যত মত তত পথ এই কথাটির প্রকৃত অর্থ কি?

বিভিন্ন মত অনুসারে বিভিন্ন পথ রয়েছে। যেমন শ্রীমদ্ভগবদগীতায় (৯/২৫) শ্রীকৃষ্ণ বলছেন- দেবদেবীদের উপাসনা করে স্বর্গে যাওয়া যায়, ভূত প্রেতলোকে যেতে হলে ভত-প্রেতের উপসনা করতে হবে, চির-আনন্দময় ভগবদ্ধামে যেতে হলে ভগবানেরই উপাসনা করতে হবে। ঠিক তেমনি, এই জন্মের চিন্তাভাবনা পরবর্তী জীবনে বর্তায়। এই জীবনে যদি মাছ-মাংস খাওয়ার প্রতি লোভ থাকে, তবে পরবর্তী জন্মে বক, শেয়াল কিংবা কোন মাংসভূক কোন যোনিতে জন্ম নিতে হবে। এটিই হল মহান প্রকৃতির বিধান।যে অবলম্বন করে চলে বেদ-বিরুদ্ধ আচরণ , নরকের পথও রয়েছে তার জন্য  বাধ্যবাধকতামুলক। 

তাই কখনই কারো মনে করা উচিত হবে না যে,যে কোনও মত বা পথ অবলম্বন করে ভগবানের কাছে যাওয়া যাবে। আর অপরদিকে যে কোনও পথে ভগবদ্ধামে যাওয়া যায় এ কথা উন্মাদের প্রলাপ মাত্র। আবার দেখা যায় শ্রীমদ্ভগবতে (১২/৩/৫২) নির্দেশ করে দেওয়া হযেছে,বিভিন্ন যুগে ভগবানকে লাভ করবার পন্থা ভিন্ন ভিন্ন রকমের বা কয়েক রখমের হয়।মনে রাখতে হবে সেটাও কিন্তু যুগ অনুযায়ী।

যেমন সত্যযুগে ধ্যান, ত্রেতাযুগে যজ্ঞ. দ্বাপরে অর্চনা এবং কলি যুগে হরিনাম সংকীর্তন। কলিযুগে অল্প আয়ু, ক্ষীণ বুদ্ধি,নানা ব্যাধি নিয়ে মানুষ রযেছে। তাই কলির মানুষের একমাত্র পন্থা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দিব্য নাম- সংকীর্তন করা। বৃহন্নারদীয় পুরাণে উল্লেখ আছে- হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম্। কলৌ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা।।। অর্থাৎ, “এই কলিযুগে ভগবানের নিব্য নামই একমাত্র পথ। এ ছাড়া আর কোন গতি নেই, আর কোন গতি নেই,আর কোন গতি নেই।” 
যত মত তত পথ ছবি

কলিসন্তরণ- উপনিষদে বলা হয়েছে- 
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ.কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে। 
হরে. রাম হরে- রাম -রাম -রাম হরে হরে।। 
ইতি ষোড়শকংনাম্নাং কলিকল্মষনাশনম্।
 নাতঃ পরতরোপায়ঃ সর্ববেদেষু দৃশ্যতে ।।

 অর্থাৎ ‘হরে কৃষ্ণ’ মহামন্ত্র কলিকলুষনাশকারী, এর চেয়ে অনো শ্রেষ্ঠ উপায় সমগ্র বেদের মধ্যেও দেখা যায় না বৃহ্মা আদি শ্রীগুরুপরম্পারা সূত্রে এই হরিনাম গৃহীত । বৈদিক শাস্ত্রে বলা হয়েছে- উৎসৃজ্যৈতন্মমন্ত্রং যে তন্যৎ কল্পিতং পদম্। মহানামেতি গায়ন্তি তে শাস্ত্রগুরুলঙিঘনঃ।। তত্ত-বিরোধ-সম্পৃক্তং তাদৃশং দৌর্জন্ং মতম্। অর্থাৎ “ এই মহামন্ত্র বাদ দিযে যারা অন্যান্য কল্পিত পদকে মহানাম প্রভৃতি বলে ব্যাখ্যা করে, শাস্ত্র ও গুরু লঙ্ঘনকারী তারা।এতএব আত্ন-হিতার্থী ব্যক্তি সর্বদা সর্বতোভাবে তত্ত্ববিরোধী মত-পথগুলিকে দুর্জনের সঙ্গ জ্ঞানে পরিত্যাগ করবেন।

যত মত তত পথ এর ব্যাখ্যাঃ
"যত মত তত পথ" কথাটা খুব ছোট্ট কিন্তু এই কথাটাই  সনাতন ধর্ম  তথা হিন্দু জাতি ধ্বংসের কারণ।  আশা করি  সকল বন্ধুগণ বিষয়টি বুঝে সঠিক মন্তব্য করবেন।  আমি বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দকে  অনুরোধ করছি "যত মত তত পথ" কথাটি আপনাদের পোস্টার থেকে বাদ দেওয়া যায় কি না।আপনারা হিন্দুদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করেন,হিন্দু নির্যাতনের বিরুদ্ধে  রুখে দাঁড়ান,হিন্দু জাতি কে ঐক্যবদ্ধ  করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন।কিন্তু "যত মত তত পথ" কথাটা হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে দেয় না।এই কথাটা হাজারো মত পথ সৃষ্টি করে হিন্দু জাতিকে খন্ড বিখন্ড করে দিয়েছে।সমাজে অনেক মত পথ সৃষ্টি হয়ে বিভন্ন রকম গোষ্ঠীতে ভাগ হয়েছে গোষ্ঠী ভাগের কারনে একে অন্যের বিপদে এগিয়ে আসে না।"যত মত তত পথ"কথাটার কারণে অনেক হিন্দু মনে করে যে ধর্ম বলতে কিছু নাই, কারণ সে ভাবে তার মত পথ সঠিক।জঙ্গিরা ধর্মের নামে সারাবিশ্বে মানুষ মারে তাদের কাছে তাদের মত পথ সঠিক।এই কথাটার কারণে অনেকে নিজের ইচ্ছে মত মানুষকে ভগবান বানিয়ে পূজা করে।সমাজে আবার অনেকেই নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী মনগড়া মত পথ তৈরি করে প্রচার করে।  কথাটার কারণে অনেকেই তো নিজের ধর্মকে ত্যাগ করেছে।  তাই আমি মনে করি হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হলে,হিন্দুদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে,হিন্দু সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি করে সেই কথাগুলো বর্জন করি।    হিন্দু স্বার্থে কপি এবং শেয়ার করার অনুরোধ রইল।

শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ ঠাকুরের "যত মত তত পথ" কথাটির গুরুত্ব কতখানি বলে আপনি মনে করেন?
কারণ যখন "বসিয়া একেলা বিরহের বেলা আকাশকুসুম চয়নে" তখন "সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমার দুখানি নয়নে"  পরমাত্মার সাথে মিলনের পথ বা পরম সত্যের পথ একটিই কেন হতে হবে? সবাই নিজের মত করে পথ খুঁজে নিক। এটাই প্রাচ্য দর্শনের সৌন্দর্য। প্রাচ্য ধার্মিক দর্শনগুলিতে (হিন্দু, বৌদ্ধ ইত্যাদি) কোনো প্রকাশিত (revealed) পথ নেই। কোনো অবশ্যপালনীয় 'ঈশ্বর নির্দেশিত' নিয়ম নেই। ঈশ্বরের (সংজ্ঞা যা-ই হোক না কেন) কোন প্রয়োজন পড়েছে কোটি কোটি তারাজগতের মধ্যে এক সাধারণ তারাজগতের কোটি কোটি তারার মধ্যে এক সাধারণ তারার চারদিকে ঘূর্ণায়মান ৮ টি গ্রহের মধ্যে এক পুঁচকে গ্রহের কোটি কোটি প্রাণীর মধ্যে একটিমাত্র প্রাণী মানুষ (যে কিনা বিবর্তনের ধারায় এসেছে) তার হাতে কিছু নিয়ম তুলে দেওয়ার যাতে সে ঈশ্বরের কাছে যেতে পারে? ঈশ্বর মানুষের মত এক নির্বোধ জীবের আনুগত্য জাতীয় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না। তাঁকে সমস্ত সৃষ্টি নিয়ে ভাবতে হয়!  এই কারণে মানুষকে যদি পরমাত্মার সাথে মিলিত হতে হয় তাহলে মানুষকেই তার পথ খুঁজে নিতে হয়। যুগে যুগে মহাপুরুষরা এই কাজটিই করেছেন। কেউ ধ্যানের মাধ্যমে (বুদ্ধদেব), কেউ গানের মাধ্যমে (রবীন্দ্রনাথ), কেউ বিজ্ঞানের মাধ্যমে (আইনস্টাইন) প্রমুখ। বৈদিক ঋষিগণও তারই চেষ্টা করেছেন। ফলস্বরূপ আমাদের কাছে 'গীতা'-র মত গাইডবুক আছে। এইভাবে যুগে যুগে ভারতীয় উপমহাদেশে "নানা মুনির নানা মত"-এর ফলে বিশাল বৈচিত্র্যপূর্ণ ও গভীর অর্থপূর্ণ যে ধর্ম-দর্শনসমূহ গড়ে উঠেছে (একেই সম্মিলিতভাবে ভারতীয় হিন্দুদর্শন বলা হয়) তার যেকোনো একটি/একাধিক অনুসরণ করা যায় নিজের পছন্দমত। প্রতিটিই সঠিক পথ। এর কথাই ঠাকুর রামকৃষ্ণ ওই বাণীতে বলতে চেয়েছেন।  এর যেকোনো পথে পরমাত্মার সাথে মিলন বা যোগ (join) স্থাপন হয় (এবং শেষপর্যন্ত মোক্ষ/মুক্তি/বোধি/জ্ঞান লাভ হয়)। একেই 'যোগ' (Yoga) বলে। Yoga মানে শুধু 'আসন' (Asana) নয় যেমনটা আজকাল বহুজন মনে করেন (বিশেষ করে পাশ্চাত্যে)। আসন (যোগাসন) হল যোগের একটি অংশ 'হঠযোগ' এর একটি উপাংশ (যোগের আরেকটি অংশ হল 'রাজযোগ' যার মধ্যে থাকে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলি)। যোগের মধ্যে নানা পথ আছে যেমন- কর্মযোগ (গীতায় যার কথা বলা আছে), ভক্তিযোগ (শ্রীচৈতন্য যার কথা বলেছেন), হঠযোগ ইত্যাদি।  সহজকথায়, সনাতন ধর্মের পথ open source software এর মত। নিজের সুবিধেমত একে আপগ্রেড করা যায়। যত প্রোগ্রামার ততরকম কোডিং। যত মত তত পথ! প্রোগ্রাম error-less ভাবে run করলেই হল!কারণ যখন "বসিয়া একেলা বিরহের বেলা আকাশকুসুম চয়নে" তখন "সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমার দুখানি নয়নে"  পরমাত্মার সাথে মিলনের পথ বা পরম সত্যের পথ একটিই কেন হতে হবে? সবাই নিজের মত করে পথ খুঁজে নিক। এটাই প্রাচ্য দর্শনের সৌন্দর্য। প্রাচ্য ধার্মিক দর্শনগুলিতে (হিন্দু, বৌদ্ধ ইত্যাদি) কোনো প্রকাশিত (revealed) পথ নেই। কোনো অবশ্যপালনীয় 'ঈশ্বর নির্দেশিত' নিয়ম নেই। ঈশ্বরের (সংজ্ঞা যা-ই হোক না কেন) কোন প্রয়োজন পড়েছে কোটি কোটি তারাজগতের মধ্যে এক সাধারণ তারাজগতের কোটি কোটি তারার মধ্যে এক সাধারণ তারার চারদিকে ঘূর্ণায়মান ৮ টি গ্রহের মধ্যে এক পুঁচকে গ্রহের কোটি কোটি প্রাণীর মধ্যে একটিমাত্র প্রাণী মানুষ (যে কিনা বিবর্তনের ধারায় এসেছে) তার হাতে কিছু নিয়ম তুলে দেওয়ার যাতে সে ঈশ্বরের কাছে যেতে পারে? ঈশ্বর মানুষের মত এক নির্বোধ জীবের আনুগত্য জাতীয় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না। তাঁকে সমস্ত সৃষ্টি নিয়ে ভাবতে হয়!এই কারণে মানুষকে মানুষকেই তার পথ খুঁজে নিতে হয় যদি পরমাত্মার সাথে মিলিত হতে হয় তাহলে।এই কাজটিই করেছেন যুগে যুগে মহাপুরুষরা ধ্যানের মাধ্যমে কেউ (বুদ্ধদেব), গানের মাধ্যমে কেউ (রবীন্দ্রনাথ),বিজ্ঞানের মাধ্যমে কেউ (আইনস্টাইন) প্রমুখ। বৈদিক ঋষিগণও তারই চেষ্টা করেছেন। ফলস্বরূপ আমাদের কাছে 'গীতা'-র মত গাইডবুক আছে। এইভাবে যুগে যুগে ভারতীয় উপমহাদেশে "নানা মুনির নানা মত"-এর ফলে বিশাল বৈচিত্র্যপূর্ণ ও গভীর অর্থপূর্ণ যে ধর্ম-দর্শনসমূহ গড়ে উঠেছে (একেই সম্মিলিতভাবে ভারতীয় হিন্দুদর্শন বলা হয়) 
তার যেকোনো একটি/একাধিক অনুসরণ করা যায় নিজের পছন্দমত। প্রতিটিই সঠিক পথ। এর কথাই ঠাকুর রামকৃষ্ণ ওই বাণীতে বলতে চেয়েছেন।  এর যেকোনো পথে পরমাত্মার সাথে মিলন বা যোগ (join) স্থাপন হয় (এবং শেষপর্যন্ত মোক্ষ/মুক্তি/বোধি/জ্ঞান লাভ হয়)। একেই 'যোগ' (Yoga) বলে। Yoga মানে শুধু 'আসন' (Asana) নয় যেমনটা আজকাল বহুজন মনে করেন (বিশেষ করে পাশ্চাত্যে)। আসন (যোগাসন) হল যোগের একটি অংশ 'হঠযোগ' এর একটি উপাংশ (যোগের আরেকটি অংশ হল 'রাজযোগ' যার মধ্যে থাকে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলি)। যোগের মধ্যে নানা পথ আছে যেমন- কর্মযোগ (গীতায় যার কথা বলা আছে), ভক্তিযোগ (শ্রীচৈতন্য যার কথা বলেছেন), হঠযোগ ইত্যাদি।  সহজকথায়, সনাতন ধর্মের পথ open source software এর মত। নিজের সুবিধেমত একে আপগ্রেড করা যায়। যত প্রোগ্রামার ততরকম কোডিং। যত মত তত পথ! প্রোগ্রাম error-less ভাবে run করলেই হল!

#tag;যত মত তত পথ,
মত মত তত পথ swami ishatmananda,

শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ ঠাকুরের যত মত তত পথ,

joto mot toto poth Bangla,

যত মত তত পথ কথাটির অর্থ কি,

যত মত তত পথ উক্তিটি কার,

পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ, 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>