বিবাহ না করলে ধর্ম হয় না

ধর্মের সাথে বিবাহের সম্পর্ক কি?

বিবাহ করেও মানুষের ধর্ম হয় না। ধর্ম হল ভগবানের দেওয়া নিয়মকানুন। 

ধর্মং তু সাক্ষাদ্ ভগবৎ প্রণীতম্। 

অধিকাংশ মানুষ সেই নিয়ম ভঙ্গ করছে। ধর্ম পালন করছে না। বিবাহ সংস্কার বিধি সম্পর্কে অধিকাংশ ব্যক্তিই অজ্ঞ। ইন্দ্রিয়পর ও উচ্ছৃঙ্খল স্বাভাবের জন্য পরিবার, সমাজ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হচ্ছে, তার ভুরি ভুরি নজির হামেশাই পাওয়া যাচ্ছে।

ধর্মের সাথে বিবাহের সম্পর্ক
ধর্মের সাথে বিবাহের সম্পর্ক
আত্মহত্যা, ভ্রূণহত্যা, নাবালক শিশুহত্যা, ভ্রাতৃবিরোধ, সম্পত্তি দখল, কুটুম্ব বিরোধ,বিবাহ বিচ্ছেদ, বধূ নির্যাতন, বধূহত্যা, পতিহত্যা ইত্যাদি অঘটন প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও যেভাবে ঘটে চলেছে, তা থেকে কারও বুঝতে আর বাকি নেই যে, বহু মানুষের বিবাহিত জীবনের আনন্দ নারকীয় বিষগ্ন জীবনে পরিণত হয়েছে। তাদের বিবাহ করার ফ্যাশনটাই শেষে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও তারা প্রথমে জেনেছিল সেটি তাদের কতই না সাধের ‘শুভ পরিণয়’।

বিবাহ কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল বিশেষরূপে বহন করা। অর্থাৎ, পারিবারিক দায়িত্ব এমনভাবে বহন করতে হয় যাতে বিবাহিত জীবন নারকীয় জীবনে পর্যবসিত না হয়।

আবার দেখা যায়, অনেক বিবাহ করছে না, অথচ বিবাহ বহির্ভূত ইচ্ছৃঙ্খল সঙ্গে লিপ্ত হচ্ছে। কেউ বা বিয়েপাগলা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই জন্য শ্রীল প্রভুপাদ নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিবাহিত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করতে। তবে বদ্চরিত্র ব্যক্তিরা বিবাহিত হয়েও উত্তরোত্তর উচ্ছৃঙ্খলতা বাড়িয়ে চলে।

যারা ভগবদ্ভক্তি অনুশীলন করে না, তাদের সব দিকই পরিণামে গণ্ডগোল। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, সমস্ত যজ্ঞ অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভগবান শ্রীহরির সন্তোষ বিধান করা। বিবাহ অনুষ্ঠানও একটি যজ্ঞ। বিবাহযজ্ঞ। বর-বধূ যদি ভক্ত না হয়, তবে তারা কখনই ভগবানের সন্তোষবিধান করতে পারবে না। অভক্তের বিবাহ অনুষ্ঠান কখনই শুভ নয়।

নির্দেশ করা হয়েছে যে শ্রীমদ্ভাগবতের অমল পুরাণে , ভক্তি পথের উপদেশ দ্বারা যে ব্যক্তি তার পত্নীকে মৃত্যুরূপ সংসার চক্র থেকে মোচন করতে পারবে না, সেই ব্যক্তির বিবাহ করা উচিত নয়, সে কারও পতি হওয়ার উপযুক্ত নয়। আবার বিবাহের পূর্ণতা লাভ হয় সন্তানের পিতা-মাতা হওয়ার মাধ্যমে। কিন্তু পিতা-মাতা যদি সন্তানকে জন্ম-মৃত্যুর ভবদশা থেকে উদ্ধার পাওয়ার পন্থা না শেখাতে পারে, তবে তারা পিতা-মাতা হওয়ার যোগ্য নয়। তাদের সন্তান উৎপাদনে যত্নশীল হওয়াই উচিত নয়।

এই ধরনের উপদেশ শ্রীঋষভদের তাঁর পুত্রদের প্রদান করেছিলেন। এই সমস্ত শিক্ষা মানুষ যদি না পায়, তবে তার জীবন কুকুর বিড়ালের সমতুল্য।

ধর্মেণ হীনা পশুভিঃ সমানা।

তাই মানুষকে ভক্তিময় জীবন গ্রহণ করতে হবে, ধর্মপরায়ণ হতে হবে, তারপর সে বিবাহ করুক আর নাই করুক, তাতে কিছু যায় আসে না।

গৃহে থাকো, বনে থাকো,

সদা 'হরি' বলে ডাকো।

হরিভজন ছাড়া সবই অধর্ম। হরিভজনের অনুকূল হলে সমস্ত অনুষ্ঠান ভাল, হরিভজনের প্রতিকূল বিষয় গ্রহণ করে যে সমস্ত অনুষ্ঠান তা পরিণামে মন্দ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
"/>
"/>
"/>
"/>