শিবপূজা বিধি।shibpuja

মৃক্তিকা নির্মিত শিবপূজা বিধি:-

(দুইটি শিবলিঙ্গ একত্র রাখিয়া পূজা করিবেন না। একটির পূজা হইলে পরে আর একটি নির্মাণ করিয়া পুজা করিবেন)। অঙ্গুষ্ঠ পরিমিত সবস্ত্র  শিবলিঙ্গ নির্মাণ করিয়া উত্তরদিকে পিনাক স্থাপন ও বিশ্ব পরদ্বারা তদগাত্রমার্জ্জনপূর্ব্বক ঐ পত্রের মধ্যদলের সোজা পৃষ্ঠের উপর বসাইবেন (তাম্র, কাংস্য, স্বর্ণ বা রৌপ্য পাত্রে শিবপূজা প্রশস্ত) ও স্বয়ং উত্তরাস্য হইয়া বসিবেন। তস্ম বা মৃত্তিকা দ্বারা কপালে ত্রিপুণ্ডক (অর্ধ চন্দ্রাকৃতি) এবং রুদ্রাক্ষের মালা ধারণ করিয়া শিবপুজা করিবেন। ওঁ হুরায় নমঃ বলিয়া শিবের মন্ত্রকে কিঞ্চিৎ জল দিয়া বর্জ্র নামাইয়া পিনাকের উপর রাখিবেন। ওঁ মহেশ্বরায় নমঃ বলিয়া শিবের মন্ত্রকটি একটু টিপিয়া গঠন করিবেন। ওঁ শূলপাশে ইহ সুপ্রতিষ্ঠিতো ভব বলিয়া লিঙ্গের উপর আতপ চাউল দিয়া প্রতিষ্ঠা করিবেন।

শিবপূজা বিধি।shibpuja
শিবপূজা বিধি।shibpuja

শিবের ধ্যান—
ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভাং চারুচন্দ্রাবতাংসং, রত্নাকল্লোজ্জলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নং, পদ্মাসীনং সমস্তাৎ স্থতমমর গণৈর্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং, বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্ ।। এইরুপ ধ্যান করিয়া আবাহনাদি পঞ্চমুদ্রার দ্বারা আবাহন করিবেন।  পঞ্চমুদ্রা 
যথা—

১। চিৎভাবে অঞ্জলি করিয়া উভয় অঙ্গুষ্ঠ উভয় অনামিকার মূলে যোগ করিবেন। 
২। ঐরূপ অঞ্জলিকে অধোমুখে করিবেন। 

৩। অনুষ্ঠদ্বয় উচ্চ করিয়া উভয় মুষ্ঠি মুখোমুখি করিয়া যোগ করিবেন।
৪। ঐরূপ দৃষ্টিদ্বয়ের মধ্যে অনুষ্ঠদ্বয়কে প্রবেশ করাইবেন, ঐরূপ মুষ্টিদ্বয়কে চিৎ করিয়া ধরিবেন।

মন্ত্র যথা-

ওঁ পিণাকধৃক ইহাগচ্ছ, ইহাগচ্ছ, ইহতিষ্ঠ,ইহতিষ্ঠ, ইহু সন্নিধেহি, ইহ সন্নিরূদ্ধাস্ব অত্রাধিষ্ঠানং কুরু (করযোড়ে) স্থাং স্থীং স্থিরো ভব মম পূজাং গৃহাণ। 

শিবের স্নান মন্ত্র -"

ইদং স্নানীয়োদকং ওঁ পণ্ডপতয়ে নমঃ, এই মন্ত্রে কেবল জলদ্বারা শিবকে তিনবার স্নান করাইবেন। পরে পাদ্যাদি দ্বারা পূজা করিবেন।  এতৎ পাদ্যং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  ইদমর্ঘ্যং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  ইদমাচনীয়ং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  ইদং স্নানীয়জলং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  এব গন্ধঃ ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  এতৎ পুষ্পং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  এতৎ সচন্দনবিল্লপত্রং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  এতৎ ধুপঃ ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ। এতৎ দীপঃ ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  এতৎ সোপকরণনৈবেদ্যং ওঁ নমঃ শিবা নমঃ। ইদমাচনীয়ং ওঁ নমঃ শিবায় নমঃ।  পরে গৌরীপিঠে (পিনাকের মূলে) “ওঁ গৌর্য্যে নমঃ" এই মন্ত্রে পঞ্চোপচারে গৌরীর পূজা করিবেন। অনন্তর অষ্টমূর্তির পূজা করিবেন। 

“ওঁ সৰ্ব্বায় ক্ষিতিমূর্ত্তয়ে নমঃ(পুর্ব্বে) ওঁ ভবায় জলমূর্ত্তয়ে নমঃ (ঈশানকোণে) ওঁ রুদ্রায় অগ্নিমূর্তয়ে (শক্তি লংঘন না করিয়া) নমঃ (নৈর্ম্মতে), ওঁ মহাদেবায় সোমমূর্ত্তয়ে নমঃ (দক্ষিণে), ওঁ ঈশানায় সূর্য্যমূর্ত্তয়ে নমঃ (অগ্নিকোণে)। 

সর্ব্বত্র 'এতে গন্ধপুষ্পে' উল্লেখ করিবেন।পুষ্পাভাবে এতে গন্ধাক্ষতে যা এতদুদকং। পুজা মাত্রেই এই নিয়ম জানিবেন। তৎপরে "ব্রহ্মাদ্যমাতৃকাভ্যো নমঃ বৃষভায়ঃ নমঃ" এবং "ইন্দ্রাদি দশদিকপালেভ্যো নমঃ"---মন্ত্রে পুজা করিয়া, নমঃ শিবায়ঃ" (দ্বিজজাতিরা ওঁ নমঃ শিবায়) এই মন্ত্র ১০ বা ১০৮ বার জপ করিয়া- ওঁ গুহ্যাতিগুহ্যগোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মৎকৃতং জপং। সিদ্ধির্ভবতু মে দেব তৎপ্ৰসাদাম্মহেশ্বরঃ।। এই মন্ত্রে জলগন্ডুব শিবের দক্ষিণ হস্তের উদ্দেশ্যে দিয়া জল সমর্পণ করিবেন।

শিব প্রণামঃ 

নমস্তভ্যং বিরূপাক্ষ নমস্তে দিবাচক্ষুষে। 

নমঃ পিণাকহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নমঃ।।  

নমস্ত্রিশুলহস্থায় দণ্ডপাশাংসিপাণয়ে।  

নমস্ত্রৈলোকানাথয় ভৃতানাং পতয়ে নমঃ।  

শিবায় শাম্ভায়কারণত্রয়হেতবে।  

নিবেদয়ামি চয়ানং ত্বং গতি পরমেশ্বর।।  

মস্তে ত্বং মহাদেব লোকানাৎ গুরুমীশ্বরম্।

 পুংসামপূর্ণকামানাং কামপুরামরাঙ্ ঘ্রিপম্।  

তৎপরে দক্ষিণহস্তের অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জনী দ্বারা দক্ষিণ গন্ডে আঘাত করিয়া বম্ বম্ শব্দে মূখবাদা করিবেন। 

ক্ষমা প্রার্থনাঃ -

আবাহনং ন জানামি নৈব জানাবি পূজনং। 

বিসৰ্জ্জনং ন জনামি ক্ষমস্ব পরমেশ্বরঃ।। 

সংহারমূদ্রার দ্বারা একটি নির্ষ্মাল্য লইয়া ঘ্রাণান্তে "মহাদেব ক্ষমত্ব” বলিয়া বিসৰ্জ্জনপূর্ব্বক শিবের মাথায় একটু জল দিয়া শিবকে কাৎ করিয়া রাখিবেন। ঈশানকাণে ত্রিকোণ মণ্ডল করিয়া সংহারমূদ্রা দ্বারা পূজাধার হইতে একটি নির্ম্মালা লইয়া ঘ্রাণান্তে তেজোময় দেবতাকে  শ্বাসপথ দ্বারা হৃৎপদ্মে পুনঃ স্থাপন করিলাম, এইরূপ চিন্তা করতঃ পূর্ব্বকৃত মণ্ডলে রাখিয়া চণ্ডেশ্বরায় নমঃ বলিয়া নিৰ্ম্মালা দ্বারা পূজা করিবেন। অনেকে নিত্য শিবপুজা করিয়া সন্তানাদির মঙ্গলার্থ পুনর্ব্বার শিবপুজা করিয়া থাকেন। পূজান্তে দেবতাকে নির্ষ্মাল্যে রাখিতে নাই। কি দিবা কি রাত্রি সকল সময়েই উত্তরমুখে শিবপুজা কর্তব্য।

পার্থিব-শিবপূজার পদ্ধতি অনুসারে বাণলিঙ্গেরও পূজা হইবে। কেবল "নমঃ শিবায় নমঃ" স্থলে " হ্রৌং বাণেশ্বরায় নমঃ বলিবেন। কিন্তু ধ্যানের ও প্রণামের মত পৃথক বাণলিঙ্গের এবং প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গের প্রতিষ্ঠা ও আবাহন নাই, কেবল ধ্যান,স্নান ও পূজা আছে। কেহ কেহ বেদবিহীন শিবলিঙ্গস্থলে অষ্টমূর্ত্তির পূজা করেন না।  

বাণলিঙ্গের স্নান মন্ত্রঃ –

ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্দ্ধনং। 

ঊর্ধ্বারুকমিব বন্ধনাস্মৃত্যোমূক্ষীয় মামৃতাং।। 

পরে  কু্র্ষ্মমুদ্রা দ্বারা পুষ্প লইয়া ধ্যান করিবেন।  

ধ্যান ---

ওঁ ঐং প্রমত্তং শক্তিসংযুক্তা বাণাধ্যঞ্চ মহাপ্রভাং।

 কামরাগান্বিতং দেবং সংসারদহনক্ষমং। 

শৃঙ্গারাদিরসোল্লাসং বাণাখ্যং পরমেশ্বরং।। 

প্রণাম মন্ত্র -- 

ওঁ বাণেশ্বরায় নরকার্ণবতারণায় জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায়। 

কর্পূরকুন্দধবলেন্দু জটাধরায় দারিদ্র্যদুঃখদহনায় নমঃ শিবায়।।

নিত্য কর্ম পূজা পদ্ধতি জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন 

নিত্যকর্ম পূজা পদ্ধতি ⬇️

#tag;শিবপূজা করার আগে,শিবপূজার সহজ নিয়ম,শিবপুজা,shibpuja,শিবরাত্রি পূজাবিধি,শিব পূজা,#shibpujo,শিব পূজো,শিব পূজার নিয়মাবলী,শিব পূজা পদ্ধতি,শিব পূজার নিয়ম,shiv puja,#shivpuja,শিব পূজা কিভাবে করতে হয়,shivling puja,বাড়িতে শিব পূজা পদ্ধতি,shiv puja vidhi,shivratri puja,shiv puja vidhi bengali,shiv puja bangla,শিবলিঙ্গের পূজা,shiv puja at home


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>