আপনি যমালয়
থেকে ঘুরে আসুন । নারদ মুনি তখন গেলেন যমালয়ে,
যমরাজ অবাক হয়ে বললেন নারদ মুনিকে দেখে  হে দেবর্ষি আপনি যমালয়ে আমার তো বিশ্বাস ই হচ্ছে না আজ আমি ধন্য এই বলে নারদ মুনিকে প্রণাম করলেন  পা ছুঁয়ে আওয়া, তখন নারদ মুনি  বললেন আমি নারায়ণের আদেশে যমালয়ে এসেছেন এবং তিনি যমালয় ঘুরে দেখতে চান । যমরাজ বললেন আমি আপনাকে যমালয় ঘুরিয়ে দেখাব কিন্তু আপনাকে কথা দিতে হবে 
যে যমালয়ের কোথাও আপনি হরি নাম করতে পারবেন না । নারদ বললেন ঠিক আছে । তারপর নারদ মুনি এবং যমরাজ প্রথমে গেলেন পূর্ব দারে তারপর পশ্চিম দারে তারপর উত্তর দারে। সবশেষে গেলেন দক্ষিণ দারে সেখানে পাপীদের সাজা দেয়া হচ্ছিল । কাউকে ফুটন্ত তেলের মধ্যে ফেলা হচ্ছিল কাউকে কাটার মধ্যে ফেলা হচ্ছিল আবার কারো মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হচ্ছিল । চারিদিকে শুধু আর্তনাদ এসব দেখে নারদ বলে উঠলেন হরি হরি , যেই নারদ হরি হরি বলেছেন ওমনি পাপীরা সব দলে দলে বৈকুন্ঠের দিকে চলে গেল । যমরাজ বললেন একি করছেন দেবর্ষি থামুন থামুন আর হরি নাম করবেন না । ওই নাম করলে পাপীরা সব বৈকুন্ঠে চলে যাবে । নারদ বললেন যমরাজ আমি আমার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি আমি চললাম । যমরাজকে এই বলে নারদ চলে গেলেন স্বয়ন নারায়ণের কাছে গিয়ে বললেন হে প্রভু আমি আপনাকে যে প্রশ্ন করেছিলাম তার উত্তর পেয়ে গেছি ।
তাহলে একবার ভাবুন যদি একবার হরি নাম শুনেই ঘোর পাপী বৈকুন্ঠে যেতে পারে তবে হরি নাম করলে বা হরি নামের প্রেমে পড়লে তার ফলাফল কি হতে পারে।

হরি বোল হরি বোল হরি বোল .......
জয় শ্রী কৃষ্ণ ......


Next Post Previous Post
1 Comments
  • নামহীন
    নামহীন ১৩ জানুয়ারী, ২০২৩ এ ২:৪৮ PM

    দারুণ তথ্য

Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>