পুরীর জগন্নাথ মন্দির ভারতের চার ধাম তীর্থক্ষেত্র গুলির অন্যতম

জগন্নাথ মন্দির::জগন্নাথ মন্দির হল ভারতের পূর্ব উপকূলে ওড়িশা রাজ্যের পুরীতে শ্রী কৃষ্ণের একটি রূপ জগন্নাথকে উৎসর্গ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু মন্দির। বর্তমান মন্দিরটি ১০ম শতাব্দী থেকে পূর্ববর্তী মন্দিরের জায়গায় পুনর্নির্মিত হয়েছিল এবং পূর্ব গঙ্গা রাজবংশের প্রথম রাজা অনন্তবর্মণ চোদাগঙ্গা দেব দ্বারা এটির সূচনা হয়েছিল।পুরী মন্দিরটি তার বার্ষিক রথযাত্রা বা রথ উৎসবের জন্য বিখ্যাত, যেখানে তিনটি প্রধান দেবতাকে বিশাল এবং বিস্তৃতভাবে সজ্জিত মন্দিরের গাড়িতে টানা হয়। বেশিরভাগ হিন্দু মন্দিরে পাওয়া পাথর এবং ধাতব মূর্তিগুলির বিপরীতে, জগন্নাথের মূর্তি (যা ইংরেজি শব্দ 'জগারনট'-এর নাম দিয়েছে) কাঠের তৈরি এবং প্রতি বারো বা ১৯ বছরে একটি সঠিক প্রতিরূপ দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিস্থাপিত হয়। এটি চরধাম তীর্থস্থানগুলির মধ্যে একটি। মন্দিরটি সমস্ত হিন্দুদের কাছে এবং বিশেষ করে বৈষ্ণব ঐতিহ্যের জন্য পবিত্র। অনেক মহান বৈষ্ণব সাধক, যেমন রামানুজাচার্য, মাধবাচার্য, নিম্বারকাচার্য, বল্লভাচার্য এবং রামানন্দ মন্দিরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।রামানুজ মন্দিরের কাছে ইমার মঠ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আদি শঙ্করাচার্য গোবর্ধন মঠ প্রতিষ্ঠা করেন, যা চার শঙ্করাচার্যের একটির আসন। এটি গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের অনুসারীদের জন্যও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, যার প্রতিষ্ঠাতা চৈতন্য মহাপ্রভু দেবতা জগন্নাথের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং বহু বছর ধরে পুরীতে বসবাস করেছিলেন।

শ্রীক্ষেত্রের ছবি


শ্রীক্ষেত্র তথা জগন্নাথপুরীর মহিমাঃ

১.)পৃথিবীর অদ্ভুত ও বড় রান্নাঘর হলো জগন্নাথ পুরী মন্দিরের রান্নাঘর।
৩..) এ রান্নাঘরে এত দ্রুত রান্না করা হয় যে শুধুমাত্র একদিনের প্রস্তুতিতে একসাথে প্রায় দশ হাজার লোক বসে প্রসাদ পায়। আর এমনিতে পাঁচ হাজারের উপর দর্শনার্থী প্রসাদ পেয়ে থাকে।
৪..)এই রান্নাঘরটি ৯টি ভাগে বিভক্ত। যাদের দুটি ভাগ ২৫০০ বর্গফুট করে এবং বাকি ৭টি ভাগ এ দুটির চেয়ে একটু ছোট হবে। এ রান্নাঘরে রয়েছে ৭৫২টি মাটির তৈরি চুলা যার প্রত্যেকটি দৈর্ঘ্যে  প্রায় ৩(তিন) বর্গফুট এবং উচ্চতায় প্রায় ৪(চার) ফুটেরও কিছুটা বেশি।
৫.).চুলাগুলোতে একটির উপর একটি পাত্র বসানো হয় এভাবে প্রায় নয়টি পাত্র থাকে। শুধুমাত্র এ পাত্রগুলোর নিচে অবস্থিত আগুনের মাধ্যমেই উপরের পাত্র থেকে শুরু করে শেষে নিচের পাত্রটির রান্না অদ্ভুদ ভাবে তৈরি  হয়।এই রান্নাঘরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এক হাজার সেবক নিয়োজিত রয়েছে তার মধ্যে পাঁচশত সেবক রয়েছে কেবলমাত্র চুলাতে রান্না করার জন্য সহায়ককারী হিসেবে।
৬...)এখানে রান্না করা হয় না কোন পুরাতন পাত্রে,নিত্যদিন নতুন নতুন পাত্রে রান্না করা হয়,আর এজন্য প্রতিদিন একদল মানুষ কেবলমাত্র মাটি দিয়ে পাত্র বানায়,অন্যদিকে আরেক দল তা সরবরাহ করে রান্নাঘরে নিয়ে যায়।চুলার রান্নার জন্য একদল পাত্রগুলো ধৌত করে অপরদল পাত্রে জলভর্তি করে চুলাতে নিয়ে যায় রান্নার কাজে এগিয়ে নেওয়ার জন্য|
৭..)এখানে গঙ্গা আর সরস্বতী নদী থেকে রান্না করার জন্য  (এটা একটা রূপক, পাথর বাঁধানো জলের দুটি নালী,যা সারা দিন নদীর ন্যায় ক্রমাগত জল পরিবহন করে) রান্নাঘরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে যা বাহির থেকে  দেখাই যায় না যা সত্যিই অদ্ভুত বটে !!!!
৮..)সব্জি কাটছে আর কেউ কেউ সব্জি ধৌত করছে আবার কেউ কেউ মসলা তৈরি করছে।এখানে এক লোকের একেক ধরনের কাজ বন্টন করা হয়েছে।
৯.).বংশানুক্রমে রান্নাঘরে সেবকরা নির্ধারিত হয় ও যে সকল সেবকরা কাজ করে থাকে তাদের বয়স যখন ১২ বছর হয় তখন থেকে তারা ট্রেনিং এ নেমে পড়ে এভাবে তারা বংশানুক্রমে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট সেবা সারাজীবন ধরে অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত করে থাকে।
১০..)এই রান্নাঘরে ১০০টির উপর আইটেম রান্না করা হয় যা দুটি ভাগে বিভক্ত। এ দুটি ভাগকে পাক্কা এবং সুক্কা নামে ডাকা হয়।পাক্কা বলা হয় সেই খাবারগুলো যেগুলো সিদ্ধ করা যথা- ডাল, চাল, খিচুরী এবং সমস্ত রকমের সবজি। অপরদিকে  বিস্কিট, মিষ্টান্ন আর বিভিন্ন ধরনের পিঠাকে সুক্কা বলা হয় ।
১১.) যেসমস্ত ফল ও সবজি ব্যবহার করা হয় জগন্নাথের জন্য  সেগুলো দু হাজার বছরের অধিক সময় ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ।কেবলমাত্র স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজি ও ফলই জগন্নাথের জন্য ব্যবহৃত হয়।জগন্নাথের জন্য ব্যবহার করা হয় না অন্য কোন অঞ্চল থেকে উৎপাদিত দ্রব্য।
১২..লক্ষ্মী দেবী আর জগন্নাথ দেবের কৃপায় ধন্য এই রান্না ঘর বিখ্যাত।তাইতো পুরীর এ রান্নাঘরকে অদ্ভুত রান্নাঘর বলেই অভিহিত করা হয়।

২.) এই রান্নাঘরে বিবিধ দ্রব্য রান্না করার জন্য কোন বিদ্যুৎ বা যন্ত্র ব্যবহার করা হয় না । উন্মুক্ত কাঠের আগুনের উপর অনেকগুলো তেলের ল্যাম্প বা বাতি ঝুলিয়ে রাখা হয় আর সেবকরা এসেই তার নিচেই রান্না কার্য সম্পন্ন করে।

১৩..এই মন্দিরের কোনো ছায়া পরে না।
১৪..মন্দিরের চূড়ার পতাকা বায়ুর উল্টো দিকে ওড়ে।
১৫.). মন্দিরের উপর আজ পযন্ত কোনো পাখি বসতে দেখা যায়নি।
১৬..)কোনো উরন্ত বিমান ও পাখি উড়ে যেতে পারে না মন্দিরের ওপর দিয়ে।
১৭..) মন্দিরের সিংহ দ্বারের ঠিক বাইরে সমূদ্রের ঢেউয়ের শব্দ শোনা যায়। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই তা আর শোনা যায় না।
১৮..) মহাপ্রসাদ রান্না হয় পরপর নয়টি মাটির পাত্রে একসাথে(একটির উপরে আরেকটি বসানো হয়) কিন্তু রান্না হয় উপরের হাঁড়িতে সবার প্রথমে।
১৯..)প্রসাদের কম বেশি হয় না যদিও ভক্ত সংখ্যা কম বেশি হয়। অভুক্ত থাকেন না কেউই।
জয় জগন্নাথ স্বামী।

এই ওয়েবসাইটটিতে আরো জানতে পারবেন

পুরীর জগন্নাথ মন্দির,
জগন্নাথ মন্দির,
পুরীর মন্দিরের ভিডিও,
জগন্নাথ মন্দিরের অলৌকিক রহস্য,
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্য,
পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির,
জগন্নাথ দেবের কাহিনী,
পুরীর মন্দির,জগন্নাথ,
পুরী মন্দির,
পুরী জগন্নাথ মন্দির,
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে,
পুরীর জগন্নাথ,
পুরীর মন্দিরের রহস্য,
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অলৌকিক রহস্য,
পুরীর রথযাত্রা,জগন্নাথ পুরী,
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের বিষ্ময়কর অলৌকিক রহস্য,
জগন্নাথ মন্দির পুরী ধাম,
পুরীর রহস্য,পুরী মন্দিরের অজানা রহস্য


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>